ঢাকা, ১৮ মে - করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের মুখের দিকে তাকিয়ে ১৮ বছরের সঙ্গী প্রিয় ব্রেসলেটটি বলি দিয়েছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি। গতকাল নিলামে তুললে ব্রেসলেটটি ৪২ লাখ টাকা দাম ওঠে। আর অবিশ্বাস্য দামে ব্রেসলেটটি কিনে নেয় বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি অ্যাসোসিয়েশন (বিএলএফসিএ)। প্রথম চমকের পর দ্বিতীয় চমকের উপহার দেয় প্রতিষ্ঠানটি। মাশরাফি থেকে ৪২ লাখ টাকায় ব্রেসলেটটি কিনে ফের তাকেই উপহার দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। রোববার রাতে নিলাম শেষে লাইভেই এ সিদ্ধান্তের কথা জানান মমিনুল ইসলাম। লাইভে ব্রেসলেটটি খুলে মাশরাফি বলেন, আমি এটি ইতিমধ্যে আপনার জন্য খুলে ফেলেছি। এটি আপনার জন্যই ইনশাআল্লাহ। আপনিসহ আপনার সঙ্গে যারা ছিল তাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। মাশরাফি ব্রেসলেটটি হাত থেকে খুলে টেবিলে রাখতেই সঞ্চালক আরিফ আর হোসাইন বলেন, মমিন ভাই, আপনাদের প্ল্যান কী? এই ব্রেসলেটটি কি বাধাই করে রাখবেন, না কি করবেন? জবাবে মমিনুল ইসলাম বলেন, ১৮ বছর ধরে যে জিনিস মাশরাফির কাছে আছে তা তার হাতেই মানায়। আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এই সংগঠন আপনাকে এই ব্রেসলেটটি উপহার দিতে চায়। আমরা চাই আপনি আমাদের এই উপহার গ্রহণ করবেন। মমিনুলের এমন বক্তব্যে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যান মাশরাফি। জবাবে মাশরাফি সংগঠনটিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, মমিন ভাই, আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। তবে আপনারা নিলে আমার এক ফোঁটাও কষ্ট হবে না। আসলে আপনাদের এবং আমার উদ্দেশ্য একটিই। এই করোনাকালে মানুষকে কিছুটা ভালো রাখা। আবার আপনারাই আমাকে উপহার হিসাবে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি বড় একটি সম্মান। আমি ঠিক বুঝতে পারছি না যে, আপনাদের কি বলে ধন্যবাদ দেব। করোনাকাল শেষে কোনো একসময় ছোট্ট একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রেসলেটটি মাশরাফিকে ফিরিয়ে দিতে চান বলে জানান মমিনুল। মাশরাফি বলেন, মমিন ভাই আজকে যেটা করলেন, অসম্ভব ভালো লাগছে। আপনাদের সম্মানেই বলতে চাই, আপনাদের চাওয়া মতোই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রেসলেটটি আমি গ্রহণ করব। তার আগে এটা আমি আর হাতে নেব না। যেদিন আপনারা আমার হাতে পরিয়ে দেবেন, সেদিনেই নেব। তবে মমিনুল ইসলামের অনুরোধে ব্রেসলেটটি ফের নিজের হাতে পরে নেন মাশরাফি। উল্লেখ্য, দেড় যুগ আগে কাছের এক বন্ধুর মামাকে দিয়ে ব্রেসলেটটি মাশরাফি বানিয়ে নিয়েছিলেন। এরপর এই দীর্ঘ সময়ে খুবই কম সময়ের জন্য সেটি হাত থেকে খুলেছেন তিনি। নিলামে তোলার সময় গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, এই ব্রেসলেট তার জীবনের কতটা জুড়ে আছে। বললেন, গত ১৮ বছরে খুব কম সময়ই এটি হাত থেকে খুলেছি। অপারেশনের সময়, এমআরআই করানোর সময় খুলতে হয়েছে। আর কয়েকটি ম্যাচ বা কিছু সময়ের জন্য খুলেছি শুধু। তবে যখনই খুলেছি, কখনোই স্বস্তি বোধ করিনি। মনে হতো, কী যেন নেই, খালি খালি লাগত। আমার সবসময়ই মনে হয়েছে, এটি আমার সৌভাগ্যের প্রতীক। এই ক্রিকেট কিংবদন্তি বলেন, আমার ক্যারিয়ারের সব উত্থান-পতনের স্বাক্ষী এই ব্রেসলেট। যত লড়াই করেছি, মাঠের ভেতরে-বাইরে যত কিছুর ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে, সব কিছুর স্বাক্ষী এটি। আমার ১৮ বছরের সুখ-দুঃখের সাথী। আমার অনেক আবেগ-ভালোবাসা জড়িয়ে আছে এটিতে, এই ব্রেসলেটকে আসলে ব্যাখ্যা করা আমার জন্য খুব কঠিন। সুত্র : যুগান্তর এন এ/ ১৮ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Zaqxkx
May 18, 2020 at 08:57AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top