ঢাকা, ০৪ ফেব্রুয়ারি- হোয়াংহো নদী আর করোনাভাইরাস যেমন চীনের দুঃখ, তেমন বাংলাদেশের ফুটবলের দুঃখ স্ট্রাইকার। একজন ভালো এবং দক্ষ স্ট্রাইকার না থাকায় বাংলাদেশ যে কত আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয়বঞ্চিত হয়েছে তা রীতিমতো গবেষণার বিষয়। সর্বশেষ উদাহরণ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবলের সেমিফাইনাল থেকে বিদায়। বুরুন্ডির বিরুদ্ধে ভুরিভুরি গোলের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে না পারায় টুর্নামেন্টের ফাইনালে দর্শক হয়ে ছিল বাংলাদেশ। প্রতিটি ম্যাচ কিংবা প্রতিটি আন্তর্জাতিক আসর শেষে আলোচনায় আসে বাংলাদেশের ফুটবলারদের প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলার বিষয়টি। খালি পোস্টে বল বাইরে পাঠিয়ে কত না সুযোগ মিস করেছেন বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা। অথচ গত দুই বছর বাংলাদেশ মাঠে ভালো ফুটবল খেলেছেন। কিন্তু সবকিছু মাটি হয়ে যাচ্ছে গোল করতে না পারার ব্যর্থতায়। তো এর সমাধান কী? জাতীয় দলের প্রধান কোচ জেমি ডে নিজেও যেন এই সমস্যা সমাধানের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী তিনি বাফুফেকে পরামর্শ দিতে দিতে হয়রান। কিন্তু বাফুফে চলছে সেই আগের মতোই। বিষয়টা উঠলো, সাম্প্রতি বাফুফের প্রফেশনাল লিগ কমিটির বিদেশিদের খেলার সুযোগ বাড়ানোর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে আলেচনার সময়। আপনি কি জানেন যে, এবার এক ম্যাচে ৫ বিদেশিরই খেলার সুযোগ থাকছে? একাদশে থাকবে সর্বোচ্চ চারজন বিদেশি। বিদেশির বদলি বিদেশিও নামানো যাবে। তার মানে একটি ক্লাব চাইলে প্রতি ম্যাচে ৫ বিদেশিকে খেলাতে পারবে। হ্যাঁ। আমি জেনেছি বাফুফের নতুন এই সিদ্ধান্তের কথা। আমি নিশ্চিত না এর মধ্যে দিয়ে জাতীয় দল এবং স্থানীয় ফুটবলারদের কী লাভ হবে। এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশি ফুটবলারদের খেলা আরো সীমাবদ্ধ করা হলো। সিদ্ধান্তটাকে আমার কাছে অদ্ভূতই মনে হচ্ছে- বলছিলেন ইংলিশ কোচ জেমি ডে। আপনি সব সময় বিদেশি কোটা কমানোর কথা বলে আসছেন। দেশেও এমন দাবি অনেক দিন ধরে। কিন্তু বাফুফে হাটলো উল্টো পথে। নিশ্চয়ই এই সিদ্ধান্তে আপনি হতাশ হয়েছেন? জেমি ডের জবাব- আমি বলবো বাংলাদেশি ফুটবলারদের জন্য শুধু দুঃখই অনুভব করছি। তবে বাফুফে যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করেছে। তাদের দেয়া সিদ্ধান্তের মধ্যে থেকেই আমাকে কাজ করতে হবে। দেশের স্ট্রাইকার সংকট দূরীকরণে আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে কি?- জানতে চাইলে লন্ডন থেকে জেমি ডে বলেন, আসলে প্রথম হলো খেলোয়াড়দের নিজেদের পজিশনে খেলা প্রয়োজন। যদি তারা সেটা না পারে তাহলে পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে না। আমি শুধু তাদের সহায়তা করতে পারি যখন তারা জাতীয় দলের ক্যাম্পে থাকে। কিন্তু এটা যথেষ্ট নয়। এ বিষয়টি নিয়ে বাফুফের সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা বলার পরও কোনো কাজে আসছে না উল্লেখ করে জেমি বলেছেন, তারা নিয়ন্ত্রক। তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটা আমাকে সম্মান করতেই হবে। গত ৩০ বছর ধরে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে এটা চলে আসছে। যতক্ষণ আমরা এটা পরিবর্তন করতে না পারবো এ সমস্যা চলতেই থাকবে। জামাল ভূঁইয়ার মতো আরও প্রবাসী ফুটবলার জাতীয় দলে যোগ করার পরিকল্পনাও আছে জেমি ডের। তিনি কিছু খেলোয়াড়ের সন্ধান পেয়েছিলেনও। কিন্তু তারা বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলতে আগ্রহী নন বলে জানিয়েছেন এ ইংলিশ কোচ, আমরা সবসময়ই এ ধরনের খেলোয়াড় খুঁজি। যাদের পাওয়া যায় তারা বাংলাদেশে খেলতে চান না। কারণ, যেখানে তারা থাকেন সেখানে ফুটবল খেললে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পায়। তাহলে কি বাংলাদেশের এই স্ট্রাইকিং সমস্যা সহসা দূর হবে না? জেমি ডে বলেন, খুব সহসা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। আগে ঘরোয়া ফুটবলের কাঠামো বদলাতে হবে। বাফুফেকে আমি সব সময় বলি, প্রয়োজনে আরো বলবো। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক তো তারাই। এখানে প্রতিভাবান কোনো স্ট্রাইকার দেখেছেন যারা আগামীর জন্য তৈরি হতে পারবেন? না। বর্তমানের খেলোয়াড়দের মধ্যেই যে কয়জন আছেন। এর বাইরে তেমন নেই। আমি একাডেমির ইংরেজ কোচদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা বলি। সেখানে যারা আছে তারা হয়তো ভালো ফুটবলার হবে। কিন্তু তারা যখন ক্লাবে খেলবে তখন কি ঠিক পজিশনে সুযোগ পাবে? এ জন্য যুবাদের লিগ নিয়মিত প্রয়োজন। সেখানে প্রকৃত পজিশনে খেলার সুযোগ পেলে তাদের অভিজ্ঞতাও বাড়বে- বলেছেন জেমি ডে। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/০৪ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3bbJFSw
February 04, 2020 at 09:08AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন