ওয়াশিংটন, ০৩ এপ্রিল - প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১৮ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশটিতে অন্তত ৫৬ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। দেশটিতে কমপক্ষে আরও দুই শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি করোনাভারাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের বেশিরভাগই নিউইয়র্কের বাসিন্দা। যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেছে যুক্তরাজ্যে। নতুন করে ৮ জন বাংলাদেশির মৃত্যুর ফলে সেখানে বাংলাদেশির মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে। বৃহস্পতিবার প্রবাসী বাংলাদেশি ও বাংলাদেশের কূটনীতিকদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৯টি দেশে অন্তত ৮৬ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন বলে জানা গেছে। সৌদি আরবে ৩ জন, ইতালি ও কাতারে ২ জন করে এবং স্পেন, সুইডেন, লিবিয়া ও গাম্বিয়ায় একজন করে বাংলাদেশি মারা গেছেন। নিউইয়র্কের এলমহার্স্ট হাসপাতালে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এক বাংলাদেশি বলেন, সেখানে এখন যত রোগী ভর্তি আছে, তার ৯৫ শতাংশই হচ্ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। প্রচুর রোগী মারা যাচ্ছে সেখানে। হাসপাতালটির চারপাশে প্রায় ১০ মাইল ব্যাসার্ধের এলাকার অধিকাংশই অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। বেশিরভাগ অভিবাসী সম্প্রদায়ের। তাদের জীবনযাপন বা চলাফেরা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ৮ শত ছাড়িয়েছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে দেশটিতে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশের তালিকায় এখন শীর্ষ অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। বিগত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নবজাতক রয়েছে, যার বয়স ৬ সপ্তাহ। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা গেছে, একদিনে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার মানুষ। সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি নিউইয়র্কের। সেখানে মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ১ হাজার ৩৭৫ জন ছাড়িয়েছে। পার্শ্ববর্তী নিউ জার্সিতে আক্রান্ত হয়েছে ২২ হাজার ২ শত ৫৫ জন এবং মৃত্যু ৩৫৫ জন। কানেকটিকাটে আক্রান্ত ৩ হাজার ৫৫৭ জন এবং মৃত্যু ৮৫ জনেন। আমেরিকান কলেজ অব ইমার্জেন্সির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম পি জ্যাকিস বলেছেন, শহরের সব জায়গায় চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের অবস্থা সঙ্কটজনক। আর কিছুদিনের মধ্যেই হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলোতে রোগী রাখার জায়গা পাওয়া যাবে না। চিকিৎসার জন্য থাকবেন না চিকিৎসক-নার্সরা। কী ভয়ানক সময় আসতে চলেছে, সেটা বুঝতে পারছে না সরকার। এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ইতোমধ্যে বলেছেন, নভেল করোনাভাইরাসের চলতি প্রাদুর্ভাব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হয়ে এসেছে। তিন মাস আগে চীনের উহানে প্রথম সংক্রমণ ঘটার পর ইউরোপকে বিপর্যস্ত করে এখন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে উঠেছে করোনাভাইরাস মহামারির নতুন কেন্দ্র। গত ১ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে হাতেগোনা কয়েকজন হলেও এক মাসের ব্যবধানে এই সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই লাখ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে এক থেকে আড়াই লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন গবেষকরা। এই পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, সামনে খুব কষ্টের সময় আসছে। এদিকে, ইউরোপের সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ ইতালি ও স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির হার কমলেও মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পর ইতালি ও স্পেন দুই দেশেই আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৫৭৪ জন, আর স্পেনে ১ লাখ ৪ হাজার ১১৮ জন। এরপরের অবস্থানে রয়েছে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীন। দেশটিতে ৮১ হাজার ৫৫৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৩ হাজার ৩১২ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭৬ হাজার ২৩৮ জন। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৩ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2X2RXHN
April 03, 2020 at 03:55AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন