ঢাকা, ১১ জানুয়ারি- অতি বড় সমালোচকও তার ব্যাটিংশৈলী, শটস খেলার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না। তার সমসাময়িকদের ভেতরে তো বটেই, সিনিয়রদের মধ্যেও লিটন দাসের মতো ফ্রি-স্ট্রোক খেলার পারফরমার এখন কম। তিনি পারেন। অনায়াসে, অবলীলায় যাকে তাকে যেভাবে খুশি বাহারি মারে সীমানার ওপারে পাঠাতে জুড়ি নেই। ক্রিকেট অভিধানের প্রায় সব শটই আছে লিটন দাসের উইলোতে। কভার ড্রাইভ, অফ ও অন ড্রাইভ, ফ্লিক খেলতে পারেন অবলীলায়। তবে অতি মাত্রায় অনসাইডে খেলা, শাফল করে লেগমিডল স্টাম্পে পিচ করা ডেলিভারিকে ফ্লিক আর গ্ল্যান্সের মাঝামাঝি খেলার চেষ্টাটাই বেশি। পাশাপাশি কিছু চটকদার মার, বাহারি স্ট্রোক প্লেতে কুড়ি-পঁচিশ পার করেই ধৈর্য্য ও মনোসংযোগ হারিয়ে ফেলার কারণে তার বেশিরভাগ ইনিংসেরই অকালে থেমে যাওয়ার রেকর্ড আছে। শটস খেলায় দক্ষ হলেও তার ব্যাটে ধারাবাহিকতা তুলনামূলক কম। অনেক সম্ভাবনাময় ও বাহারি স্ট্রোক প্লেতে সাজানো ইনিংসই ২০ থেকে ২৫এ থেমে যাওয়ার নজির ভুরিভুরি। কিন্তু ইদানীং তার ব্যাটে ধারাবাহিকতা বেড়েছে। তেড়েফুড়ে শটস খেলার প্রবণতাও কমেছে। ইনিংসের মাঝামাঝি মানে ২৫- ৩০এ গিয়ে উল্টাপাল্টা শট খেলার ইচ্ছেটাও কম দেখা যাচ্ছে আগের চেয়ে। মোদ্দা কথা, লিটন দাসকে এখন আগের চেয়ে পরিণত-স্থির মনে হচ্ছে। বিপিএলে এই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সাথে ঠিক আগের ম্যাচে ৪৫ বলে ৫৬ রান করার পর আজ (শনিবার) আবার হাফসেঞ্চুরি পার করে ৭০র ঘরে (৪৮ বলে ৭৫) আউট হয়েছেন লিটন। টি-টোয়েন্টিতে যে ইনিংসটাকে বড়ই বলা যায়। কিন্তু হঠাৎ কিভাবে এমন বদল আসলো লিটনের মানসিকতায়? চিরায়ত স্টাইল পাল্টে মানে বাহারি মার আর দৃষ্টিনন্দন স্ট্রোক প্লের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে লম্বা ইনিংস খেলার মন্ত্রটা কিভাবে হঠাৎই আত্মস্থ করে ফেললেন ডানহাতি এই ওপেনার? লিটনের নিজের ধারণা, ম্যাচিউরিটি বাড়ার কারণেই সম্ভবত তার ব্যাটের ধারাবাহিকতা বেড়েছে। এই ম্যাচিউরিটি বা পরিণতিবোধটা কিভাবে এসেছে, সেটাও আজ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে জানিয়ে গেলেন লিটন। তার বিশ্বাস, বিয়ের পর থেকেই ম্যাচিউরিটি বেড়েছে। সেটা কেন ও কি কারণে? তা ঠিক নিজেও বুঝে উঠতে পারছেন না লিটন। তবে তার মনে হয়, বিয়ের পর পরিমিতিবোধ ও মানসিকভাবে পরিণত হয়েছেন আরও। তাই তো নিজ মুখেই বলে বসলেন, আমি খুব লাকি যে কম বয়সে বিয়ে করতে পেরেছি। বিয়ে জিনিসটা আমার ম্যাচুউরিটি লেভেলটা বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা আমি ফিল করি। জানি না কে কিভাবে ফিল করে। ওই জিনিসটাই ফিল করছি। যদিও তার মূল্যায়ন, ২০১৬-২০১৭ সালের দিকে যখন ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না, রীতিমত খারাপ সময় যাচ্ছিল, সে সময়টাও তাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। তবে পরিণতিবোধটা আরও বেশি বেড়েছে আসলে বিয়ের পরেই। তার ভাষায়, আমি যখন ১৬-১৭ তে খারাপ ক্রিকেট খেলেছি তখন জাতীয় দলের বাইরে ছিলাম। আমি কিন্তু অফফর্মে থাকিনি। ওই জায়গায় আমি অনেক কিছু শিখেছি। ঠেকেছি প্লাস শিখেছি। ওটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আবার বিয়ের পর আবার ম্যাচিউরিটি লেভেল বেড়েছে। সেটা ক্রিকেট হোক। মাঠে হোক বা মাঠের বাইরে হোক, সবকিছুতেই। তার মানে লিটন বোঝাতে চাইলেন, বিয়েই বদলে দিয়েছে তার ক্যারিয়ারকে। আগের চেয়ে অনেক বেশি হিসেবি করে তুলেছে। আক্রমণাত্মক আর বাহারি মারই শেষ কথা নয়, দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস খেললেই বরং উপকৃত হয় দল- এই বোধ এখন অনেক বেশি জাগ্রত লিটনের মধ্যে। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/১১ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2TdycLR
January 11, 2020 at 02:10PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন