ঢাকা, ২৩ ফেব্রুয়ারি - যদিও জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন সেঞ্চুরি করেছেন। তারপরও তিনি যেহেতু স্বাগতিক দলের বোলার, তাই দিন শেষে যত কথা নাঈম হাসানকে নিয়েই। দিন শেষে চট্টগ্রামের এই ১৯ বছরের অফস্পিনারই বাংলাদেশের সফলতম বোলার। পকেটে ৪টি উইকেট পুরে নিয়েছেন। প্রথম দিন শেষে তার বোলিং ফিগার ৩৬-৮-৬৮-৪। নাঈমের চার শিকারের চার নম্বরজন হলেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক আরভিন। দিনের খেলা শেষ হবার কয়েক মুহূর্ত আগে ৮৯ নম্বর ওভারেই সেঞ্চুরিয়ান ক্রেইগ আরভিনকে ফিরিয়ে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটির পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশকে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরিয়েছেন নাঈম। তার লেগ মিডল স্ট্যাম্পে পিচ করা ডেলিভারিকে ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাটে আনতে ব্যর্থ হন জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। বল পিছনের পায়ে লেগে সোজা উইকেটে গিয়ে আঘাত হানে। যিনি ওয়ানডাউনে নেমে একদিক আগলে রাখার পাশাপাশি জিম্বাবুয়ের রানের চাকা সচল রাখার কাজটি করে যাচ্ছিলেন গভীর ধৈর্য্য, মনোযোগ আর মনোসংযোগের সাথে। সেই আরভিনকে আউট করার অর্থ জিম্বাবুয়েকে পিছনের পায়ে ঠেলে সামনে এগিয়ে আসা। তাই আজ শনিবার প্রথম দিন খেলা শেষে নাঈম হাসানের বোলিংয়েরই যাবতীয় প্রশংসা। কিন্তু অনেকের হয়তো জানাই নেই যে, আজ ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার শেরেবাংলায় বাংলাদেশের তরুণ অফস্পিনার নাঈম হাসান এক অন্যরকম কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। যা তার ফিটনেস লেভেল আর বোলিং সামর্থ্যের বড় প্রতীক হয়ে আছে। জিম্বাবুয়ের পতন ঘটা ৬ উইকেটের চারটি তিনি একাই নিয়েছেন। প্রতিপক্ষ দলের টপ স্কোরার আর সেঞ্চুরিয়ানকে দিনের খেলা শেষ হওয়ার মিরিট চারেক আগে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তবে আজ অন্যরকম এক কৃতীত্ব দেখিয়েছেন নাঈম। তা হলো, একটানা ৩২ ওভার বোলিং করা। হ্যাঁ, সারা দিনে ৩৬ ওভার বল করলেও প্রথম স্পেলে একনাগাড়ে ৩২ ওভার বোলিং করেছেন নাঈম হাসান। সেই সাত সকালে প্রথম ঘন্টা পূর্ণ হবার আগে ১১ নম্বর ওভারে বোলিং শুরু করে প্রায় দিনের এক ঘণ্টা আগ পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ৪ ঘণ্টায় টানা ৩২ ওভার বোলিং করার এক নজির স্থাপন করেছে চট্টগ্রামের এ তরুণ। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে কোন বোলার একদিনে একটানা ৩২ ওভার বোলিং করেছেন- এমন নজির খুব কম। আদৌ আছে কি না, তা নিয়েও আছে সংশয়। আজ দিনের খেলা শেষে শেরেবাংলার প্রেস কনফারেন্স হলেও উঠল সে প্রশ্ন। তবে এটাই টেস্টের এক দিনের বাংলাদেশের কোন বোলারের সবচেয়ে লম্বা স্পেল কি না, তা নিশ্চিত করার সত্যিকার ক্ষেত্র নেই। আর থাকলেও হয়তো শুরুর দিকে এনামুল হক মনি, মোহাম্মদ রফিক আর এনামুল হক জুনিয়র- ওই তিন বাঁ-হাতি স্পিনারের কারো থাকলেও থাকতে পারে। তবে নিকট অতীতে সাকিব-তাইজুল আর মিরাজের কেউ ৪ ঘন্টায় ৩২ ওভার একটানা বোলিং করেছেন এমন নজির নেই। একজন স্পিনার একটানা অনেক্ষণ বোলিং করতেই পারেন। তবে আজ নাঈম যেটা করেছেন বা করে দেখিয়েছেন, সেটা খুব কমই দেখা যায়। নাঈম দেখিয়েছেন উইকেট না পেলেও লম্বা স্পেল করা যায়। নিজের ১৯ ওভার পর্যন্ত উইকেট পাননি (১৯-৫-৩৩-০) এরপর ২০ নম্বর ওভারে গিয়ে প্রথম উইকেট পেলেন। এর মধ্যে তার বলে দুটি ক্যাচও ড্রপ হয়। দুটিই জিম্বাবুয়ান ওপেনার প্রিন্স মাসভাউরের। প্রথমবার স্লিপে তার ক্যাচ ফেলে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পরেরবার নিজের ১৬ নম্বর ওভারে সেই রিটার্ন ক্যাচ ড্রপ করেন নাঈম নিজেই। বয়স যত কমই হোক আর ফিটনেস লেভেল যেমনই থাকুক- এত লম্বা স্পেলে বল করার পর বাড়তি ক্লান্তি ও অবসাদ গ্রাস করার কথা; কিন্তু খেলা শেষে প্রেস কনফারেন্সে কথা বলতে আসা নাঈমের হাটা চলা, কথা বলা ও শরীরি অভিব্যক্তি দেখে মোটেই তা মনে হলো না। প্রশ্ন উঠল, টানা ৩২ ওভারের স্পেল করা কঠিন, কাজটা কেমন ছিল? স্বল্পভাষী নাঈমের ছোট্ট কিন্তু আত্মবিশ্বাসী জবাব, অভ্যাসটা আমার জাতীয় লিগ থেকেই আছে। ওখানে আমি লম্বা স্পেল বোলিং করেছি। লম্বা স্পেলে ধৈর্য্য ধরে এক জায়গায় বোলিং করলে সাফল্য পাওয়া যায়। তা যে পাওয়া যায়, তার প্রমাণ শেষ পর্যন্ত ৩৬ ওভারে ৪ উইকেট পেলেও ১৯ ওভার পর্যন্ত ছিলেন উইকেটশূন্য। এরমধ্যে দুদুটি ক্যাচও ফেলেছেন ফিল্ডাররা। ২০ ওভারে প্রথম উইকেট পাওয়ার পরের ১৬ ওভারে আরও তিন উইকেট দখল। এই একটানা সুনিয়ন্ত্রিত আর সমীহ জাগানো বোলিং করার গুপ্ত রহস্য কি? জানতে চাইলে নাইম জানান, কোন বিশেষ কিছু ছিল না। আমার পরিকল্পনা ছিল শুধু এক জায়গায় বোলিং করা। বিসিএলের শেষ দুই ম্যাচে চার ইনিংসে (৮+৬+৫+২) = ২১ উইকেট শিকার করেছেন। সেটা জাতীয় দলের হয়ে ভাল করায় বাড়তি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে- এমনটা জানিয়ে নাঈম বলেন, ওখানে ২১ উইকেট পেয়েছি। ওখানে অনেক বোলিংকরেছি। ওই আত্মবিশ্বাস কাজে লেগেছে। কারন অনুশীলন করার চেয়ে ম্যাচের মধ্যে থাকলে সেটা ভালো হয়। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৩ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HOKd3i
February 23, 2020 at 02:12AM
23 Feb 2020

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top