ঢাকা, ১৮ ফেব্রুয়ারি - আর মাত্র ৯৬ ঘণ্টা পর (২২ ফেব্রুয়ারি) শেরেবাংলায় শুরু বাংলাদেশ আর জিম্বাবুয়ে টেস্ট। তারও আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেএসপিতে সফরকারী জিম্বাবুয়ে আর বিসিবি একাদশের দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ মাঠে গড়াবে। কিন্তু অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে ওই এক মাত্র টেস্ট নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্ত-অনুরাগীর উৎসাহ-উদ্দীপনা অনেক কম। বরং অনেকেই জিম্বাবুয়ের সাথে টেস্ট খেলাকে নেতিবাচক চোখে দেখছেন। তাদের মত এ টেস্ট আসলে শুভঙ্করের ফাঁকি। দেশের বাইরে যার তার কাছে শ্রী-হীন ক্রিকেট খেলে যাচ্ছেতাই ভাবে হেরে দুর্বল, জীর্ন-শীর্ন জিম্বাবুয়েকে ডেকে এনে বড় ব্যবধানে জিতে আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে লাভ কি? এটা আসলে শুভঙ্করের ফাঁকি ছাড়া আর কিছুই না। তাই টেস্ট ছাপিয়ে ভক্ত ও সমর্থকরা তাকিয়ে জিম্বাবুয়ের সাথে ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে। ভাবছেন সেটাও তো একই কথা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট জিতে বাহাদুরি আর ওয়ানডে সিরিজ জয়তো একই কথা। তাতেই বা কি বীরত্ম প্রকাশ পাবে? এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে; কিন্তু আসল কথা হলো, ভক্ত ও সমর্থকরা বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে উৎসাহী অন্য কারণে। তাদের কৌতুহল যতটা ওই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ, তারচেয়ে বেশি উৎসাহ মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়ে। সবার কৌতুহলি চোখ নড়াইল এক্সপ্রেসের ওপর। সবার প্রশ্ন ঘুরেফিরে একটাই প্রশ্ন- মাশরাফিকে কি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে অংশ নেবেন? সে প্রশ্নর উত্তর জানতে উন্মুখ অপেক্ষায় কোটি মাশরাফি ভক্ত। এদিকে আজ সোমবার সকালে হঠাৎ শেরে বাংলায় এসে হাজির দেশে ক্রিকেট ইতিহজাসের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক। তারপর মাশরাফিকে ঘিরে গুঞ্জন আরও বেশি। তা ডালপালা ছড়িয়েওছে অনেক। এখন যত কথা মাশরাফিকে নিয়েই; কিন্তু এ মুহূর্তের খবর, মাশরাফি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলবেন, নেতৃত্বও দেবেন- এমন নিশ্চয়তা মেলেনি। সত্যি কথা বলতে মাশরাফির বিষয়টি এখনো ধোঁয়াশে। নড়াইল এক্সপ্রেস আদৌ খেলবেন এমন নিশ্চয়তা যেমন মেলেনি। একইভাবে খেলবেন না, তাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কেউ। যার সবচেয়ে বেশি জানার কথা, সেই প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, মাশরাফি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলবেন। সোমবার সন্ধ্যায় মাশরাফি প্রসঙ্গে নান্নু বলেন, আমি বা আমরা (নির্বাচকরা) এখনো জানি না মাশরাফি খেলবে কি খেলবে না। কেন আপনারা তো ২২-২৩ ফেব্রুয়ারির দিকে ওয়ানডে দল ঘোষণা করবেন, যারা টেস্টের বাইরে থাকবেন- তাদের নিয়ে অনুশীলনও শুরু হবে, তাহলে মাশরাফির বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত কেন? আপনি প্রধান নির্বাচক হিসেবে মাশরাফির সাথে যোগাযোগ করেননি? তার মত নেননি, খেলবেন কিনা জানতে চাননি? প্রধান নির্বাচকের জবাবে অন্যরকম আভাস- সেটাতো আমি বলতে পারবো না। আমরা অপেক্ষায় আছি আগে বোর্ড অধিনায়কের নাম ঘোষণা করবে, তারপর ওয়ানডে স্কোয়াড চূড়ান্ত করার প্রশ্ন। এর বাইরে প্রধান নির্বাচক আর কিছু না বললেও যে কথাটি উহ্য থেকে গেছে, তাহলো- আসলে টিম ম্যানেজমেন্ট আর নির্বাচক সবার সাথেই এখন একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে মাশরাফির। মাশরাফি আদৌ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলবেন কি না? তা নিজেও পরিষ্কার করেননি। কারণ, বিপিএলের শেষ দিকে পরপর দুদিন সাংবাদিকদের সাথে আলাপে মাশরাফি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে প্রায় একই কথা জানিয়েছেন, অবসরের বিষয়ে এখনো কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। আর জাতীয় দলের হয়ে কতদিন খেলা চালিয়ে যাবেন? আদৌ জাতীয় দলের পক্ষে খেলবেনই- তাও ঠিক নিশ্চিত নয়। খোদ মাশরাফির এমন বক্তব্যে হয়ত বোর্ডেও একটা অন্যরকম প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বোর্ড, টিম ম্যানেজমেন্ট আর নির্বাচকরাও হয়ত ধরে বসেন, তাহলে মাশরাফি নিজেও এখনই জাতীয় দল থেকে অবসরের চিন্তা ভাবনা করছেন না। আরও খেলা চালিয়ে যেতে চান। এখন তাহলে তাকে অধিনায়ক হিসেবে রেখে ওয়ানডে দল সাজানো হবে কি না? প্রধান নির্বাচকের কথা-বার্তায় কেন যেন মনে হচ্ছে, সেই বিষয়টিই চূড়ান্ত নয়। মোটকথা, মাশরাফি ইস্যু এখনো পেন্ডুলামের মত দুলছে। তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ক্যাপ্টেন্সি দেয়া হবে কি না? তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে খোদ বোর্ডেই দ্বিধা-সংশয় আছে। বোর্ড এখনো দ্বিধায়। আর তাই এখন পর্যন্ত বিসিবির সবুজ সঙ্কেত মেলেনি নির্বাচকদের। নান্নুর শেষ কথার রেশ ধরেই বলা, বিসিবি মাশরাফিকে অধিনায়ক করবে কি করবে না? তাও এখনো চূড়ান্ত নয়। তা যে অনিবার্য্যভাবে বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপনই করবেন, তাতেও সন্দেহ নেই। তার মানে বোর্ড সভাপতির সাথে মাশরাফির যোগাযোগ ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ছাড়া বলা যাচ্ছে না, মাশরাফি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজে অংশ নেবেন আর নেতৃত্বও করবেন। এদিকে যেহেতু টেস্ট দলের বাইরে বহুদিন। তাই তিনি জাতীয় লিগ (এনসিএল)- বিসিএল খেলেন না। বিপিএল বাদ দিলে মাশরাফি বিন মর্তুজা আর একটিমাত্র ঘরোয়া টুর্নামেন্টেই নিয়মিত অংশ নেন, সেটা প্রিমিয়ার লিগ। ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের এ আসরটিই সোৎসাহে নিয়মিত খেলেন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক। এখন যেহেতু বিসিএল চলছে, তাই মাশরাফিও মাঠের বাইরে। এক অর্থে বিশ্রামে। বিপিএলের পর সে অর্থে ক্রিকেটীয় কর্মকান্ড থেকে দুরে। তারপরও ফিটনেস ঠিক রাখার কাজটি করেন। জিমে আসেন মাঝে মধ্যেই। নিকট অতীত ও সাম্প্রতিক সময়ে হাতে গোনা কয়েকদিন শেরে বাংলায় জিম করতে এসেছিলেন। আজ সোমবার আবার হঠাৎ হোম অব ক্রিকেটে এসে উপস্থিত মাশরাফি বিন মর্তুজা। জিমও করলেন। সাংবাদিকদের সাথে অনেকদিন পর ঘণ্টা দেড়েক নির্মল আড্ডাও দিলেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট দরজায় কড়া নাড়ছে আর ওয়ানডে সিরিজ শুরুর দিন দশেক আগে মাশরাফিকে খোশ মেজাজে পাওয়া, শেরে বাংলায় জিমে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা দেখে মনে হওয়াই স্বাভাবিক, তিনি খেলতে চান। খেলার মানসিক প্রস্তুতি আছে। কিন্তু সাংবাদিকদের সাথে দীর্ঘ অনানুষ্ঠানিক আলাপে একবারের জন্য বলেননি, আমি খেলতে চাই এবং মন স্থির করেছি আমি খেলবো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। মনে হচ্ছে মাশরাফিও চান, এ বিষয়টি নিয়ে তার সাথে বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন কথা বলুন। এখন বিসিবি বিগ বস কি কথা বলবেন? যত শিগগিরই বলবেন, ততই মাশরাফি মাঠে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তার অবসান ঘটবে। না হয় বিষয়টি আরও দীর্ঘায়িত হবে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৮ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/39FMN7M
February 18, 2020 at 02:42AM
18 Feb 2020

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top