ঢাকা, ০৮ জুন - কোন দিক দিয়ে তার যোগ্যতার কমতি নেই। কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বরাবরই নিজ দেশে অবহেলিত। দেশের ক্রিকেটে তার সমাদর নেই একদমই। দেশের বাইরে অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট কোচিংয়ের ওপর উচ্চতর শিক্ষা নিয়েছেন। ক্রিকেট কোচিংয়ের সম্ভাব্য সব বড় ডিগ্রিও অর্জন করেছেন । অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ে ক্রিকেট কোচিং করিয়ে এখন বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে এশিয়ান ক্রিকেটের উন্নয়ন কর্মকান্ড তদারকি ও সমন্বয়ের কাজ করছেন। দেশের মানুষ বুলবুল বলতে অজ্ঞান। ক্রিকেট অনুরাগীদের একটা বড় অংশর অনেক দিনের আশা, ঘরের ছেলে বুলবুলকে জাতীয় দলের কোচ করা হবে। বিপুল অর্থ দিয়ে ভিনদেশি কোচ আনার চেয়ে দেশের ছেলে বুলবুলকে দায়িত্ব দিয়ে দিলেই তো হয়ে যায়! বুলবুলও বিভিন্ন সময় নানাভাবে এ ইচ্ছে ব্যক্ত করেছেন। এবার ঈদের আগে রোজার ভেতরে ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের এক ইউটিউব লাইভে বুলবুল প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি মনের দিক থেকে তৈরি। দায়িত্ব দিলে ও কোচিং করানোর সুযোগ পেলে তিনি দেশের হয়ে কাজ করতে আগ্রহী। তবে সেটা কোন সেক্টরে, জাতীয় দলের হেড কোচ, ব্যাটিং কোচ, নাকি এ দল, এইচপি কিংবা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ হিসেবে- তা অবশ্য ভেঙে বলেননি বুলবুল। শুধু জানিয়েছেন, তিনি তৈরি আছেন। দায়িত্ব পেলে দেশের ক্রিকেটে কাজ করবেন। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সে ইচ্ছে আকাঙ্খার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা, আস্থা ও বিশ্বাস রেখে (রোববার) সে বিষয়ে কথা বলেছেন বিসিবি পরিচালক ও গেম ডেভেলপমেন্ট চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন। বুলবুলের সাথে সেই ১৯৮৭-১৯৮৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন সুজন। এরপর জাতীয় দলেও প্রায় এক যুগের সতীর্থ দুজন। সাবেক এই সতীর্থকে তো খুব কাছে থেকেই চেনা সুজনের। যোগাযোগও ভালো, তবে তাকে কেন দায়িত্বে দেখা যাচ্ছে না? বিসিবির এ অন্যতম শীর্ষ কর্তা এবং জাতীয় দলের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক জানান, বিসিবির আপাতত পছন্দের তালিকায় হেড কোচ হিসেবে কোন স্বদেশি নেই। বুলবুলের জন্য সম্ভাব্য দুটি ক্ষেত্র আছে। যার একটি হলো জাতীয় দলের সহকারী কোচ। আর একটি হাই পারফরমেন্স ইউনিটের হেড কোচ। সুজন বোঝানোর চেষ্টা করেন, বুলবুলের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলতে হচ্ছে, এর বাইরে আসলে এখন কাজ করার ক্ষেত্র নেই তার। সুজন বলেন, বুলবুল ভাইকে আমি নিজে হাতে ধরে জিজ্ঞেস করেছি- ভাই, আপনি কোচিং করাতে চান? আপনি কি করতে চান বলেন। তবে একটা কথা বলি, আপনি চাইলেও বাংলাদেশ টিমের হেড কোচ হতে পারবেন না এখনই। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের লক্ষ্য ও পরিকল্পনায় জাতীয় দলের হেড কোচ পদে স্থানীয় কাউকে নিয়োগের চিন্তাই নেই। আপনাকে ঐ পদে তারা নিবে না। আপনি নন, দেশের কোন কোচকেই জাতীয় দলের দায়িত্ব দেয়ার ইচ্ছে ও চিন্তা নেই। আপনি বড়জোর প্রধান সহকারী কোচ হতে পারেন অথবা হাই পারফরমেন্স ইউনিটের কোচ হতে পারেন। সুজন জানান, বুলবুলকে এমন প্রস্তাব দেয়া হলেও কখনও ইতিবাচক সাড়া দেননি। খানিকটা আক্ষেপের সুরেই বিসিবির এই পরিচালক বলেন, প্রায়ই শোনা যায় দেশি কোচ বুলবুল জাতীয় দল ও দেশে উপেক্ষিত। কিন্তু কেউ জানতে চান না, খুঁটিয়ে দেখেন না যে আমরা তাকে জাতীয় দলের সহকারী কোচ ও এইচপির হেড কোচ হবার প্রস্তাব দিয়েছি কি না। বুলবুল ভাই রাজি হননি। এ নিয়ে কোন কথাই বলেননি। কিন্তু যতবার তিনি দেশে আসেন প্রতিবার বলেন, দেশ আমাকে কাজে লাগায় না। সম্ভাব্য যে দুটি ক্ষেত্র আছে, তাতো বলেই দিয়েছি। এখন বুলবুল ভাই যদি হ্যাঁ-না কিছু না বলেন তাহলে কিভাবে হবে? বুলবুল বিষয়ে আকরাম খানের উদাহরণ টেনে সুজন বলে ওঠেন, বুলবুল ভাইয়ের খেলোয়াড়ি জীবনের সবচেয়ে ভালো বন্ধু ও কাছের মানুষ আকরাম ভাই। জাতীয় দলে তারা দীর্ঘদিন রুমমেটও ছিলেন। সেই আকরাম ভাই এখন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান। আকরাম ভাইকে বলবেন না! বললেই তো বুলবুল ভাই প্রসঙ্গটা বোর্ড সভায় আলোচিত হতো। তাকেও তো কখনো কিছু বলেননি। এইচপির চেয়ারম্যান এখন নাইমুর রহমান দুর্জয়, তারপরও আমি নিজ থেকে বলছি এইচপির দায়িত্ব নিতে চাইলে আমরা তার কথা ভাববো। আর সত্যি কথা বলতে, আমাদের গেম ডেভেলপমেন্টে দেশি কোচদের বেতন কম। আমাদের এখানে বেতন ১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। বুলবুল ভাই কি অত অল্প টাকায় ডেভেলপমেন্টের কোচিং করাতে আসবেন? প্রশ্নই আসে না। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৮ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3cLCCj8
June 08, 2020 at 05:21AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top