ঢাকা, ৩০ মার্চ - প্রাণনাশি করোনার ভয়ে তটস্ত সবাই। শুরুতে অনুভব করতে বিলম্ব হলেও এখন সবাই প্রায় নিজের ঘরে থাকাকেই সর্বোত্তম ও নিরাপদ ভাবছেন। একদম দিন এনে, দিন খাওয়া- মানুষগুলো জীবন জীবিকার কারণে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েও বাইরে বের হচ্ছেন। এছাড়া বেশিরভাগই এখন করোনার ভয়ে, আতঙ্কে ও শঙ্কায় বাইরে বের হওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। নিজ বাড়িতে কি করছেন? কিভাবে কাটছে সময়? গতকাল রোববার রাতে তা জানিয়েছেন ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশের নতুন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আজ সোমবার মুখোমুখি হয়েছিলেন টাইগারদের টেস্ট ক্যাপ্টেন মুমিনুল হক। করোনায় কি করছেন? ছোট্ট প্রশ্ন ছুড়তেই মুমিনুলের জবাব, কি আর করবো, বলুন? আর সবার মত আমিও করেনা আতঙ্কে ভুগছি। বাসাতেই আছি। কোথাও যেহেতু বের হওয়ার উপায় নেই, চারিদিক প্রায় জনমানবশূন্য, একদম খুব জরুরি দরকার ছাড়া যেখানে কেউ বাইরে বের হন না। বের হওয়া নিরাপদও নয়। সবাই প্রায় ঘরমুখো। সেখানে বাইরে গিয়ে পার্কে, রাস্তায় বা অন্য কোথাও দৌড়াদৌড়ি, হাঁটাহাঁটি করার উপায়ও নেই। মুমিনুল কোথায় আছেন, সেটাও জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, আমি বসুন্ধরার বাসাতেই অবস্থান করছি। যেহেতু বাসায়ই কাটছে সর্বক্ষণ, তাই বাইরে কোথাও গিয়ে রানিং করার সুযোগটাও পাচ্ছি না। কয়েকদিন ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করেছি। কিন্তু ভেবে দেখলাম, শুধু খালি হাতে এক্সারসাইজ করলে চলবে না। অন্তত জিমওয়ার্কটা করা দরকার। তাই এখন ঘরেই ওয়েট ট্রেনিং করি। আরও কিছু জিমওয়ার্কও করি। জিমের কিছু সামগ্রী কিনে নিয়েছি; কিন্তু জিমের কাজ গুলো করে ফেলছি। বাসায় জিমের কিছু সামগ্রী কিনে ফেলছি। সেগুলোতে জিমওয়ার্ক করি। এখন বাসায় বসেই সে ট্রেনিংগুলো করি। আর খাই-দাই, ঘুমাই- এইতো চলে যাচ্ছে সময়। আর সবার মত তার ভিতরেও করোনা নিয়ে রাজ্যের চিন্তা, প্রতিনিয়ত প্রাণহানি ঘটছে অনেক দেশে। আমাদের দেশে সে তুলনায় কম হলেও আমরাও নিরাপদ না। করোনা আতঙ্কে সবাই উদ্বিগ্ন। করোনামুক্ত বিশ্ব ও বাংলাদেশ দেখতে উন্মুখ মুমিনুল, কবে যে এ করোনা ভাইরাসের প্রাণনাশি তান্ডব শেষ হবে? করোনা নিয়ে তিনি খুব সজাগ। তৎপর। সতর্ক ও সাবধানি। সেই সাথে সৃষ্টিকর্তার ওপর পূর্ণ বিশ্বাসী, আস্থাশীল এবং মহান আল্লাহর দয়া ও রহমতের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। করোনায় আর কি করবো বলুন? যা যা বলা হচ্ছে, সবাই যা করছেন আর যেগুলো বর্জন করার কথা বলছেন- আমিও সেভাবেই চলছি। তবে আমার কি মনে হয় জানেন? সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর উত্তম কাজ হলো, ঘর থেকে একদমই বের না হওয়া। আর শুনতে খারাপ লাগলেও চরম ও নির্মম সত্য হলো, বাইরে থেকে আসা কাউকে ঘরের ভিতরে ঢুকতে না দেয়া। তাহলেই অনেকটা নিরাপদ থাকা যাবে। এছাড়া বাসায় থাকলে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরপর হাত ভাল করে ধুয়ে ফেলাও একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মুমিনুলের স্থির বিশ্বাস, কেউ যদি এগুলো মেনে চলে, তাহলে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তার ভাষায়, আমার মনে হয় সতর্ক থাকা আর যা বললাম, বাসা থেকে বের না হয়ে আর কাউকে ঢুকতে না দিয়ে এবং বাকি সব আল্লাহর ওপর ছেড়ে দেন। যা বললাম এই দুই থেকে তিনটি দরকারি ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে সব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ওপর ছেড়ে দেয়া ছাড়া কিছু করারও নেই আমাদের। ২৭ জাতীয় ক্রিকেটার মিলে করোনা ফান্ডে অর্থ দান করেছেন। সবাই সেটাকে ভাল কাজ বলে প্রশংসার চোখে দেখেছেন। অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলেও অভিহিত করেছেন কেউ কেউ। সেখানে মুমিনুলও রেখেছেন কার্যকর অবদান। তিনি টেস্ট ছাড়া ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জাতীয় দলের বাইরে। তাই এবারের বোর্ডের বেতন কাঠামোয় শুধু লাল বলের ক্যাটাগরিতে রয়েছেন তিনি। নিজের পারিশ্রমিকের অর্ধেকটা দিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করোনা ফান্ডে। তবে জাতীয় ক্রিকেটারদের অর্থ দেয়া নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করতে চান না মুমিনুল। তাকে বলা হলো, এ সম্পর্কে কিছু বলুন? মুমিনুল বলেন, কি আর বলবো, আমার মনে হয় আমাদেরও একটা দায়িত্ব-কর্তব্য আছে। আমরা তাই করেছি। এটা নিয়ে আর কিইবা বলবো বলুন? তারচেয়ে আমি বোর্ডের প্রশংসা করতে চাই। বোর্ড একটি ভাল কাজ করছে। বিসিবির সাথে বাৎসরিক চুক্তি ও মাসিক বেতনের বাইরেও অনেক জুনিয়র ক্রিকেটার আছে। তাদের হাতে একদমই অর্থ ছিল না। তারা বেশিরভাগ কোন অগ্রিম পায়নি। একটি টাকাও হাতে না নিয়ে লিগ খেলতে শুরু করেছে এমন ক্রিকেটারের সংখ্যাও প্রচুর। পরক্ষণে মুমিনুল বলেন, করোনায় লিগ বন্ধ না হলে হয়ত তারা এতদিনের একটা ডাউন পেমেন্ট পেত; কিন্তু লিগ বন্ধ হওয়ায় তাদের অনেকেরই হাত খালি। আমি জানি ও চিনি অনেক প্লেয়ারকে, তাদের এখন খাওয়া-পরায়ও সমস্যা হচ্ছে। তাদের হাতে এককালীন কিছু টাকা অন্তত জমা পড়েবে। আমি বোর্ডের এ উদ্যোগকে স্বাগতঃ জানাই। খুব ভাল ও সময়োচিত কাজ হয়েছে সেটা। তাদের জন্য বোর্ড ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ৩০ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/39qDeZJ
March 30, 2020 at 02:06PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন