এসেছিলেন ভারতের ক্লাবে খেলতে। র্যান্ডি জুয়ান মুলার কি জানতেন, এমন বিপদে পড়বেন! করোনার লকডাউনের কারণে মুম্বাই বিমানবন্দরে আটকা পড়েন ঘানার এই ফুটবলার। টানা ৭২টি দিন বিমানবন্দরেই বন্দিজীবন কাটাতে হয়েছে তাকে, যে দিনগুলো ছিল রীতিমত দুঃসহ। গত বছর নভেম্বর মাসে কেরালার ওআরপিসি স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে খেলার জন্য ভারতে এসেছিলেন মুলার। ৬ মাসের ভিসা ছিল তার। লকডাউন শুরুর পর দ্রুতই বাড়ির পথ ধরতে চেয়েছিলেন। কেনিয়া হয়ে ঘানায় পৌঁছানোর বিমান টিকিট করা ছিল, কিন্তু ছাড়তে পারেননি ভারত। এদিকে আসার ভিসা আর টিকিট মিলিয়ে প্রায় দেড় লাখ রুপির মতো খরচ হয়ে গেছে। ভিসার মেয়াদও শেষ। বিমানবন্দরেই তাই আটকে যান মুলার। ২৩ বছর বয়সী এই ফুটবলার টানা ৭২টি দিন এখানেই গোসল, কাপড় ধোয়া, নাওয়া-খাওয়া সব কাজ করেছেন। পুরো জেলখানার জীবনের মতো। কোনদিন সিঙ্গারা, কোনদিন আবার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে পাওয়া ফ্রাইড রাইস খেয়ে দিন পার করেছেন। দুঃসহ সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে ঘানার এই ফুটবলার বলেন, ভারতে ছয় মাসের ভিসায় এসেছিলাম। ম্যাচ প্রতি ২ থেকে ৩ হাজার রুপি পাওয়ার কথা ছিল। প্রায় কোনো ম্যাচ না খেললেও এখানে আসার ভিসা ও টিকিট মিলিয়ে প্রায় দেড় লাখ রুপি খরচ হয়ে যায়। লকডাউন শুরুর পর বাড়ি ফিরতে চাইলাম। ৩০ মার্চ কেনিয়া হয়ে ঘানার পৌঁছানোর বিমান টিকিট করা ছিল। মুম্বাই একটু আগেভাগেই চলে এসেছিলাম, এরপর তো লকডাউন শুরু হলো। আন্ধেরির পুলিশ আমাকে বিমানবন্দরে থেকে যেতে বলে। কিন্তু এর মধ্যে থাকার কোনো ব্যবস্থা করতে পারিনি। হাতের টাকা শেষ হয়ে গিয়েছিল। বিমানবন্দরে বন্দী জীবনটায় তাই হতাশায় ভেঙে পড়ার অবস্থা হয়েছিল মুলারের। এ সময় কেবল স্টিভেন স্পিলবার্গের দ্য টার্মিনাল সিনেমার মূল চরিত্র টম হ্যাংসের কথা মনে হতো তার। কি এক দুঃসহ বন্দী জীবন! মুলার বলেন, আমার কিছু করার ছিল না। এরপর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আমাকে টুকটাক খেতে দিত। কিছু টাকাও দিত। কিছু যাত্রীদের থেকে বই উপহার পাই। সেগুলো পড়ে আর বিমানবন্দরে ঘুরে দিন কেটেছে। নিজেকে বোঝাতে থাকি, এই দুঃসময় একদিন কেটে যাবে। একজন যাত্রী আমাকে বি ইয়োর ওউন থেরাপিস্ট বইটি উপহার দেন। সেটি পড়ে কিছুটা অনুপ্রেরণা পাই। হতাশা দূর করার চেষ্টা করি। আমার অবস্থা স্টিভেন স্পিলবার্গের দ্য টার্মিনাল সিনেমার মূল চরিত্র টম হ্যাংকসের মতো হয়ে গিয়েছিল। নিজের এই অবস্থার কথা এরপর একদিন টুইট করেন মুলার। যেটি চোখে পড়ে মহারাষ্ট্রের পর্যটন মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরের। তিনিই এই বন্দিদশা থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করেন মুলারকে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৭ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2XH3SLr
June 07, 2020 at 03:29PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন