ঢাকা, ০৬ জুন - প্রচুর প্রাণহানি ঘটলেও ধীরে ধীরে করোনার ধাক্কা সামলে উঠেছে যুক্তরাজ্য। অবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও ইংল্যান্ডে এখন করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দুই-ই কম। তাই ইসিবি (ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড) খেলা মাঠে গড়ানোর কথা ভাবছে। আগামী মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ খেলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলেছে তারা। সব কিছু ঠিক থাকলে হয়তো করোনা মহামারির পর ক্রিকেটের জন্মভূমিতেই সবার আগে আবার নতুন করে বসবে ক্রিকেট মেলা। কিন্তু উপমহাদেশে বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশে কবে নাগাদ ক্রিকেট মাঠে গড়াবে? ভারতের সাড়া জাগানো টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি আসর আইপিএল বন্ধ হয়ে আছে তিন মাস ধরে। সেই মার্চে মাঠে গড়ানোর কথা ছিল। জুনের প্রথম সপ্তাহ চলে যাচ্ছে, শুরুর খবর নেই। কবে হবে, সে নিশ্চয়তাও নেই। খুব প্রাসঙ্গিকভাবেই চলে আসে বাংলাদেশের বিপিএলের প্রসঙ্গ। আইপিএলের মত বিশ্ব বাজার না থাক, অতটা বড় ও বিস্মৃত টুর্নামেন্ট হয়তো নয়, তারপরও টি-টোয়েন্টির বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরগুলোর ভেতরে কিন্তু বিপিএলও একটা জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের কাছে বিপিএলের একটা অন্যরকম চাহিদা আছে। তারা বিপিএল দেখতে ছুটে যান মাঠে। দেখেন প্রাণ ভরে। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্ত ও অনুরাগীদের কাছে বিপিএলই আইপিএল। ক্রিস গেইল, আন্দ্রে রাসেল, এ বি ডি ভিলিয়ার্স, স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, ব্রেন্ডন ম্যাককালামের মত বিশ্বমানের ক্রিকেটাররা বিপিএল খেলে গেছেন। তবে দেশে করোনা পরিস্থিতি ততটা ভালো নয় এখন। দিন যত যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বিপিএল নিয়ে সংশয় শঙ্কাও বাড়ছে। ক্রিকেট অনুরাগীদের মনে জাগছে প্রশ্ন, শেষ পর্যন্ত কি এবার বিপিএল হবে? আর হলেও সেটা কি পূর্ব নির্ধারিত সময় মানে ডিসেম্বরে শুরু করা যাবে? বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিকের কাছে ওপরের প্রশ্ন রাখা হলে তিনি নেতিবাচক কিছু না বললেও খুব ইতিবাচক কথাও শোনাতে পারেননি। কঠিন বাস্তবতাকে মেনে এবং বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে কথা বলেছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সদস্য সচিব। ইসমাইল হায়দার মল্লিকের ব্যাখ্যা, করোনা পরিস্থিতির ওপর তো আসলে আমাদের কারোই হাত নেই। পরিস্থিতির উন্নতি ছাড়া বিপিএল কেন, কোন ক্রিকেট আসরই আয়োজন সম্ভব না। তবে আমরা বিপিএল আয়োজনে আশাবাদী। কিন্তু করবোই, বিপিএল হবেই- এখনকার পরিবেশ-প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে অমন কথা বলার কোনোই সুযোগ নেই। এখন করোনার যে রূপ তাতে আমরা শুধু ভালোর আশা করতে পারি। আশায় আছি বিপিএল হবে। তবে নিশ্চিত করে কিছু বলা কঠিন। বলা হচ্ছে ভারতের আইপিএল আর বিশ্ব টি-টোয়েন্টি আসরের সময় পিছিয়ে যেতে পারে। দেখা গেল, হয় আইপিএল না হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে ডিসেম্বরে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হলো। তখন বিপিএল আয়োজন করা সম্ভব হবে না। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর চলাকালীন বিপিএল হবার প্রশ্নই আসে না। তখন বিপিএল পিছিয়ে দেয়া ছাড়া পথ থাকবে না। সেক্ষেত্রে বিসিবি তথা বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল কি করবে? তখন তো আর এ বছর মানে ২০২০ সালে বিপিএল আয়োজন সম্ভব হবে না। ২০২১ সালের জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারিতে নিয়ে যেতে হবে। তার সাথে বাংলাদেশ জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক সফরসূচি, দেশে-বিদেশে সিরিজ আছে কিনা খুঁটিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি বিপিএল খেলতে সব ভিনদেশি ক্রিকেটার আসেন, তাদের নিজ নিজ জাতীয় দলের খেলা আছে কিনা, তারাও অন্য কোন আসরে ব্যস্ত থাকবেন কিনা-এসব বিষয় সামনে চলে আসবে। সব মিলে ডিসেম্বরে বিপিএল শুরু করতে না পারলে একটা বড় ধরনের অনিশ্চিয়তা দেখে দিতে পারে। এক্ষেত্রে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চিন্তা-ভাবনা কি? জানতে চাওয়া হলে ইসমাইল হায়দার মল্লিকের ছোট্ট অথচ সোজাসাপটা জবাব, এখন আসলে সামগ্রিক অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই সময়ে দাঁড়িয়ে ঠিক বলা যাবে না, কি হলে কি হবে আর আমরাই বা কি করবো। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর আইপিএল যদি পিছিয়ে ডিসেম্বরে বিপিএলের সময় শিফট করা হয়, তা নিয়ে আগাম মন্তব্য করা কঠিন। সেটা পরে বলা যাবে। এখন যে পরিস্থিতি, আমরা আসলে অতদূর চিন্তা করছি না। করার অবস্থাও নেই। এখন শুধু কায়মনে কামনা করছি এ করোনার রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত হোক দেশ ও বিশ্ব। পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেই কেবল এসব নিয়ে কথা বলা যাবে। এখনকার প্রেক্ষাপটে সবই অনিশ্চিত। এর বাইরে মল্লিক আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেছেন। তার সারমর্ম হলো, আসলে বিপিএল আয়োজনে আগে ও পরে সব মিলে মাস তিনেক সময় লাগে। কাজেই যদি সেপ্টেম্বরের ভেতরেও অবস্থার উন্নতি ঘটে, তাহলেও নির্ধারিত সময়ে মানে ডিসেম্বরে বিপিএল আয়োজন সম্ভব। অর্থাৎ শুরুর আগে তিন মাস সময়ই বিপিএল আয়োজনের জন্য যথেষ্ট। এর বাইরে ঘরোয়া ক্রিকেট এবং জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক সফরসূচি ঠিক রাখার কথাও বলেছেন বিসিবির এ শীর্ষ কর্তা। তার শেষ কথা, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ এবং বাংলাদেশের যে সিরিজগুলো হয়নি, সেগুলো নিয়েও চিন্তা করতে হচ্ছে। শুধু বিপিএলই না, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ একটি মাত্র পর্ব হয়ে বন্ধ, সে লিগ শেষ করা খুব জরুরী। বাংলাদেশ জাতীয় দলের একাধিক সিরিজ বন্ধ হয়ে গেছে। সামনেও কিছু সফরসূচি আছে। সেগুলোর কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। সবই নির্ভর করছে করোনা মুক্ত স্বাভাবিক পরিস্থিতির ওপর। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৬ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/376qAj7
June 06, 2020 at 07:27AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন