ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি - কোন হিসেব নিকেশেই সাকিব আল হাসানের সাথে তার তুলনা চলে না। নাম-ডাক আর তারকাখ্যাতিকে বিবেচনায় আনলে সাকিব আল হাসানের চেয়ে অনেক পিছনে তাইজুল ইসলাম। তারপরও টেস্টে সাকিবের ( ৫৬ টেস্টে ২১০) পরই বাংলাদেশের বোলিংয়ের সবচেয়ে বড় নির্ভরতা তাইজুল। যদিও টেস্টে সাকিবের চেয়ে ১০২ উইকেট ( ২৮ টেস্টে ১০৮ ) কম, তারপরও সাকিবের অর্ধেক ম্যাচ খেলা তাইজুল ইসলাম এ মুহূর্তে দীর্ঘ পরিসরের ফরম্যাটে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের বড় শক্তি। কার্যকর অস্ত্র। এ মুহূর্তে টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীও এ বাঁ-হাতি স্পিনার। একটা বড় পার্থক্য অবশ্য আছে। সাকিবের বোলিং কার্যকারিতা, দক্ষতা প্রমাণিত এবং বড়-ছোট সব দলের বিপক্ষেই চ্যাম্পিয়ন সাকিবের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংটাও দারুণ কার্যকর। আফগানিস্তান ছাড়া (৩/৫৮) বাকি ৯ টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষেই সাকিবের দুর্দান্ত বোলিং ফিগার রয়েছে। যেমন ভারত (৫/৬২), অস্ট্রেলিয়া (৫/৬৮), ইংল্যান্ড (৫/৮৫), দক্ষিণ আফ্রিকা (৬/৯৯), নিউজিল্যান্ড (৭/৩৬), পাকিস্তান (৬/৮২), ওয়েস্ট ইন্ডিজ (৬/৩৩), কিংবা শ্রীলঙ্কা (৫/৭০) ও জিম্বাবুয়ে (৬/৫৯)- সব দলের বিপক্ষেই বাঁ-হাতি স্পিনার সাকিবের অন্তত ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট শিকারের দুর্দান্ত কৃতিত্ব রয়েছে। তাই ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির মত টেস্টেও বাংলাদেশের সফলতম বোলারের নাম সাকিব। সব দলের বড় আতঙ্ক। সেখানে তাইজুল ইসলাম অনেকটা পথ পিছনে। তার সাফল্য গড়পড়তা কমজোরি দলের বিপক্ষেই বেশি। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, টেস্টে তাইজুলের ১০৮ উইকেটের প্রায় তিন ভাগের একভাগ (৫ টেস্টে ৩৫টি) উইকেট এ মুহূর্তে ক্রিকেটের সবচেয়ে দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেটাই শেষ নয়। টেস্টে ৭ বার ৫ বা তার বেশি উইকেট শিকারের রেকর্ড আছে তাইজুলের। তার ৪বার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এছাড়া এক ইনিংসে সেরা বোলিং (১৬.৫-৭-৩৯-৮) ও ম্যাচ সেরা বোলিং ফিগারটিও (১১/১৭০) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এছাড়া টেস্টের তুলনামূলক কম শক্তির দলগুলোর সাথেই তার উইকেট বেশি। তার দ্বিতীয় সর্বাধিক ২১ উইকেট (৫ টেস্টে) ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিক্ষে। আর শ্রীলঙ্কা (৩ টেস্টে ১৪ উইকেট) এবং পাকিস্তানের (৩ টেস্টে ১২) তাইজুলের সাফল্য বেশি। সে তুলনায় ভারত (৪ টেস্টে ৪) অস্ট্রেলিয়া ( ২ টেস্টে ৬) , ইংল্যান্ড ( ২ টেস্টে ৭) , নিউজিল্যান্ড ( ১ টেস্টে ২) , দক্ষিন আফ্রিকা ( ২ টেস্টে ১ উইকেট) তাইজুলের কার্যকরিতা বেশ কম। এই কারণেই বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুলকে ভাবা হয় দূর্বলের বিপক্ষে সবল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টের আগে তাই ঘুরেফিরে তার নামটাই উচ্চারিত হয় বেশি; কিন্তু আজ মঙ্গলবার প্র্যাকটিসে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে ওই প্রশ্ন শুনে যেন চটে গেলেন তাইজুল। আজ দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই শেরে বাংলার গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন তাইজুল, আচ্ছা জিম্বাবুয়ের সাথে যখন খেলা হয়, আপনার নামটাই বেশি আলোচিত হয়। কেমন লাগে? জবাব দিতে গিয়ে খানিকটা চটে গেলেন এ বাঁ-হাতি স্পিনার। শুরুই করলেন এইভাবে, এই কথাটা ভাল লাগল না। কারণ জিম্বাবুয়ের সাথেই যে আমি উইকেট পেয়েছি তাতো নয়। আগেই বলেছি, আপনি যাদের সাথেই খেলেন, ভাল জায়গায় বল না করলে সম্ভব না। তাছাড়া ওরা যে একেবারে খারাপ দল, তাতো না। ভাল জায়গায় বল না করলে মার খেতে হবে। আর যখন ভাল জায়গায় বল করব উইকেটের সুযোগ আসবে। সেটা দেশের জন্য ভাল। কিন্তু ইতিহাস ও পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা। দেশের বাইরে বেশ কয়েকটি টেস্টে তিনি তথা স্পিনাররা কিছু করতে পারেননি। তাদের পারফরম্যান্স ভাল ছিল না। সে জায়গায় দেশে একটা টেস্ট হচ্ছে। সেটা কমফোর্ট জোনে ফিরে আসা কি না? ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের মত কমজোরি দলের সাথে খেলা কি অন্যরকম ও বাড়তি স্বস্তি? এবার অবশ্য তাইজুল যেন সানন্দে মেনে নিলেন, হ্যাঁ, আসলে দেশে যখন খেলা হয় নিজের কাছে একটু অন্যরকম লাগে। এটা আপনারা জানেন যে ভাল করবো বা ভাল করার সেই অনুভুতিটা থাকে। আমার মনে হয় ভাল করাটাই স্বাভাবিক। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৯ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/38Rm7kg
February 19, 2020 at 02:00AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top