ওয়েলিংটন, ০২ জুন - সেই দিন থেকে সময় পার হয়ে গেছে পাক্কা ৬৫ বছর ২ মাস। ১৯৫৫ সালের ২৮ মার্চ ঘটেছিল ইতিহাসের লজ্জাজনক ঘটনাটি। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে সেদিন ইংলিশ পেসারদের তোপের মুখে মাত্র ২৬ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা। ২৭ ওভার ব্যাট করেছিল নিউজিল্যান্ড। ওভার প্রতি রান তোলার গড় মাত্র ০.৯৬ করে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার লজ্জাটি সেই থেকে চেপে বসে আছে নিউজিল্যান্ডের ঘাড়ে। ৬৫ বছর পরও সেই লজ্জা এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে কিউইদের। নিঃসন্দেহে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের ইতিহাসে দিনটি একটি কালোদিন হিসেবে স্বীকৃত। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট সমর্থকদের কাছে বিষয়টা এত বেশি লজ্জার যে, এটার কারণে তারা কখনোই মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারে না। নিউজিল্যান্ডের দ্য বেগি ব্রিগেড নামে পরিচিত ক্রিকেট সমর্থক গোষ্ঠির সহ-প্রতিষ্ঠাতা পল ফোর্ড এএফপিকে বলেন, সত্যি বলছি, একজন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সমর্থক হিসেবে সব সময়ই চাই কেউ যদি আমাদের কাছ থেকে এই লজ্জার রেকর্ডটা নিয়ে যেতো, তাহলে তাদের প্রতি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকতাম। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক এবং কলঙ্কজনক এক অধ্যায়। কতই না ভালো হতো, যদি কোনো দল ২৫ কিংবা তার কম রানে অলআউট হতো? ১৯৫৫ সালে আজকের দিনের চেয়ে ক্রিকেট ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক অবস্থায়। এর মাত্র তিন বছর আগে টেস্টে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছিল ভারত। টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের অভিষেক হয়েছে মাত্র দুই বছর আগে। আর শ্রীলঙ্কা? তখনও টেস্ট ক্রিকেট থেকে তারা ছিল ২৭ বছর দুরে। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ছিল তখন নিঃসন্দেহে টেস্ট ক্রিকেটের হেভিওয়েট কান্ট্রি। সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিউজিল্যান্ডও ছিল। যদিও তারা তখনও পর্যন্ত টেস্টে কোনো জয় পায়নি। সেবার ইংল্যান্ড ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড গিয়েছিল, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২২ বছর পর অ্যাশেজ সিরিজ জয় করার পর। অ্যাশেজ জয়ের কারণে এমনিতেই ইংলিশরা ছিল উজ্জীবিত। তারওপর, নিউজিল্যান্ড প্রায় ১ বছর ছিল ক্রিকেটের বাইরে। এছাড়া দল নির্বাচন প্রক্রিয়াতেও নিউজিল্যান্ডের অবান্তর নির্বাচন প্রক্রিয়াও ছিল বেশ প্রশ্ন সাপেক্ষ। তবুও ডুনেডিনে প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের চ্যালেঞ্জটা ভালোভাবেই গ্রহণ করেছিল কিউইরা। ইংলিশরা শেষ পর্যন্ত জিতে যায় ৮ উইকেটে। দ্বিতীয় টেস্ট অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে। প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড সংগ্রহ করলো ২০০ রান। বোঝা যাচ্ছিল, হয়তো এই টেস্টে জমজমাট লড়াই হবে। কিউইদের করা ২০০ রানের জবাবে ইংলিশরা সংগ্রহ করলো ২৪৬ রান। ৪৬ রান লিড নিলেও দারুণ লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলছিল। কিন্তু কে জানে, ইতিহাসের লজ্জা সৃষ্টি করবে নিউজিল্যান্ড? শুধুমাত্র বার্ট সাচলিফ পৌঁছাতে পেরেছিলেন দুই অংকের ঘরে (১১)। বাকিরা সবাই ছিলো আসা যাওয়ার মিছিলে। ৫ জন রানের খাতাই খুলতে পারেনি। তিন করেছেন ১ রান করে। অধিনায়ক জিওফ র্যাবোন করেন ৭ রান এবং হ্যারি কেভ করেন ৫ রান। তখনকার কিউই অধিনায়ক জিওফ র্যবোন পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, অনেক ঘটনা ঘটেছিল ওই ব্যাটিং প্রদর্শনীতে; কিন্তু সেটাতে কোনো লজ্জাজনক কিছু ছিল না। সবাই নিজেদের সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওইদিন আমরা সবাই খেলার বাইরে চলে গিয়েছিলাম। সবাই চেষ্টা করেছে; কিন্তু পারেনি। ওই ঘটনার এক বছর পরই অবশ্য নিউজিল্যান্ড তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছিল। টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের পর ৪৫তম টেস্ট খেলে অবশেষে জয়ের দেখা পায় তারা। নিজেদের প্রথম টেস্ট জয়ে তারা হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০২ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Ay5fml
June 02, 2020 at 05:14AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন