ঢাকা, ২৬ ফেব্রুয়ারি - জিম্বাবুয়েকে হারানো এখন আর সে অর্থে কৃতিত্ব নয়। এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেখান থেকে ঘরের মাঠে এমন দুর্বল প্রতিপক্ষকে হারানো আসলেই সাফল্য হিসেবে সেভাবে বিবেচিত হবে না। এটাই স্বাভাবিক। ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে যে, ১৪ মাস আগে এই জিম্বাবুয়ের সাথে শেরে বাংলায় শেষ টেস্টেও টাইগাররাই জিতেছিল এবং সেটাও ছোট খাট ব্যবধানে নয়, ২১৮ রানের বিশাল ব্যবধানে। এবার যেমন সাকিব আল হাসান নেই। ঐ ম্যাচে সাকিব একা নন, তামিম ইকবালও ছিলেন না। কাজেই পরপর দুই ম্যাচের দুটিতে বড় জয় বলে দিচ্ছে, দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়েকে হারাতে এখন আর সাকিব-তামিমের দরকার পড়ে না। ভাঙাচোরা দল নিয়েও জিম্বাবুয়েবধ সম্ভব। কাজেই আজ (মঙ্গলবার) যে ইনিংস ও ১০৬ রানের জয় ধরা দিল, সেটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। তাই ভক্ত, সমর্থকদের মাঝে এ জয় নিয়ে তেমন কোন প্রতিক্রিয়াও নেই। হৈ চৈ সাড়া শব্দ খুব কম। কোনোরকম উচ্ছ্বাস-উল্লাসও নেই। তারপরও জয় জয়ই। সেটা আবার টেস্ট জয়। তাও টানা হারের বৃত্তে আটকে থাকার পর। পরিসংখ্যান জানিয়ে দিচ্ছে, এ ম্যাচের আগে টাইগাররা ছিল হারের বৃত্তে আটকা। শুধু হার নয়, ইনিংস হার। গত বছর নভেম্বরে ইন্দোরে ভারতের কাছে ইনিংস ও ১৩০ রানে হার দিয়ে শুরু। তারপর কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ইনিংস ও ৪৬ রানে হার। আর এ বছর ফেবব্রুয়ারির প্রথম ভাগে রাওয়ালপিন্ডিতে সর্বশেষ টেস্টে পাকিস্তানের কাছে ইনিংস ও ৪৪ রানের পরাজয়। এই তিন টেস্টে শুধু টিম বাংলাদেশই নয়, অধিনায়ক মুুমিনুল হকও ব্যর্থতার ঘানি টেনেছেন। ঐ তিন টেস্টের ৬ ইনিংসে বাঁহাতি মুুমিনুলের রান ছিল, ইন্দোরে ৩৭ ও ৭, ইডেন গার্ডেনে ০ ও ০, রাওয়ালপিন্ডিতে ৩০ ও ৪১। মোদ্দা কথা, একটা অস্ফুট চাপ ছিল। দলের ওপর চাপ ছিল একরকম, আর অধিনায়ক মুমিনুল হকের ওপরও একটা অন্যরকম চাপ ছিল। অবশেষে সেই চাপ কাটিয়ে তার ব্যাটে রান। রানখরা কাটিয়ে ১৩২ রানের দারুণ এক ইনিংস উপহার, যেন দায়মুক্ত হওয়া। সেইসঙ্গে অধিনায়ক হিসেবে দুর্দান্ত ও প্রথম জয়। এমন সাফল্যের পর অধিনায়ক মুমিনুলের ভেতরে একটা অন্যরকম স্বস্তি আসা স্বাভাবিক। কিন্তু টিম বাংলাদেশ অধিনায়ক স্বস্তিতে নেই। জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রশ্ন শুনলেন-আপনি কি স্বস্তিতে? মুমিনুলের জবাব, এটা আসলে স্বস্তি নয়। তবে হ্যাঁ, একটু তো অবদান রাখতে পারলে ভালোই লাগে। আমার কাছে মনে হয় অধিনায়ক হিসেবে এবং দলের একজন সদস্য হিসেবে সবসময় সবার কাছে এটা কাম্য, যদি আপনি কিছু করতে পারেন। আমার মনে হয় আমি দলের জন্য কিছু অবদান রাখতে পেরেছি এবং সেটা করতে পারলে অনেক ভালো লাগে। আমার কাছে মনে হয় ছোট ছোট অবদান রাখাটাও অনেক বেশি কিছু। আমি তৃপ্ত। সন্তুষ্ট। সরাসরি এমন কথা না বললেও হাবভাবে মুমিনুল বুঝিয়ে দিয়েছেন, এ টেস্টের টিম পারফরম্যান্সে তিনি সন্তুষ্ট। মুমিনুলের অনুভব, এই টেস্টে অন্তত একটি বিষয় আছে যা সন্তুষ্টির। সেটা হলো-ব্যাটসম্যান, পেসার ও স্পিনারদের সবাই সময়ের দাবি মিটিয়েছেন। যখন যেটা দরকার, তা করে দেখিয়েছেন। যখন যেটা হওয়া উচিত, সেটাও হয়েছে। আসল কথা হলো দলের যা দরকার, সবাই সেভাবে পারফর্ম করেছে। এর বাইরে বাংলাদেশ অধিনায়কের আরও একটি সন্তুষ্টির জায়গা আছে। তা হলো, পুরোপুুরি স্পিন সহায় পিচ তৈরি না করেও শেষ হাসি হাসা। বলার অপেক্ষা রাখে না, অতীতে সেই ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলয়াকে হারানো আর এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও স্পিন ফ্রেন্ডলি পিচেই জিতেছে টাইগাররা। যেখানে প্রথম না হলেও দ্বিতীয় দিন থেকেই বল লাটিমের মত ঘুরেছে। আর তাতেই ইংলিশ ও অজি বধ হয়েছিল সম্ভব। এবার অমন পিচ লাগেনি। মোটামুটি ব্যাটিং সহায় পিচেই খেলা হয়েছে। সেখানে বল তেমন ঘোরেনি। স্পিনারদের জারি জুুরি দেখা যায়নি। বরং পেসাররাও ভালো বল করেছে। আর অমন উইকেটে খেলেই জিম্বাবুয়েকে ঘায়েল ও পর্যুদস্ত করেছে মুমিনুলের দল। আর তাই ভিতরে খানিক ভালো লাগা। তার ভাষায়, আমি স্বপ্ন দেখি বিদেশেও ভালো ক্রিকেট খেলবো। সেই হিসেবে চিন্তা করলে আমাকে পেস বোলারদের বোলিং করাতে হবে, তারা বোলিং না করলে শিখবে না। আর এই কারণে হয়তো উইকেটটা সেভাবে তৈরি করা। এটা আসলে চ্যালেঞ্জ না। আমরা তৈরি ছিলাম যে এমন কিছু করতে পারবো। আল্লাহ্র কাছে শুকরিয়া যে আমরা জিনিসটা বেশ ভালোভাবে হ্যান্ডেল করতে পেরেছি। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৬ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/38ZLlxh
February 26, 2020 at 03:06AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top