সিলেট, ২৭ ফেব্রুয়ারি- ধারণত ঘরের মাঠে টেস্টে স্পিন সহায়ক পিচেই খেলে থাকে বাংলাদেশ দল। ঝানু স্পিনার সাকিব আল হাসান, সঙ্গে তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসানদের নিয়ে স্পিন আক্রমণটাও হয় দুর্বার। যার সুফল বিগত ৪-৫ বছরে বেশ কয়েকবারই পেয়েছে টাইগাররা। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডকে মিরপুরের স্পিনিং উইকেটে নাস্তানাবুদ করা থেকে শুরু করে ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ব্যবধানে হারানো, মাঝে অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও একই রণকৌশলে এসেছে সাফল্য। তবে ২০১৮ সালের নভেম্বরে সিলেটে উইকেটের চরিত্র পাল্টে উল্টো বিপদে পড়েছে টাইগাররা। স্পিন সহায়ক পিচ ভেবে এ পেসার আবু জায়েদ রাহীকে নিয়ে সাজানো হয়েছিল একাদশ। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে উইকেটের আচরণ ভিন্ন। স্পিনারদের জন্য ছিলো না তেমন বাড়তি কোনো সুবিধা। যার মাশুল গুনতে হয়েছিল ১৫১ রানের করুণ পরাজয়ে। এর মাঝে ব্যতিক্রম একটাই। গতবছর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে স্পিনিং উইকেট বানিয়েও মেলেনি সাফল্য। তিন আফগান স্পিনার রশিদ খান, কায়েস আহমেদ ও জহির খানের ত্রিমুখী আক্রমণে নাজেহাল হয়েছে টাইগার ব্যাটিং লাইনআপ। ম্যাচের ফলাফল ছিলো স্বাগতিকদের ২২৪ রানের বড় পরাজয়। তবু সাফল্যের আনুপাতিক হিসেবে স্পিনিং উইকেটই গত কয়েকবছরে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় বন্ধু। যার সাহায্যে নিজেদের স্পিন শক্তি কাজে লাগিয়ে নাস্তানাবুদ করা গেছে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্বশক্তি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো সমীহ জাগানো দলকে। আর এবার সে ধারা থেকে খানিক বেরিয়ে এসে তুলনামূলক দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বরাবরের স্পিনিং ট্র্যাক থেকে বেরিয়ে মোটামুটি স্পোর্টিং পিচই বানিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার আর প্রথম দিন থেকেই উইকেটে ইয়া বড় বড় টার্ন ছিলো না, বল হঠাৎ লাফিয়েও ওঠেনি তেমন, বিপজ্জনকভাবে নিচুও হয়নি। বরং বোলার-ব্যাটসম্যানদের জন্য ছিলো সমান সুযোগ। বলের গতিপ্রকৃতি বুঝে খেলতে পারলে লম্বা সময় উইকেটে থাকার পাশাপাশি বড় ইনিংস খেলা মোটেও কঠিন ছিলো না। যার প্রমাণ মুশফিকুর রহীম (২০৩*) ও মুমিনুল হকের (১৩২) দুই সেঞ্চুরির ইনিংস। পরে উইকেটের চরিত্র বুঝে বোলিং করেছেন আবু জায়েদ রাহী, নাঈম হাসানরা। মিলেছে ইনিংস ও ১০৬ রানের বড় জয়। মোদ্দা কথা, স্পিন সহায় পিচ বাদ দিয়ে স্পোর্টিং উইকেটে জিম্বাবুয়ে বধ মিশন হয়েছে সফল। তাই ওয়ানডে সিরিজেও অমন উইকেটের কথাই ভাবছে বাংলাদেশ। দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কণ্ঠে সেই আভাস। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে প্রধান নির্বাচক বলেন, যদিও দুই ফরম্যাটের গতিপ্রকৃতি ও চরিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। তারপরেও টেস্টে যেহেতু স্পোর্টিং উইকেটে সাফল্য এসেছে, তাই ওয়ানডেতেও অমন উইকেটই চাইবো আমরা। নান্নু আরও যোগ করেন, সিলেটের পিচ এমনিতেই ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি হয়। আমরা চাই, ফ্ল্যাট ট্র্যাক, যেখানে রান উঠবে। প্রধান নির্বাচকের কথা মতো যদি উইকেট স্পোর্টিংই হয়, তাহলে একাদশে স্পিনারের পাশাপাশি পেস বোলাররাও পাবেন বাড়তি গুরুত্ব। যতদূর জানা গেছে, অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গে পিঠের ইনজুরি কাঁটিয়ে দলে ফেরা সাইফউদ্দিন তো থাকবেনই। সঙ্গে তৃতীয় পেসার হিসেবেও কাউকে দেখা যাবে। এটুকু শুনে হয়তো ভাবছেন, তিন পেসার সঙ্গে এক স্পেশালিস্ট স্পিনার এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেনকে দিয়ে কাজ চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে। আসলে তা নয়। ভেতরের খবর, ব্যাটিংটা সাজানো-গোছানো রেখে তিন পেসারের সাথে দুই স্পিনার খেলানোর চিন্তাই চলছে। হঠাৎ ভারী বৃষ্টি বা ঘন কুয়াশা এবং সিলেটে প্রচণ্ড শিশির না পড়লে, একাদশে দুই স্পেশালিস্ট স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজের খেলার সম্ভাবনা খুব বেশি। ওদিকে ব্যাটিংয়ে যেহেতু সৌম্য সরকার নেই, তাই টি-টোয়েন্টির মতো তামিমের সঙ্গে নাঈম শেখকেই জুটি বাঁধতে দেখা যেতে পারে। সৌম্যর অনুপস্থিতিতে প্রথম পাওয়ার প্লেতে হাত খুলে খেলার সামর্থ্যটা আছে এ তরুণ বাঁহাতির। তাই হয়তো নির্বাচকরা টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি ওয়ানডেতেও প্রথমবারের মতো দলে ডেকে নিয়েছেন নাঈম শেখকে। তার কাছ থেকে দলের প্রত্যাশাটাও থাকবে সেটাই। সেক্ষেত্রে লিটন দাস হবেন ওয়ান ডাউন। তারপর যথাক্রমে মুশদিক, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ। পর্যায়ক্রমে মিরাজ, সাইফউদ্দিন, মাশরাফিরা আসবেন ব্যাটিংয়ে। তবে থার্ড পেসার হিসেবে কে খেলবেন? তা নিয়ে আছে সংশয়। যতদূর জানা গেছে, শফিউল, মোস্তাফিজ ও আলআমিনের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেয়া হবে। আর এ দৌড়ে অন্য দুজনের চেয়ে খানিক এগিয়েই রয়েছেন শফিউল ইসলাম। তাহলে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ দাঁড়ায়: তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, লিটন দাস, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তাইজুল ইসলাম ও শফিউল ইসলাম/মোস্তাফিজুর রহমান/আলআমিন হোসেন। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/২৭ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HZU9aq
February 27, 2020 at 07:46AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top