ঢাকা,১০ জানুয়ারি - বুধবার রাত থেকে দেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের মনে কয়েকটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে; ১. বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কি সত্যিই পাকিস্তান সফরে যাবে? ২. যদি যায়, তাহলে কবে যাবে? ৩. আর গেলে কি খেলতে যাবে? টেস্ট না টি-টোয়েন্টি? ৪. টেস্ট খেলতে গেলে কয় ম্যাচের, দুই না এক ম্যাচের? বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আগের রাতে জানিয়েছিলেন, কাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরের মধ্যে সব কিছু চুড়ান্ত হয়ে যাবে। তাই সবার ধারণা ছিল আজ বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ পাকিস্তান সফর নিয়ে বিসিবির সিদ্ধান্ত জানা হয়ে যাবে। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বিকেল থেকে সন্ধ্যা হয়ে রাত- কিন্তু বিসিবির কোন সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। সিদ্ধান্ত বহুদূরে, আজ বৃহস্পতিবার বিসিবি বিগবস নাজমুল হাসান পাপনসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের কেউ বোর্ডেই আসেননি। একদম নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর, আজ পাকিস্তান সফর নিয়ে বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ে কোন অনানুষ্ঠানিক সভা বহুদূরে, পরিচালকদের নিজেদের মধ্যে তেমন কোন আলাপ আলোচনাও হয়নি। তাই রাতে আর পাকিস্তান সফর নিয়ে বিসিবির কোনো সিদ্ধান্তই জানা যায়নি। সম্ভাবনাও নেই। আজতো নয়ই, সম্ভবত আগামী ৪৮ ঘন্টায়ও বোর্ডের সত্যিকার মত জানার সম্ভাবনা কম। কারণ কাল শুক্রবার। বিপিএলের খেলা আছে। বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বোর্ডে আসতেও পারেন, নাও পারেন। তারপর শনিবার নিজেদের মধ্যে খানিক আলাপ আলোচনা। এরপর আগামী ১২ জানুয়ারি রোববার বিসিবির পরিচালক পর্ষদের সভা। হয়ত সেই সভাতেই নির্ধারিত হবে পাকিস্তান সফরের ভাগ্য। আজ বৃহস্পতিবার বোর্ড প্রধান শীর্ষ পরিচালকদের সাথে সেভাবে কোথাও না বসলেও একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, এখনো বিসিবি আর পিসিবির মধ্যে কথা-বার্তা চলছে। আজ রাতে বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজনের কথায় মিলেছে তেমন আভাস। বিসিবি প্রধান নির্বাহী জানান, আগের দিন বোর্ড প্রধান (নাজমুল হাসান পাপন) যা জানিয়েছেন, সেটাই আমাদের সর্বশেষ অবস্থান। তবে দুই বোর্ডের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। কথা-বার্তা চলছে। আমরা হয়ত খুব শিগগিরই একটি সিদ্ধান্তে উপনিত হবো। সেটা কি রাত কিংবা কাল শুক্রবার নাগাদ হয়ে যাবে? তখন বিসিবি প্রধান নির্বাহী বলেন, হ্যাঁ কাল যেহেতু শুক্রবার ছুটির দিন, তাই কাল কিছু হবার সম্ভাবনা কম। কাজেই ধরে নেয়া যায় আগামী ১২ জানুয়ারি বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। বলার অপেক্ষা রাখে না বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আগের দিন মিডিয়াকে জানিয়েছেন, পিসিবি এখন টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাদ দিয়ে আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ আয়োজন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ যেহেতু দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ, তাই সেটা পরে সুবিধাজনক সময়ে আয়োজন করে এখন আগে বিসিবিকে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে। বিসিবি সেই প্রস্তাব মানবে কি মানবে না? পিসিবির অনুরোধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ না খেলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে রাজি কিনা? সেটাই দেখার। একদম ভিতরের খবর, বিসিবি এখনো পুরো বিষয়টি নিয়ে ভাবছে এবং এখন পর্যন্ত হ্যাঁ-না কোন সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হয়নি। এদিকে বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বিসিবি একসঙ্গে দুই টেস্ট খেলতে যাওয়া নিয়েই দ্বিধায় পড়ে গেছে। কারণ দুই টেস্ট ম্যাচ খেলা মানেই অন্তত ১৫দিন পাকিস্তানে থাকা। এটা বিসিবির আগে থেকে ঠিক করে রাখা সময়ের প্রায় দ্বিগুণ। সবার জানা বিসিবি বরাবর টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে আগ্রহী এবং ধরেই নেয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৭ দিনে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্ট সিরিজ শেষ হয়ে যাবে। তাই টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাবার অর্থ এক সপ্তাহর জন্য পাকিস্তান সফর। কিন্তু দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে অংশ নিতে গেলে ঠিক তার দ্বিগুণ সময়ের প্রয়োজন। তাই বিসিবি আপাততঃ এক টেস্ট খেলার বিকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তাতে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপও হবে, পাকিস্তানের টেস্ট খেলার ইচ্ছে পূরণও হবে। এমন চিন্তায় এক টেস্টের জন্য পিসিবিকে বলা হয়েছে। এখন পিসিবি তাতে সন্মত হবে কি না? সেটাই দেখার। জানা গেছে, পিসিবি যদি এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজ আয়োজনে রাজি হয়, তাহলে হয়ত বাংলাদেশ এক টেস্ট খেলতে দল পাঠাবে। এক টেস্ট খেলার অর্থ সর্বোচ্চ ৭ বা ৮ দিনের অবস্থান। তার মানে সেই টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য যে সময় সীমা ধরা হয়েছিল, ঠিক ওই সময়ের মধ্যে এক টেস্ট খেলে ফেরত আসা যাবে। কিন্তু পিসিবির জোর দাবি, এক সাথে দুই টেস্ট খেলতে যেতে হবে। সেটা নিয়েই নাকি আপত্তি বিসিবির। কাজেই পিসিবি যদি দুই টেস্টের জন্য খুব পীড়াপীড়ি করে এবং নিজেদের দাবিতে অবিচল থাকে, তাহলে হয়তো পাকিস্তান সফরে না যাবার ঘোষণাও আসতে পারে। বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র আরও জানিয়েছে, নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে বিসিবির চিন্তা ও শঙ্কা তুলনামুলক কম। বিসিবি পিসিবির নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মোটামুটি সন্তুষ্ট। বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বুধবার রাতে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা নিয়ে তারা ততটা চিন্তিত ও শঙ্কিত নন। তিনি নিজেও নিরাপত্তা দেখে এসেছেন এবং সেটাকে তারও সন্তোষজনক বলেই মনে হয়েছে। কিন্তু একদম ভেতরের খবর, আসল বাঁধা কেবল সেই বেশিদিন পাকিস্তানে অবস্থান। দুই টেস্ট খেলতে গেলে এক সাথে ১৫/১৬ দিন থাকতে হবে। সেটাই বড় বাধা। সেই দীর্ঘ সময়ে ক্রিকেটারররা একটানা কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে থেকে মানসিক অস্থিরতায় ভোগেন কি না? সেটাও একটা বড় সংশয়। তাই বিসিবির পক্ষ থেকে কম সময় থেকে এক টেস্ট খেলার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১০ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2uvb3tW
January 10, 2020 at 03:39AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন