কাতালুনিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং আন্দোলনের কারণে রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার মধ্যকার এল ক্ল্যাসিকো পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল লা লিগা কর্তৃপক্ষ। গত ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল মৌসুমের প্রথম এল ক্ল্যাসিকো। শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদ- দুদলের সম্মতির ভিত্তিতেই আজ (১৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের মৌসুমের প্রথম এল ক্ল্যাসিকো। বার্সার মাঠ ন্যু ক্যাম্পে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হবে ম্যাচটি। সরাসরি সম্প্রচার করবে ফেসবুক। প্রায় দুই মাস পিছিয়ে এল ক্ল্যাসিকো মাঠে গড়াতে যাচ্ছে; কিন্তু তবুও শঙ্কার শেষ নেই। দুষ্কৃতিকারীরা যদি এই ম্যাচকেই নিজেদের কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের ব্যাপারে কোনো ঘটনা ঘটিয়ে বসে! সে কারণে স্পেন সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেই ন্যু ক্যাম্পে এল ক্ল্যাসিকো ঘিরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার চাউনি তৈরি করা হয়েছে। এল ক্ল্যাসিকো মানেই এক সময় ছিল মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথ। কিন্তু রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে দেয়ায় দুই বিশ্ব সেরা ফুটবলারের দ্বৈরথ আর নেই। কিন্তু দুই বিশ্বসেরা ক্লাবের ধুন্দুমার লড়াই কি আর কমে যায়! সে কারণেই তো ফুটবল বিশ্বে এল ক্ল্যাসিকো মানেই অন্য রকম উত্তেচনা, অন্যরকম আনন্দ। আজকের এল ক্ল্যাসিকোর আগে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে একটি গোষ্ঠী ম্যাচের দিন স্টেডিয়ামের বাইরে ও ভিতরে প্রতিবাদের প্রচ্ছন্ন হুমকি দেওয়ার কারণে। স্পেন সরকার এই গোষ্ঠীকে অপরাধীদের ডেরা হিসেবে মন্তব্য করেছে। কাতালোনিয়ার পুলিশ দফতর অবশ্য সবাইকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছে, কোথাও কোনো সমস্যা হবে না। এমনকি করিম বেনজেমাদের নিয়ে রিয়ালের বাস নির্বিঘ্নেই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করবে। এল ক্ল্যাসিকোর মহারণের আগে প্রতিপক্ষ নিয়ে কথা বললেন লিওনেল মেসি। যার মূল সুর, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো না থাকলেও রিয়াল মাদ্রিদকে হারানো রীতিমত কঠিন। তিনি বলেন, ন্যু ক্যাম্পে দেখেছি, ওরা সবসময় প্রতি-আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলে। যা ভয়ঙ্কর। কারণ ওদের আক্রমণের ফুটবলারদের গতি খুব বেশি। রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হিসেবে অবিশ্বাস্য সাফল্যের পরও এবার খারাপ শুরুর জন্য প্রচুর সমালোচনা হচ্ছে জিনেদিন জিদানের। এ নিয়ে মেসি বলেন, জিদানের ব্যাপারটা বিস্ময়কর। তবে আমরা যারা বহুদিন বড় ক্লাবে খেলছি, তারা জানি এটা অস্বাভাবিক নয়। লোকে দ্রুত সব ভুলে যায়। প্রত্যেক দিন চাহিদা পূরণ করতে হয়। জিদানও বুঝেছে, তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফিও যথেষ্ট নয়। প্রথম দিন থেকে ভক্তেরা যা প্রত্যাশা করেছিল, এখনও সেটাই করে। বড় দলে কোচ ও ফুটবলারদের জীবনে এই চাপ একটা অঙ্গ। রোনালদো জুভেন্টাসে যাওয়ার পর তার শূন্যস্থান পূরণ করতে ব্যর্থ চেলসি থেকে আসা ইডেন হ্যাজার্ড। চোটও ভোগাচ্ছে তাকে। গোড়ালির হাড় ভাঙায় ক্লাসিকোয় তার খেলার সম্ভাবনা নেই। তবুও মেসি বলছেন, হ্যাজার্ড অন্য ঘরানার ফুটবলার। যে কোনও রক্ষণ নড়বড়ে করে দিতে পারে; কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানোর জাত আলাদা। দুজনের মধ্যে তুলনার প্রশ্ন ওঠে না। ক্রিশ্চিয়ানোর বিকল্প পাওয়া কঠিন। এল ক্ল্যাসিকো নিয়ে কথা বলেছেন রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদানও। তিনি বলেন, বার্সেলোনায় নানা অস্থিরতা রয়েছে। কঠোর নিরাপত্তায় খেলতে হবে; কিন্তু আমাদের সব চিন্তা ফুটবল মাঠ ঘিরে। মেসিকে নিয়ে কি পরিকল্পনা? এ বিষয়ে তিনি বলেন, জানি ওদের মেসি নামে এক ফুটবলার আছে; কিন্তু আমাদেরও নিজস্ব অস্ত্র আছে। ভাল ফুটবল খেলাই লক্ষ্য। জিদান উচ্ছ্বসিত রিয়ালে নতুন ফেডে ভালভার্দেকে নিয়ে। ক্লাসিকোয় সম্ভবত প্রথম থেকে ২১ বছরের এই উরুগুয়ান মিডফিল্ডার খেলবেন। জিদানের কথা, ভালভার্দে আমাদের আবিষ্কার। মজা করে যোগ করেন, রিয়াল ক্লাবটাই এ রকম। এখানে সেরা প্রতিভারা আসে। অন্য এক ভালভার্দে (বার্সা কোচ) রিয়াল সম্পর্কে বলেন, রোনালদো না থাকলেও রিয়ালের শক্তি কমেনি। তা ছাড়া ফেডের মতো নতুন ছেলেকে জিদান দারুণভাবে তুলে আনছে। এই মুহূর্তে লা লিগার টেবিলে শীর্ষে বার্সেলোনা, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে দুদলের পয়েন্ট সমান (৩৫)। টেবিলের শীর্ষে থেকে এই এল ক্লাসিকোর আগে কী ভাবছেন জিদান? রিয়াল কোচের বক্তব্য, আমরা ভালো অবস্থাতেই আছি। গত কয়েকটা ম্যাচ আমরা ভালো ছন্দেই খেলেছি। যে ভাবে খেলছি তাতে আমি খুশি। গত মৌসুমে সান্তিয়াগো বের্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদকে ৫ গোলে হারিয়ে ছিল বার্সেলোনা। গত কয়েকটা এল ক্লাসিকো ধরে দেখা গেছে বার্সা বেশি স্বচ্ছন্দ মাদ্রিদেই। কেন? মেসির ব্যাখ্যা, ওরা নিজেদের মাঠে বেশি অ্যাটাক করতে যায়। ফলে অনেক ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়। ক্যাম্প ন্যুতে ওরা অন্য রকম খেলে। একটু ডিফেন্স জমাট রেখে। আমরা বার্নাব্যুতে একইভাবে ৯০ মিনিট খেলি। তাই ওখানে আমরা ইদানিং বেশি সফল। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৮ ডিসেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/38PK0ZY
December 18, 2019 at 06:24AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top