ঢাকা, ২৮ মে - অনেক দেরিতে হলেও মনের ভেতরের চাপা কষ্টের কথা বলে ফেলেছেন। জানিয়ে দিয়েছেন, ক্রিকেটারদের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি দাওয়া পেশ এবং আন্দোলন সংগ্রামে তাকে ইচ্ছে করে বাইরে রাখার কষ্টটা এখনও তাড়া করে বেড়ায়। মাশরাফি বিন মর্তুজা মনে করেন, ইচ্ছে করলেই তাকে ঐ আন্দোলনে রাখা যেত। তিনি জীবনের অন্য সময়ের মত ঐ আন্দোলন-সংগ্রামেও ক্রিকেটারদের সাথেই থাকতেন। তাদের হয়েই কথা বলতেন। তবে কঠিন সত্য হলো, তাকে ডাকা হয়নি। জানানোই হয়নি। ফোনে দু একজন কথা বললেও তাকে সেভাবে কিছুই বলা হয়নি। তা নিয়ে ভেতরে চাপা কষ্ট আছে দেশের সর্বকালের সেরা অধিনায়কের। তবে তার চেয়েও বেশি আছে, আক্ষেপ। মাশরাফি মনে করেন, ঐ আন্দোলনে না থাকায় তার ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে। তিনি বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গিয়েছিলেন। সাধারণ মানুষ তাকে ভুল বুঝেছেন, তার সম্পর্কে ভুল ধারণার উদ্রেক ঘটেছে। যা অনায়াসে কাটানো যেত। সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের কেউ প্রকাশ্যে তা জানিয়ে দিলেই হয়তো মাশরাফি বিব্রতকর অবস্থায় পড়তেন না। তার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হতো না। এত কথাও উঠতো না। কাল বুধবার রাতে ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের ইউটিউব লাইভে মূলত এ কথাগুলোই বলেছেন মাশরাফি। তবে ঐটুকু জেনে ও পড়ে আবার ভাববেন না, বড় ভাই মাশরাফি বুঝি সাকিব ও তামিমদের ওপর নাখোশ। অসন্তুষ্ট। অনেক কথা বললেও মাশরাফি কিন্তু কারো ওপর দোষ চাপাননি। কারো নাম উল্লেখ করে একটি তীর্যক কথাও বলেননি। বরং ঐ আন্দোলন ইস্যুতে কথা বলার শেষ অংশে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, কারো ওপর কোন রাগ-ক্ষোভ নেউ। কাউকে দোষারোপ করার ইচ্ছেও নেই। বরং মাশরাফি কথোপকথনের শেষ অংশে জানিয়ে দিয়েছেন, ক্রিকেটাররা বিশেষ করে জাতীয় দলের সতীর্থ ক্রিকেটাররা তার জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় ও অংশর সঙ্গী। যাদের সাথে তার খেলোয়াড়ি জীবনের দীর্ঘ সময় একসাথে কেটেছে। অনেক ভাল-মন্দ, সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করেছেন। তারা তার নিজ পরিবারের মতই কাছের এবং প্রিয়। তাদের তিনি সব সময় ভালোবাসেন। এবং সে ভালোবাসায় এক চুলও কমতি নেই। থাকবেও না কোনদিন। তাই তো মুখে এমন সংলাপ সাবেক অধিনায়কের, আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। তামিমকেও দুষছি না। তামিম হয়তো বলতে চেয়েছিল। তার হয়তো ইচ্ছে ছিল। তবে মনে একটা চাপা কষ্ট বারবারই যেন বের হয়ে আসছিল। মাশরাফি বলেন, কোন কিছু দিয়ে আমাকে ওরা পাশ কাটাতে চেয়েছে। যাক সেটা ভালো। আমাকে পাশ কাটাতে চেয়েছে, সেটা খুব ভালোই করেছে। আমি কোন দিন জাহির করতে যাইনি যে, আমি ক্যাপ্টেন তোরা আমাকে বললি না কেন? কোনদিনই চাইনি, চাইবোও না কোনো দিন। হয়তবা ওরা না ডাকলে আমি কখনো আর ড্রেসিংরুমেও যাব না আর। এটাও সত্যি কথা কিন্তু সব মানুষের সামনে আমাকে একটা বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়া হয়েছে। সব দাবিই যেহেতু যৌক্তিক, সেখানে যখন আমিই নেই তার মানে আমি তার বিপক্ষে। ওই পরিস্থিতিতে আমিই একমাত্র ক্রিকেটার যে পুরোই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গিয়েছিলাম। ওরা যদি ক্লিয়ার করে আসতো যে, আমরা মাশরাফি ভাইকে ডাকিনি। তাও আমি একটা নিরাপদ অবস্থানে থাকতে পারতাম। কিন্তু বিকল্প পথটাও ওরা (ক্রিকেটাররা) রাখেনি-নড়াইল এক্সপ্রেসের বক্তব্য। তবে মাশরাফি মানুষটা অন্যরকম। মনে ক্ষোভ পুষে রাখেন না। তিনি বলেন, এটা নিয়ে আমার কোন আফসোস নেই। আমি ক্রিকেটারদের পরিষ্কার তাও বলেছিও। তারপরও আমি তাদের সাথে প্রাণ খুলে মিশেছি। শেষ সিরিজে আগের মতই আড্ডা দিয়েছি। যথারীতি আমার রুমেই সবাই মিলে গল্প করেছি। আমার ভেতরে বিন্দুমাত্র ক্ষোভ নেই। ক্ষোভ নিয়ে আমি বসবাস করি না। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নিজের পরিবারের মতই দেখেন। এ সত্য প্রকাশ করে দেশের ক্রিকেটের এ প্রবাদতুল্য চরিত্র শেষ করেন এভাবে, আমার পরিবার যেমন আমার জীবনের এক পাশে। একইভাবে আমার টিমমেটরাও আমার এক পাশে আছে। এটা হচ্ছে বাস্তব কথা। কারণ তারাও আমার পরিবার। এক দুইদিন তো আর তদের সাথে থাকিনি! বছরের পর বছর একসাথে কেটেছে। ঈদের আনন্দ। রোজার আনন্দ। সবকিছুই তাদের সাথে ভাগাভাগি করেছি। ছোটখাট সমস্যা নিয়ে তাদের সাথে দুঃখগুলোকে এক করে রাখার কোন অর্থ হয় না। আমি কখনো এমন না। আর এমনটা করতেও চাই না। তারাই আমার আনন্দের জায়গায় ছিল বেশি। খেলাটাকেই তো ভালোবাসি বেশি। ওরাই আমার আনন্দের জায়গা। শান্তির জায়গা। আমার পরিবারেরও অংশ তারা। আমি তাদের সবসময়ই ভালোবাসি এবং সম্মান করি। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৮ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/36BWd3T
May 28, 2020 at 12:39PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন