ঢাকা, ০৪ মার্চ- ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়কার নাম্বার ওয়ান নায়িকা শাবনূর।শেষ পর্যন্ত দাম্পত্য জীবন সুখের হলো না তার। বনিবনা হচ্ছে না-এমন কারণ দেখিয়ে অবসান হলো শাবনূরের সঙ্গে স্বামী অনিক মাহমুদ হৃদয়ের প্রায় আট বছরের যৌথ জীবন। জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি স্বামীকে তালাক দিয়েছেন শাবনূর। ডিভোর্স নোটিশে স্বামীর বিরুদ্ধে গুরুতর অনেক অভিযোগ এনেছেন ঢালিউডের নন্দিত এই অভিনেত্রী। ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিক মাহমুদ হৃদয়ের সঙ্গে আংটি বদল করেন শাবনূর। এরপর ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিয়ে করেন তারা। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আইজান নিহান নামে এক পুত্রসন্তানের মা হন শাবনূর। পুত্রকে নিয়ে তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। শারমীন নাহিদ নূপুর ওরফে শাবনূর স্বাক্ষরিত নোটিশটি তার অ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদের মাধ্যমে স্বামীকে পাঠিয়েছেন। বনিবনা হচ্ছে না-এমন কারণ দেখিয়ে গত ২৬ জানুয়ারি নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। কাওসার আহমেদ জানান, গত ২৬ জানুয়ারি স্বামী অনিককে তালাক দিয়েছেন শাবনূর। তালাকের নোটিশ অনিকের উত্তরা ও গাজীপুরের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। নোটিশে শাবনূর বিচ্ছেদের কারণ উল্লেখ করেছেন, আমার স্বামী অনিক মাহমুদ হৃদয় স্ত্রী এবং সন্তানের প্রতি যথাযথ যত্নশীল না এবং আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ করে না। সে মাদকাসক্ত। অনেকবার মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় এসে আমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমাদের ছেলের জন্মের পর থেকে সে আমার কাছ থেকে দূরে সরে থাকছে এবং অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে আলাদা বসবাস করছে। আরও উল্লেখ করেন, একজন মুসলিম স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী যে ব্যবহার করেন, অনিক সেটা করছেন না, উল্টো নানাভাবে আমাকে নির্যাতন করে। এসব কারণে আমার জীবনে অশান্তি নেমে এসেছে। চেষ্টা করেও এসব থেকে তাকে ফেরাতে পারিনি। বরং আমার সন্তান এবং আমার ওপর নির্যাতন আরও বাড়তে থাকে। যে কারণে মনে হলো, তার সঙ্গে আমার আর বসবাস করা সম্ভব নয় এবং আমি কখনো সুখী হতে পারবো না। তাই নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং সুন্দর জীবনের জন্য তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছেদ করতে চাই। মুসলিম আইন এবং শরিয়ত মোতাবেক আমি তাকে তালাক দিতে চাই। আজ থেকে সে আমার বৈধ স্বামী নয়, আমিও তার বৈধ স্ত্রী নই। শাবনূর বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। স্বামীকে তালাকের নোটিশ দেওয়ার বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার তার অস্ট্রেলিয়ার ফোন নম্বরে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সেখানে থাকা তাঁর ছোট বোন ঝুমুরের হোয়াটসঅ্যাপে শাবনূরের বক্তব্য জানতে চেয়ে বার্তা পাঠানো হয়। তিনি বার্তাটি দেখলেও কোনো উত্তর দেননি। বিষয়টি জানতে অনিকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে শুরুতে তিনি কল ধরেন। কিন্তু পরিচয় দেওয়ার পরই তিনি বলেন, আমি এখন ওয়াশরুমে। পরে কথা বলব। পরে অনেকবার সেই নম্বরে কল করা হলেও তিনি আর ফোন ধরেননি। উল্লেখ্য, বছর তিনেক আগেও মিডিয়ায় শাবনূর-অনিকের ছাড়াছাড়ির গুঞ্জন ওঠে। সে সময় অনিক মিডিয়াকে বলেছিলেন এমন কিছু হয়নি। তারা একসঙ্গেই আছেন, ভালো আছেন। কিন্তু অনিকের নতুন পাসপোর্টে এখন স্ত্রীর নামের জায়গায় আয়েশা আক্তারের নাম দেওয়া আছে। জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর পেছনে চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে অতি-অন্তরঙ্গতাকেও দায়ী করে সম্প্রতি আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে পিবিআই। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, সালমান শাহ্ খুন হননি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তার আত্মহত্যার পেছনে রয়েছে পাঁচ কারণ। কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শাবনূরের সঙ্গে অতি-অন্তরঙ্গতা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে শাবনূর দাবি করেন, তাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। একসময় সালমান শাহ-শাবনূর জুটি মানেই ছিল সুপারহিট সিনেমা। সালমান শাহের অকাল প্রয়াণের পর রিয়াজের সঙ্গে শাবনূরের জুটিও ছিল দারুণ জনপ্রিয় ও সফল। এছাড়া মান্না, ফেরদৌস, শাকিব খানের সঙ্গেও তার সফল সিনেমা রয়েছে। বেশ লম্বা বিরতির পর সম্প্রতি তার সিনেমায় ফেরার খবর শোনা যাচ্ছে। ১৯৭৯ সালের যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে শাবনূরের জন্ম। তার পারিবারিক নাম কাজী শারমিন নাহিদ নুপুর। পরে স্বনামধন্য নির্মাতা এবং তার মেনটর এহতেশাম তার নাম রাখেন শাবনূর। শাবনূর শব্দের অর্থ রাতের আলো। আর সত্যিই তিনি সিনেমাজগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়েই আলো ছড়িয়েছেন। আর/০৮:১৪/০৪ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2TBembZ
March 04, 2020 at 09:27AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন