ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি - আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। রক্ত দিয়ে ভাষার অধিকার রক্ষার ইতিহাস কেবল বাংলাদেশেরই রয়েছে। বিষয়টা অজানা থাকার কথা নয় বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর। ভাষা দিবস বলে আবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বাংলা বলে বসেননি। তবে, তার অভিব্যক্তি, তার শরীরের নড়া-চড়া এবং উত্তর দেয়া দেখে বোঝা গেলো, বাংলা ভাষাটাকে বেশ ভালোভাবেই আয়ত্ব করে নিচ্ছেন এই প্রোটিয়া কোচ। বাংলাদেশ ক্রিকেটে বরাবরই স্থানীয় কোচদের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয় বিদেশি কোচদের। প্রতিবার নতুন কোচের জন্য খোঁজ শুরু হলে এগিয়ে রাখা হয় বিদেশিদেরকেই। আর ভিনদেশি কোচদের আনার পর সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হয় ভাষাগত কারণে। প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায়, বিদেশি কোচদের ভাষা বুঝতে পারেন না দেশের খেলোয়াড়রা। সবশেষ বিপিএলে সিলেট থান্ডার্সের হয়ে কোচিং করাতে এসে দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ হার্শেল গিবস রাখঢাক না করে সংবাদ মাধ্যমেই বলেছিলেন, ইংরেজি বুঝতে পারে না বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। একই কথা শোনা গিয়েছিল সাবেক পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের ক্ষেত্রেও। সেদিক থেকে ব্যতিক্রমই বলতে হবে টাইগারদের বর্তমান হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোকে। তার ব্যাপারে এখনও ভাষাগত সমস্যার কথা শোনা যায়নি। বরং তিনি নিজেই বাংলা ভাষা আয়ত্ত্ব করার দিকে রয়েছেন বিশেষ মনোযোগী। দায়িত্ব পাওয়ার পরপর বলেছিলেন, কিছুদিন এখানে (বাংলাদেশ) থাকলে বাংলাটাও শিখে যাবো। সে কথাটি যে নিছক মজা ছিলো না, তা বোঝা গেল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের আগে করা সংবাদ সম্মেলনে। যেখানে নিজের প্রশ্নোত্তর পর্ব পুরোটা ইংরেজিতে করলেও, ডোমিঙ্গো যেন বুঝতে পারছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হককে বাংলায় করা প্রতিটি প্রশ্নোত্তর। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে কোচের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বিসিবি সভাপতিকে দলের পরিকল্পনা বা একাদশ সম্পর্কে জানানো হয়েছে কি না। কেননা সম্প্রতি বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ম্যাচের আগেরদিন যে পরিকল্পনা করা হয় তা পুরোপুরি বদলে যায় ম্যাচে। তাই এ বিষয়ে এখন থেকে নজর রাখবেন তিনি। সে বিষয়টিই মনে করিয়ে ডোমিঙ্গোর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, দলের সিদ্ধান্তগুলো বোর্ডপ্রধানকে জানানো হয়েছে কি না! সঙ্গতকারণেই বিতর্ক এড়িয়ে কেতাদুরস্ত পেশাদারি উত্তর দেন হেড কোচ। যার সারমর্ম ছিলো, এ বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই বোর্ডপ্রধানের কাছ থেকে। ডোমিঙ্গোর কাছ থেকে যুতসই উত্তর না পাওয়ায়, পরে একই প্রশ্ন রাখা হয় পাশে থাকা অধিনায়ক মুমিনুল হকের কাছেও। এবারও উত্তর মেলে একই, কোচের মতো অধিনায়কও জানান এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি তাদের কিছু বলেননি। মুমিনুলের উত্তর শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখ খোলেন ডোমিঙ্গো। তিনি যেন বুঝতে পেরেছিলেন বাংলায় করা প্রশ্নটি। তাই সেই প্রশ্নকারী সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে বলেন, উনি এখন বোর্ড প্রেসিডেন্টের ব্যাপারে প্রশ্ন করেছেন না? সেই একই মানুষ যিনি প্রথম প্রশ্নটাও করেছিলেন (হা হা হা হা)। ইংরেজিতে দিলেও ডোমিঙ্গোর এমন আকস্মিক মন্তব্যে হাসির রোল ওঠে সংবাদ সম্মেলন কক্ষে। একইসঙ্গে বিস্ময় জাগে, তবে কি বাংলা বুঝতে শুরু করেছেন টাইগারদের দক্ষিণ আফ্রিকান হেড কোচ? এ সন্দেহ আরও প্রবল হয়, মুমিনুলের প্রশ্নোত্তর পর্বের পুরোটা সময় ডোমিঙ্গোকে মনোযোগী শ্রোতার ন্যায় সব শুনতে দেখে। টাইগার অধিনায়কের প্রতিটি উত্তরের বিপরীতে যেমন হওয়া উচিত অভিব্যক্তি, ঠিক তেমনই দেখা যায় ডোমিঙ্গোর চোখেমুখে। সত্যিই বাংলা বুঝতে শিখেছেন কি না তা শুধুমাত্র রাসেল ডোমিঙ্গো নিজেই বলতে পারবেন। তবে বিদেশি হেডকোচ সত্যিই বাংলা বুঝতে বা বলতে শিখলে আখেরে লাভটা হবে দেশের ক্রিকেটারদেরই। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২২ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Pb53Ow
February 22, 2020 at 02:20AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন