ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর - শুরুর আগে মনে হচ্ছিল এবারের বিপিএল জমবে না। কেমন যেন নিষ্প্রাণ, ম্যাড়মেড়ে লাগছিল সব। অন্যবার যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে, এবার তা ছিল অনেক কম। সেটারও কারণ ছিল। ফ্র্যাঞ্চাইজি ছাড়া প্রথম আসর, সঙ্গে বড় ও নামি-দামি তারকার অংশ গ্রহণও কম। দেশের শীর্ষ তারকা সাকিব নেই। সাসপেন্সেনের খাঁড়ায় ঝুলে মাঠের বাইরে। ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল ছাড়া শুরুর আগে সে অর্থে কোন বড় তারকা ছিলেন না এবার। তুলনামূলক কম নামি তারকা দিয়েই শুরু হয়েছে এবারের বিপিএল। অনেকেরই ধারনা ছিল এবারের বিপিএল বুঝি জমবে না; কিন্তু যতই সময় গড়াচ্ছে, সে ধারণা ততই ভুল প্রমাণ হচ্ছে। দিনকে দিন আকর্ষণ বাড়ছে। আকর্ষণ বাড়ার মূল কারণ হলো, প্রায় প্রতিটি খেলায় রান হচ্ছে। চার ও ছক্কার অবাধ প্রদর্শনী ঘটছে। হাই স্কোরিং গেম হচ্ছে। যা দেখে দর্শক, সমর্থক ও ভক্তরা হচ্ছেন পুলকিত, রোমাঞ্চিত। টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে দর্শকদের এক নম্বর চাহিদাই হলো হাই স্কোরিং গেম। চার ও ছক্কার অনুপম প্রদর্শনী। সেটা হচ্ছে। তাই জমেছে মাঠের ক্রিকেট। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গত এক সপ্তাহে হওয়া ১২ ম্যাচে গড়-পড়তা ১৭০-১৮০ রান উঠেছে। ২০০ প্লাস রান উঠেছে ৫ বার। এর মধ্যে দুটি ম্যাচে দুদলই ২০০র ওপরে রান করেছে। আগের আসরগুলোর তুলনায় ঢাকা পর্বের খেলাগুলোতেও রান হয়েছে। চট্টগ্রামে রান তোলার মাত্রা বেড়েছে আরও কয়েকগুন। এদিকে মাঠের ক্রিকেট জমার পাশাপাশি আরও একটি লড়াইও জমে উঠেছে। তাহলো সেরা চারের লড়াই। বলার অপেক্ষা রাখে না, ৭ দলের সবারই লক্ষ্য, সবার আগে প্রথম চার দলে জায়গা করে নেয়া। কারণ শিরোপা জেতার আগে পা রাখতে হবে নক আউট পর্বে। শিরোপা জয়ের পথে সেটাই প্রথম ধাপ। সেরা চারে থাকতে না পারলেতো আর ফাইনাল খেলা যাবে না। তাই সব দলের লক্ষ্য একটাই- প্রথম চার দলের মধ্যে থাকা। এখন দেখতে দেখতে পুরো আসরের ৪০ ভাগ খেলা হয়ে গেছে। গড়পড়তা দলগুলো ৫ থেকে ৬টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। একমাত্র দল হলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, যারা সর্বাধিক ৭ ম্যাচ খেলে ফেলেছে। এছাড়া ঢাকা প্লাটুন, কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স আর সিলেট থান্ডার অংশ নিয়েছে সমান ৬টি করে ম্যাচে। অন্যদিকে রাজশাহী, খুলনা আর রংপুর খেলেছে ৫টি করে ম্যাচ। চট্টগ্রাম পর্ব শেষে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স (৭ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে), রাজশাহী রয়্যালস (৫ ম্যাচে ৪টিতে জিতে ৮ পয়েন্ট) এবং ঢাকা প্লাটুন (৬ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট) এবং খুলনা টাইগার্স (৫ ম্যাচে তিন জয়ে ৬ পয়েন্ট) টপ ফোরের পথে তুলনামূলক এগিয়ে আছে। এছাড়া কুমিল্লাও খুলনার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। দলটির পয়েন্ট ৬ ম্যাচে চার পরাজয় ও দুটিতে জয়। সিলেট থান্ডার (৬ ম্যাচে এক জয়, ৫ হার) আর রংপুর রেঞ্জার্স (৫ ম্যাচে এক জয় ও চার পরাজয়) সবার পিছনে। পয়েন্ট টেবিলের এখনকার যে অবস্থা, সেটাই শেষ কথা নয়। চালচিত্র-দৃশ্যপট পাল্টতে সময় লাগবে না। দুই বছর আগে, মানে ২০১৭ সালের বিপিএলের শুরুর কথা। সেবার সিলেটে হওয়া প্রথম পর্বের প্রথম তিন ম্যাচ জিতে উড়ন্ত সূচনা করেছিল সিলেট; কিন্তু হায়! সিলেটে শেষ ম্যাচে হার দিয়ে শুরু ভাগ্য বিপর্যয়ের। তারপর আর জয়ের দেখাই পায়নি তারা। এবারো যে কোন দলের এমন ঘটবে না, তা কি করে বলা যায়? কাজেই এখন যে চার দল আছে সামনে, তারাই শেষ পর্যন্ত সেরা চারে খেলবে? তার কোনই নিশ্চয়তা নেই। তবে সামনের যে তিন পর্ব বাকি আছে, তার প্রতিটি ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। মোটকথা, আগামী পরশু ২৭ ডিসেম্বর থেকে ঢাকার মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে যে পর্ব শুরু হবে, তার সবকটা ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেরা চারে থাকার লড়াই সামনে রেখেই শুক্রবার থেকে আবার মাঠে নামবে দলগুলো। এ পর্বে ২৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর খেলা চলবে শেরে বাংলায়। এখানে পাঁচদিনে একদিন (২৯ ডিসেম্বর খেলা নেই) বিরতি। তার মানে চার দিনে হবে ৮ ম্যাচ। তারপর বিপিএল যাবে সিলেটে। ২ জানুয়ারি থেকে সিলেটেও হবে তিন দিনের আরেকটি ছোট্ট পর্ব। সেখানেও ছয়টি ম্যাচ। এই ৮+৬ = ১৪ ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। যারা এগিয়ে আছে, সেই দলগুলো যদি এর মধ্যে বেশিরভাগ ম্যাচ জিতে যায়, তাহলে চালচিত্র বদলের সম্ভাবনা কমে যাবে। এ পর্বে ঢাকা, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, কুমিল্লা, সিলেট ও খুলনা টাইগার্স সমান দুটি করে ম্যাচ খেলবে। অন্যদিকে, রংপুর ও রাজশাহী অংশ নেবে সমান তিনটি করে ম্যাচে। দেখা যাক কে কক্ষপথে থাকে, কোন দল সামনে আগায়? আর কে বা কারা পিছিয়ে পড়ে? ঢাকায় তৃতীয় পর্বের সূচি ২৭ ডিসেম্বর : ঢাকা প্লাটুন ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এবং খুলনা টাইগার্স ও রংপুর রয়্যালস। ২৮ ডিসেম্বর : কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স আর রাজশাহী রয়্যালস। খুলনা টাইগার্স বনাম সিলেট থান্ডার্স। ৩০ ডিসেম্বর : রংপুর ও সিলেট। ঢাকা ও রাজশাহী। ৩১ ডিসেম্বর : চট্টগ্রাম-কুমিল্লা, রাজশাহী ও রংপুর। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৫ ডিসেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/39kQMYa
December 25, 2019 at 10:06AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top