ঢাকা, ১১ জানুয়ারি - টার্গেট খুব বেশি ছিল না, জিততে দরকার ছিল ১৫৬ রানের। ২৯ বলে পঞ্চাশে পা রাখা লিটন দাস যেভাবে খেলছিলেন, তাতে অনায়াসে ম্যাচ শেষ করে বিজয়ীর বেশে সাজঘরে ফিরতে পারতেন। কিন্তু জেন্টল মিডিয়াম পেসার জিয়াউর রহমানের উইকেট সোজা ভেতরে আসা ডেলিভারিকে কব্জির মোচড়ে অনসাইডে ঘোরাতে গিয়ে লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ে বিদায়। লিটন যখন সাজঘরের পথে, তখন তার দল রাজশাহী রয়ালস জয় থেকে মাত্র ১৮ রান দূরে। ম্যাচ শেষ করে আসতে না পারার আক্ষেপটা পোড়াচ্ছে লিটন দাসকেও। খেলা শেষেও সে আফসোসের কথাই মুখে, আফসোস তো অবশ্যই থাকবে। আমি যখন আউট হয়েছি, তখন বলের থেকে রান অনেক কম লাগতো। নটআউট থাকলে ভালো হতো। ম্যাচ শেষ করে আসতে না পারলেও বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন শটে লিটন দাসের ব্যাট থেকে আসা ৭৫ রানের ঐ ঝড়ো ইনিংসেই ৮ উইকেটের সহজ জয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে রাজশাহী। ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা লিটন দাস এখন দলটির বড় সম্পদ। এবার বিপিএলে শুধু যে তার ব্যাটে ধারাবাহিকতা বেড়েছে, তা-ই নয়। যারা খুঁটিয়ে লক্ষ্য করেন, তাদের ঠিকই চোখে পড়েছে যে, লিটনের পুরো ব্যাটিংশৈলীতেই এসেছে বড় ধরনের পরিবর্তন। তেড়ে ফুড়ে শট খেলার ইচ্ছে- প্রবণতা দুই-ই কমেছে। লিটন দাস নিজের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ, ফুট ম্যুভমেন্ট তথা পুরো ধাঁচটাই ফেলেছেন পাল্টে। দেখে মনে হচ্ছে এ যেন এক অন্য লিটন। এবারের বিপিএলে এখন তার রান ৪২০। স্ট্রাইকরেটও ঈর্ষণীয়, ১৪০। কিভাবে নিজেকে এমন বদলে ফেললেন? এ বদলে যাবার গল্পটা আজ শনিবার সন্ধ্যায় শেরে বাংলার কনফারেন্স হলে বসে লিটন নিজেই জানালেন। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে তার নিজ দল রাজশাহী রয়্যালস নিয়ে যত না কথা বলেছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি নিজের ব্যাটিং নিয়েই আলাপ করতে হয়েছে। অনেক কথার ভীড়ে লিটন দাস একটি কথা বলে ফেলেছেন, একটা প্রসেসে অনুশীলন করলে সব সময় কাজ হয়না। কখনো হয়, আবার কখনো হয় না। ব্যাটিংয়ে উন্নতির জন্য ম্যাচিউরিটির খুব দরকার। লিটন বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, আত্ম-উপলব্ধিটা খুব জরুরি। নিজের সমস্যার জায়গাটা কোথায়, তা চিহ্নিত করাও দরকার। তার কথাবার্তায় পরিষ্কার যে, তিনি এখন উপলব্ধি করছেন, ক্রমাগত হাত খুলে খেলাটাও হয়তো অতীতে তার ধারাবাহিকতায় বাধা হিসেবে কাজ করেছে। তিনি ইচ্ছেমত শটস খেলতেন। তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই হতো বেশি। আগে বেশি বেশি শটস খেলার প্রবণতা ছিল, আর স্ট্রাইকরেট ১৪০ + এ ব্যাট করার চেষ্টা ছিল। এখন সেটা পাল্টে ১৩০ র আশপাশে স্ট্রাইকরেটে থাকতে চান। নিজেকে বদলে ফেলার গল্পটা আজ নিজ মুখেই বলেছেন জাতীয় দলের এ ওপেনার। আসুন তার ব্যাখ্যাটা শোনা যাক, আমি এর আগে যে কয়টি বিপিএল খেলেছি, তাতে মারতেই থাকতাম। আমার পরিকল্পনা থাকতো- আমি সব ধরণের শট খেলতে পারি তাই সব শট খেলবো। কিন্তু এই বিপিএলে আমি অনেক শট কমিয়ে দিয়েছি। আগের দুই-তিন বিপিএলে হয়তো আমার ১৫ বলে ২৭ বা ৩০ রান থাকত। তখন আউট হয়ে যেতাম। কিন্তু এ বিপিএলে দেখবেন ম্যাক্সিমাম রান আমার ১৫ বলে ১৭ বা ১৩। ওই জায়গাটায় আমি হয়তো নরম্যাল ক্রিকেট খেলছি। পাওয়ার প্লেতে অবশ্য বোলাররা ব্যাকফুটে থাকে সব সময়। আমি যদি একটা চার মেরে দেই, পরের বলে বোলাররা কি করবে তা একবার হলেও চিন্তা করতে পারে। এখানে নিজেকে একটু ব্যাক করার চিন্তা করছি। তাই সব ধরনের শট খেলা বাদ দিয়েছি। বেছে বেছে খেলছি। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১১ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2FI8iIi
January 11, 2020 at 02:49PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন