বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ইতিমধ্যেই দুনিয়ার প্রায় সমস্ত ক্রীড়া আসর স্থগিত কিংবা বাতিল হয়ে গেছে। অনেকগুলো পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। ইউরোপিয়ান ফুটবল লিগগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়ে গেছে। এখন শঙ্কা দেখা দিয়েছে, পুরো মৌসুমই বাতিল হয়ে যাওয়ার। ইউরোপিয়ান ফুটবল কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করে দিয়েছে, মৌসুম বাতিল করেই দিতে হবে। উয়েফা প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার সেফেরিন স্বীকার করেছেন, জুনের শেষ দিকেও যদি মৌসুমটা পূণরায় শুরু করা না যায় তাহলে এবারের মৌসুম পুরোটাই বাতিল করে দিতে হবে। টটেনহ্যামের অধিনায়ক হ্যারি কেন বলেছেন, এখন একটা পয়েন্ট নির্ধারণ করা প্রয়োজন যে, কবে থেকে মৌসুম পূনরায় শুরু করা যাবে। জুনের শেষ পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা প্রয়োজন। যদি সত্যি সত্যি এবারের মৌসুমটা বাতিলই করে দিতে বাধ্য হয়, তাহলে এই মৌসুমে এখনও পর্যন্ত যত রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে সবগুলোই এক্সপাঞ্জড করে দিতে হবে। ২০১৯-২০ মৌসুমকে ইতিহাসের পুস্তকে লেখা হবে ভৌতিক মৌসুম হিসেবে। লিভারপুলের রেকর্ড বাতিল হয়ে যাবে মৌসুম যদি বাতিল করা হয়, তাহলে সেটা হবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের লিভারপুলের সমর্থকদের জন্য খুবই হতাশার। কারণ, ৩০ বছর পর এবারই প্রথম, প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে তারা প্রথমবারেরমত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছিল অলরেডরা। কিন্তু মৌসুম বাতিল হলে লিভারপুলের জন্য সেটা হবে খুবই দুঃখজনক। একই সঙ্গে মৌসুম যদি বাতিল করে দেয়া হয়, তাহলে ক্লাব, অ্যাসোসিয়েশন এবং সম্প্রচার সংস্থাগুলোর জন্য বিশাল অর্থনৈতিক দুর্যোগ তৈরির সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। লিভারপুল শিরোপা জিততে না পারলে তা হবে তাদের জন্য সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মত। কারণ, এই শিরোপা জেতার জন্য তারা এমন কোনো কিছু নাই যে, যা প্রয়োজন হয়নি। মার্চে লিগ বন্ধ হওয়ার আগে দ্বিতীয় স্থানে থাকা দলটির চেয়ে ২৫ পয়েন্ট এগিয়েছিল অলরেডরা। ইয়ুর্গেন ক্লুপের শিষ্যরা আর মাত্র দুটি জয় পেলেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলতো। এত আগে শিরোপা নিশ্চিত করার রেকর্ড আর কেউ গড়তে পারেনি। এই মৌসুমেই লিভারপুল ম্যানসিটির একটি রেকর্ড স্পর্শ করে ফেলেছে। প্রিমিয়ার লিগে টানা ১৮ ম্যাচে জয়। শুধু তাই নয়, ঘরের মাঠে ম্যানসিটির টানা ২০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড ছিল। সেটাকে পার হয়ে ২২ ম্যাচ টানা জিতেছিল লিভারপুল। মৌসুম বাতিল হলে, এই রেকর্ডগুলোও বাতিল হয়ে যাবে। বাতিল হবে মেসির রেকর্ডও লিওনেল মেসির একটি রেকর্ডও বাতিল হয়ে যাওয়ার পথে। ব্রাজিলিয়ান গ্রেট পেলের একটি রেকর্ড স্পর্শ করার একেবারে দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছিল। করোনার কারণে লিগ বাতিল হওয়ার আগে পেলেকে ছোঁয়া থেকে মাত্র ২৫ গোল দুরে দাঁড়িয়েছিলেন মেসি। নির্দিষ্ট একটি ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৪৩টি গোল করেছিলেন পেলে। এবারের মৌসুমে লিগ স্থগিত হওয়ার আগে মেসি ২৪টি গোল করেছিলেন। ৬০৩ গোল নিয়ে মৌসুম শুরুর পর মেসির গোল হয়েছিল ৬২৭ গোল। আরও ২৫টি প্রয়োজন ছিল পেলেকে ছোঁয়ার। কিন্তু লিগ যদি বাতিল হয়ে যায়, তাহলে নিশ্চিত মেসির গোল সংখ্যা হয়ে যাবে ৬০৩। ২৪ গোল আর রেকর্ডের পাতায় লেখা হবে না। তবুও পেলের রেকর্ড ছোঁয়া কঠিন কিছু হবে না মেসির পক্ষে। কিন্তু আগামী জুনে ৩৩তম জন্মদিন পালন করবেন মেসি। এরপর তার ফর্ম কতটা থাকে সেটাই দেখার বিষয়। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর যে রেকর্ড লেখা থাকবে না ২০১৯-২০ মৌসুমে অনেকগুলো ব্যক্তিগত রেকর্ড গড়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সবগুলোই এখন বাতিল হওয়ার পথে। স্পালের বিপক্ষে টানা ১১তম ম্যাচে গোল করেন রোনালদো। একই ম্যাচে তিনি ক্যারিয়ারে এক হাজারতম ম্যাচ খেলার রেকর্ড সৃষ্টি করেন। গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা এবং ফ্যাবিও কুয়াগলিয়ারেলার রেকর্ডকে স্পর্শ করেন তিনি। গত অক্টোবরে ইউক্রেনের বিপক্ষে পর্তুগালের হয়ে খেলতে নেমে ক্যারিয়ারে ৭০০তম গোলের রেকর্ড গড়েন রোনালদো। এখন যদি মৌসুম বাতিল হয়ে যায়, তাহলে হয়তো জাতীয় দলের রেকর্ড ঠিক থাকবে, কিন্তু জুভেন্টাসের হয়ে যে ২৫টি গোল তিনি করেছেন, সবগুলোই বাতিল হয়ে যাবে। বাতিল হবে আগুয়েরের রেকর্ডও গত জানুয়ারিতে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ম্যানইউকে ৬-১ ব্যবধানে জয় এনে দেন সার্জিও আগুয়েরো। ওই ম্যাচে দারুন এক হ্যাটট্রিক করেন এই আর্জেন্টাইন। একই সঙ্গে থিয়েরি অঁরিকে পেছনে ফেলে বিদেশি ফুটবলার হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড গড়েন তিনি। একই সঙ্গে অ্যালান শিয়েরারের ১২ হ্যাটট্রিকের রেকর্ড ভেঙে দেন। থিয়েরি অঁরি আর্সেনালের হয়ে ১৭৫টি গোল করেন। কিন্তু সার্জিও আগুয়েরো সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়ে গোল করেন ১৮০টি। কিন্তু মৌসুম বাতিল হলে, আগুয়েরোর এই রেকর্ডটাও বাতিল হয়ে যাবে। মার্চে লিগ বন্ধ হওয়ার আগে ১৬টি গোল করেছিলেন আগুয়েরো। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৪ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3dRFyN1
April 04, 2020 at 03:32AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন