নয়াদিল্লী, ২৫ এপ্রিল - এই তো মাস দুয়েক আগের কথা। দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ফাইনাল ম্যাচে ৩ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ভারতীয় দলে ছিলেন ১৯ বছর বয়সী অলরাউন্ডার অথর্ব আঙ্কোলেকার। এখন করোনাভাইরাসের কারণে সবধরনের খেলাধুলা বন্ধ। তবে থেমে নেই জরুরি সেবার মানুষদের কার্যক্রম। যেখানে রয়েছেন অথর্ব আঙ্কোলেকারের মা ভাইদেহি আঙ্কোলেকারও। দশ বছর আগে স্বামীকে হারানোর পর ভাইদেহি নিজেই সামলাচ্ছেন পরিবারের সব দায়িত্ব। করোনার এই ভয়াবহ সময়েও থেমে নেই তার কাজ। মূলত একজন বাস কন্ডাকটর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ভাইদেহি আঙ্কোলেকার। মুম্বাইয়ের বেস্ট পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসে কাজ করেন তিনি। লকডাউনের মধ্যে এই কোম্পানির বাস দিয়েই যাতায়াত করছেন করোনার বিপক্ষে ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা যেমন চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকস বা অন্যান্য মানুষেরা। আর এ কাজে যোগ দেয়ার জন্য কাঁকডাকা ভোরে ৪টা ৪৫ মিনিটে ঘুম থেকে উঠে বাস ডিপোতে যেতে হয় ভাইদেহিকে। এত সকালে খানিক ভয় লাগলেও, মেনে নিয়েছেন, এখন তো আশপাশেও কেউ থাকে না। খুব ভয়ানক পরিস্থিতি থাকে। আমি অথর্বকে বলি আমাকে বাস ডিপো পর্যন্ত দিয়ে আসতে। আমাদের কলোনি থেকে ১০ মিনিটের দূরত্ব। ভাইদেহি আঙ্কোলেকারের কাজটি আপাতদৃষ্টিতে বাস কন্ডাকটরের হলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনিও একজন করোনা যোদ্ধা। কেননা তার কাজের কারণেই হাসপাতাল, ফার্মেসিতে পৌঁছতে পারছেন ডাক্তার-নার্সরা। একইসঙ্গে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা মাথায় রেখেই নিজের কাজ করে যাচ্ছেন ভাইদেহি। এ পরিস্থিতিতে মায়ের বাইরে গিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করাটা ছেলে অথর্ব আঙ্কোলেকারের মন মানতে চায় না। তবু কোন উপায় নেই তার হাতে, মাকে বাইরে কাজ করতে যেতে দেখা সত্যিই চিন্তার। বাইরের পরিস্থিতি এখন নিরাপদ নয়। আমার হাতে থাকলে আমি মাকে ঘরেই থাকতে বলতাম। অথর্বদের বাড়ির কাছেই একজন সিকিউরিটি গার্ডের করোনা পজিটিভি পাওয়া গেছে কয়েকদিন আগে। ফলে পুরো আঙ্কোলেকার পরিবার এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে। তবু কাজ করে যাচ্ছেন ভাইদেহি আঙ্কোলেকার। একে নিজের পবিত্র দায়িত্ব হিসেবেই দেখছেন ভারতের বিশ্বকাপ তারকার মা। তিনি বলেন, আমার কাজটাও তো জরুরি সেবার অন্তর্গত। তবে এখানে ভয়ও আছে। কারণ বাসের যাত্রী তো যে কেউ হতে পারেন। স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশের কেউ কিংবা আরও অনেকে। দুর্ভাগ্যবশত তাদের সবারই ঝুঁকি রয়েছে। গত সপ্তাহেই আমাদের বাস কোম্পানির একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি সুবিধা পেয়েছেন ভাইদেহি। বর্তমানে সপ্তাহে তিনদিন কাজ করতে হচ্ছে তাকে। তার অন্যান্য সহকর্মীদের কাজের সূচি আরও কঠিন। এমনকি অনেককে রাত ৩টা বাজেও বের হতে হয় ঘর থেকে। তবে সমাজের মানুষের সাহায্য করতে পারায় নিজেদের আত্মত্যাগটা হাসিমুখেই দিচ্ছেন ভাইদেহিসহ বেস্ট বাস ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির কর্মীরা। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৫ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2KDawLb
April 25, 2020 at 04:02AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন