লাহোর, ০৮ ফেব্রুয়ারি - রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম দিনটা খুব একটা স্বস্তিতে কাটেনি বাংলাদেশের। তারপরও বড় ধরনের বিপর্যয় এড়িয়ে পুরো দিন খেলতে পেরেছে টাইগাররা। ৮২.৫ ওভারে অলআউট হয়েছে ২৩৩ রানে। আলোক স্বল্পতার কারণে ৭ ওভারের মতো বাকি থাকতেই দিনের খেলার ইতি টেনে দেন আম্পায়াররা। যেহেতু বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গেছে। আজ দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকেই ব্যাটিংয়ে নামবে পাকিস্তান। বাংলাদেশের তাই বোলিংয়ের প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামতে হবে। আগের দিন স্বাগতিকদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ব্যাটিংয়ের শুরুটা একদমই ভালো করতে পারেননি বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ও সাইফ। তবে প্রথম ওভারের প্রথম বল মিডউইকেট থেকে ৩ রান নিয়ে ইঙ্গিতটা ইতিবাচকই দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। যা ধরে রাখতে পারেননি এ অভিজ্ঞ ওপেনার। শাহিন শাহ আফ্রিদির করা সে ওভারের তৃতীয় বলে দৃষ্টিকটু শটে আউট হন সাইফ। ফুল লেন্থের ডেলিভারিতে কোনো রকমের ফুট মুভমেন্ট ছাড়াই ব্যাট এগিয়ে দেন তিনি। বাইরের কানায় লেগে যা চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো আসাদ শফিকের হাতে। যার সুবাদে উড়ন্ত সূচনা পায় পাকিস্তান। তাদের শুরুটা আরও দুর্দান্ত করে দেন মোহাম্মদ আব্বাস। দ্বিতীয় ওভার করতে এসে চতুর্থ বলেই তিনি আউট করেন তামিমকে। হালকা ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিটি সরাসরি আঘাত হানে তামিমের প্যাডে। আম্পায়ার প্রথমে নট আউট দেন। তবে রিভিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলে নেয় পাকিস্তান। ৩ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপরই উইকেটে আসেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। আর প্রথম ওভারে সাইফের বিদায় আগেই এসেছিলেন নাজমুল শান্ত। দুজন মিলে নেমে পড়েন চাপ সামাল দেয়ার মিশনে। তবে তাদের জুটিটা ছিল পুরোপুরি নড়বড়ে। বিশেষ করে অধিনায়ক মুমিনুলের ব্যাটিং। ইনিংসের ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে নাসিম শাহর দ্রুতগতির বাউন্সারটি যেন দেখতেই পাননি মুমিনুল হক। চোখ সরিয়ে নেন বলের লাইন থেকে, মুহূর্তের মধ্যে সেটি গিয়ে লাগে তার ব্যাটের ওপরের দিকে, অল্পের জন্য গালিতে দাঁড়ানো ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে চলে যায় বাউন্ডারিতে- মুমিনুলের ৫৯ বলের ইনিংসের প্রতীকী দৃশ্যই বলা চলে এই এক ডেলিভারির ঘটনাকে। যেখানে পুরোপুরি আধিপত্য বিস্তার করেছেন পাকিস্তানি পেসার নাসিম শাহ। কিন্তু কোনোমতে নিজেকে বাঁচিয়ে ৪ রান পেয়ে গেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল। ঠিক এভাবেই বাজে শুরুর পর প্রথম ঘণ্টাটা কাটিয়ে দেন মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে মুমিনুলের তুলনায় বেশি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্যাটিং করছেন শান্ত। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে দুর্দান্ত এক কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জানান দিয়েছেন নিজের আত্মবিশ্বাসের কথাও। অন্যদিকে মুমিনুল খুঁজে পাননি ছন্দ। নাসিম শাহর শর্ট লেন্থের ডেলিভারিতে বেশ বিপাকেই পড়তে দেখা গেছে তাকে। যার ধারাবাহিকতায় নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি টাইগার অধিনায়ক। ৩০ রান করে শাহীন শাহর শিকার হন ইনিংসের ২২তম ওভারে। এরপর মাহমুদউল্লাহ আর শান্তর ৩৩ রানের একটি জুটি। দারুণ খেলছিলেন শান্ত। হঠাৎই কি মনে করে মোহাম্মদ আব্বাসের বেরিয়ে যাওয়া বলটায় ব্যাট ছুয়ে দেন। উইকেটের পেছনে ক্যাচ হন ৪৪ রানে। তার ১১০ বলের ইনিংসটায় ছিল ৬টি বাউন্ডারির মার। মিঠুন ক্রিজে আসার পর কিছুটা সময় ভালোই কেটেছে বাংলাদেশের। তবে মাহমুদউল্লাহ শাহীন শাহ আফ্রিদির অনেক বাইরের একটি ডেলিভারিতে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ হন আসাদ শফিকের। ৪৮ বলে ৪ বাউন্ডারিতে তিনি তখন ২৫ রানে। ১০৭ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ৫৪ রানের আরেকটি লড়াকু জুটি লিটন দাস আর মোহাম্মদ মিঠুনের। দারুণ খেলছিলেন লিটন। হঠাৎ একটি বল লেগে যায় পায়ে। হারিস সোহেলের টার্নিং ডেলিভারিটি লিটনের প্যাডে লাগলেও অবশ্য আউট দেননি আম্পায়ার নাইজেল লং। রিভিউ নেয় পাকিস্তান। এবারও জিতে যায় তারা। ৪৬ বলে ৭ চারের সাহায্যে ৩৩ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন লিটন। তবে এরপর আবারও প্রতিরোধ বাংলাদেশের। সপ্তম উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে প্রায় ২৩ ওভারের মতো কাটিয়ে দেন তাইজুল, দলকে পার করে দেন ২০০ রান। ৫৩ রানের জুটিটি অবশ্য ভেঙেছে তাইজুলেরই ভুলে। হারিস সোহেলকে অযথা তুলে মারতে গিয়ে মিডঅফে ইয়াসির শাহর সহজ ক্যাচ হন তিনি। ৭২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে তাইজুলের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান। এরপর ১ রানেই রুবেলকে বোল্ড করে দেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। পরের ওভারে এক বল বিরতিতেই বাংলাদেশের শেষ ভরসা মোহাম্মদ মিঠুনকেও তুলে নেন নাসিম শাহ। হাফসেঞ্চুরিয়ান মিঠুন অবশ্য নিজের ভুলে আউট হয়েছেন বলা যাবে না। নাসিমের দুর্দান্ত ডেলিভারিটি হাত আর পেটের মাঝখানের ফাঁক দিয়ে ব্যাটে লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। শুরুতে আউট দেননি আম্পায়ার। পাকিস্তান রিভিউ নেয়। তাতে দেখা যায় পরিষ্কার ইনসাইড এজ। মিঠুনের ১৪০ বলে ৭ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৬৩ রানের লড়াকু ইনিংসটার সমাপ্তি সেখানেই। এরপর আর এগোতে পারেনি বাংলাদেশ। মোহাম্মদ আব্বাসের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হন আবু জায়েদ। শাহীন শাহর বলে এক রান নিতে চেয়েছিলেন জায়েদ, কিন্তু সঙ্গী এবাদত হোসেন না করে দেন। ক্রিজে ফিরে যান জায়েদ, কিন্তু বোকার মতো ব্যাটটা রাখেননি ক্রিজের দাগে। আব্বাসের থ্রোতে স্ট্যাম্প ভাঙলে শেষ উইকেটটির পতন হয় বাংলাদেশের। পাকিস্তানের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল শাহীন শাহ আফ্রিদি। ৫৩ রানে তিনি নিয়েছেন ৪টি উইকেট। ২টি করে উইকেট মোহাম্মদ আব্বাস আর হারিস সোহেলের। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৮ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/39kkcVc
February 08, 2020 at 03:54AM
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ...
তিন দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্টের সূচি প্রকাশ
07 Oct 20200টিঢাকা, ০৭ অক্টোবর- শ্রীলংকা সফর না হওয়ায় ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। দেশের মূল ক্...আরও পড়ুন »
বার্তামেউয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট!
07 Oct 20200টিবার্সেলোনার বোর্ড নির্বাচন আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ওই সময়ই ঠিক হওয়ার কথা জোসেপ মারিও বার্তা...আরও পড়ুন »
বেতন কাটা নিয়ে বার্সার আলোচনা শুরু
07 Oct 20200টিকরোনার কারণে গত মার্চ থেকে কমাস ফুটবল বন্ধ ছিল। এ সময় বড় ক্লাবসহ বিশ্বের অধিকাংশ ক্লাবই ফুটবলারদের ব...আরও পড়ুন »
অস্ট্রেলিয়া-ভারত গোলাপি বলের টেস্ট চূড়ান্ত
07 Oct 20200টিক্যানবেরা, ০৭ অক্টোবর- এ বছরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চার টেস্টের সিরিজ দিবারাত্রির ম্যাচ দিয়...আরও পড়ুন »
নারীর প্রতি মনোভাব বদলের ডাক মাশরাফীর
07 Oct 20200টিঢাকা, ৭ অক্টোবর- উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে নারীর প্রতি সহিংসতার হার। সিলেটে এমসি কলেজসহ নোয়াখালীর বেগমগঞ্...আরও পড়ুন »
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.