দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০১০ বিশ্বকাপে আফ্রিকান দেশ ঘানার পারফরম্যান্সের কথা ফুটবলপ্রেমীদের ভুলে যাওয়ার কথা নয়। অসাধারণ খেলেছিল আফ্রিকা থেকে মাত্র দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপে খেলতে আসা দেশটি। কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গিয়েছিল তারা। উঠে যেতে পারতো সেমিফাইনালেও। কিন্তু দুর্ভাগ্য যখন একটি দেশের ওপর ভর করে, তখন কিছুই করার থাকে না। কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে নিশ্চিত জয়ের সুযোগ পেয়েও জিততে পারেনি সেদিন ঘানা। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে উরুগুয়ে স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ গোললাইনে দাঁড়িয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে হাত দিয়ে ডোমিনিক আধিয়াহর হেড থেকে নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন। তাতে কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হয়নি উরুগুয়ের। কারণ সুয়ারেজকে দেখতে হলো লাল কার্ড এবং ঘানাকে দেয়া হলো পেনাল্টি কিক নেয়ার নির্দেশ। তখন গোল না হলেও, এবার তো পেনাল্টি থেকে নিশ্চিত গোল হবেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যটাই এখানে ভর করেছিল ঘানার ওপর। দেশটির সেরা ফুটবলার আসামোয়াগ গায়ান। তিনিই নিতে আসেন স্পট কিক। কিন্তু হয়তো বা বড় ম্যাচের প্রেসার নিতে না পেরে বলটিতে ভালোভাবে কিক নিতে পারেননি। তার বল গিয়ে ফিরে আসে টপ বারে লেগে। গোল থেকে বেঁচে গেলো উরুগুয়ে। নিশ্চিত জয় বঞ্চিত হলো ঘানা। ম্যাচ শেষ পর্যন্ত গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই বাজিমাত করে দেয় উরুগুয়ে। ৪-২ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে উরুগুয়ে চলে যায় সেমিফাইনালে, স্বপ্নভঙ্গ হয় ঘানার। আসামোয়াহ গায়ান যে পেনাল্টি মিস করেছিলেন, সম্প্রতি এসে তিনি স্বীকার করলেন, এখনও সেই কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছেন। সারাজীবনই সেটা বয়ে বেড়াবেন। সান্ডারল্যান্ডের সাবেক এই স্ট্রাইকার জানালেন, সেই পেনাল্টি কিক মিস করার পর সারারাত কেঁদেছিলেন। তার ওই এক মিসেই যে ঘানার নয় শুধু পুরো আফ্রিকা মহাদেশের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল! কারণ, প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ ছিল ঘানাইয়ানদের সামনে। ঘানার একটি টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ৩৪ বছর বয়সী আসামোয়াহ গায়ান বলেন, এখনও পর্যন্ত আমি যখনই একা হই, তখনই আমাকে সেই দুঃসহ স্মৃতি ঘিরে ধরে। মাঝে মাঝে মনে হয়, যদি পৃথিবী আবারও সেই আগের জায়গায় চলে আসতো, তাহলে নিশ্চিত আমি প্রায়শ্চিত্ব করার সুযোগ পেতাম। কিন্তু এটা তো কখনোই হওয়ার নয়। এটা এমন এক বিষয়, যা আমাকে বাকি জীবন দুঃসহ যন্ত্রনা দিয়ে যাবে। গায়ান জানান বিষয়টাকে মেনেই নিয়েছেন এখন। কারণ, তার জীবন থেকে তো এটাকে মুচে দেয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমি এটাকে গ্রহণ করে নিয়েছি। কারণ, এখানে তো আমার আর কিছু করার নেই। আমি সেখানে গিয়েছিলাম দেশকে রক্ষার জন্য। কিন্তু ফিরে এলাম একজন ভিলেন হয়ে। আমি এটাও মেনে নিয়েছি। কারণ, আমি জানি মানুষের অনুভূতিটা কেমন। সারারাত ঘুমাতে পারেননি উল্লেখ করে গায়ান বলেন, ওটা ছিল আমাদের জন্য সম্পূর্ণ একটি বিপর্যকর অবস্থা। আমি শান্ত থাকার চেষ্টা করেছি। সারারাত ঘুমাতে পারিনি এবং একেবারে সকাল না হওয়া পর্যন্ত কান্না করেছি। তবুও শান্ত হওয়ার চেষ্টা করেছি, কারণ আমি আর কাঁদতে চাইনি। নিজে প্রায়শ্চিত্ব করার সুযোগ না পেলেও গায়ান বিশ্বাস করেন, তার সন্তানরা হলেও একদিন এই প্রায়শ্চিত্ব করে দেবে। তিনি বলেন, আমি সব সময়ই আমাকে বলি যে যদি আরেকটা সুযোগ পেতাম! তাহলে, আমি আমার সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ব করতাম। এমনকি সেটা ফুটবলে না হলেও, যে কোনো বিষয়েই হোক। কিন্তু আমি নিজেও যদি না পারি, তবুও বিশ্বাস, আমার ছেলেরা হলেও সেই প্রায়শ্চিত্বটা করতে পারবে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৯ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/35JWfpM
May 09, 2020 at 05:27AM
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ...
তিন দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্টের সূচি প্রকাশ
07 Oct 20200টিঢাকা, ০৭ অক্টোবর- শ্রীলংকা সফর না হওয়ায় ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। দেশের মূল ক্...আরও পড়ুন »
বার্তামেউয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট!
07 Oct 20200টিবার্সেলোনার বোর্ড নির্বাচন আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ওই সময়ই ঠিক হওয়ার কথা জোসেপ মারিও বার্তা...আরও পড়ুন »
বেতন কাটা নিয়ে বার্সার আলোচনা শুরু
07 Oct 20200টিকরোনার কারণে গত মার্চ থেকে কমাস ফুটবল বন্ধ ছিল। এ সময় বড় ক্লাবসহ বিশ্বের অধিকাংশ ক্লাবই ফুটবলারদের ব...আরও পড়ুন »
অস্ট্রেলিয়া-ভারত গোলাপি বলের টেস্ট চূড়ান্ত
07 Oct 20200টিক্যানবেরা, ০৭ অক্টোবর- এ বছরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চার টেস্টের সিরিজ দিবারাত্রির ম্যাচ দিয়...আরও পড়ুন »
নারীর প্রতি মনোভাব বদলের ডাক মাশরাফীর
07 Oct 20200টিঢাকা, ৭ অক্টোবর- উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে নারীর প্রতি সহিংসতার হার। সিলেটে এমসি কলেজসহ নোয়াখালীর বেগমগঞ্...আরও পড়ুন »
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.