ঢাকা, ০১ জুলাই- করোনা জয় করেছেন গানবাংলা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নী এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কৌশিক হোসেন তাপস। গত ১৬ জুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন তারা দুজন। প্রায় ১৫ দিনের আইসোলেশন আর যথাযথ চিকিৎসা শেষে গত ২৮ এপ্রিল আইইডিসিআরের পরীক্ষায় ও ২৯ এপ্রিল বেসরকারি একটি পরীক্ষার ফলাফলে তারা করোনামুক্ত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে নিজেদের করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন তাপস ও মুন্নী। এ দুঃসময়ে যারা মানসিকভাবে তাদের সাহস দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এই দম্পতি। তাদের করোনা আক্রান্ত হয়ে কাটানো দিনগুলোর মধ্যে লুকিয়ে আছে অন্যরকম এক ভালোবাসার গল্প। ফারজানা মুন্নী শোনান সেই গল্প। স্বামীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রথমে আমরা পরিবারের পাঁচজন করোনা টেস্ট করিয়ে ছিলাম। টেস্টের রেজাল্ট হাতে পেয়ে দেখলাম আমি করোনা পজিটিভ। অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পরিবারের সবাইকে আমার থেকে দূরে থাকতে বলেছিলাম। তাপস যেই কাজটি করেছে সেটা হলো, আমার করোনা পজিটিভ শুনেই ও আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমাকে বলল, তুমি কোনো ভয় পেও না, টেনশন করবে না, আমি তোমার সাথে আছি। আমি তোমার থেকে দূরে থাকবো না। আমরা দুজন একসঙ্গে ফাইট করবো। আমি তোমার সাথেই থাকবো, তোমার টেক কেয়ার করবো। সেই সময়ের ফিলিংসটা আমি আপনাদের বলে বোঝাতে পারব না। ফেসবুকে সব সময় দেখে এসেছি, যখন কারো করোনা হয়েছে, মাকে ছেড়ে সন্তান চলে যাচ্ছে, পরিবারের সন্তানরা বাবাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আমার যখন করোনা ধরা পড়লো, মনে হলো আমিও একদম একা। কিন্তু সেই সময় তাপস আমাকে জড়িয়ে ধরলো। পরে তাপসেরও করোনা পজিটিভ আসে। এরপর বাঁচার লড়াই আমরা এক সঙ্গেই করেছি। আমি বলতে চাই- প্লিজ সবাই সবাইকে ভালোবাসুন। একমাত্র ভালোবাসারই জয় হয়। কৌশিক হোসেন তাপস বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে আমি যেটা অনুভব করলাম। কেউ আক্রান্ত হলে তাৎক্ষণিক মানসিক শক্তি প্রয়োজন। আমি যখন শুনলাম আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ আমার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, তখন ভাবলাম আল্লাহ আমাকে নতুন একটা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এ সময় আমি যদি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখি, তাহলে আমার কিচ্ছু হবে না। এই মানসিক শক্তিটা আমি নিলাম। দ্বিতীয় মানসিক শক্তি নিলাম, আমাদের ভালোবাসা কোনো দিন কমবে না। যতদিন জীবিত থাকবো ততদিন বাড়বে। যখন আমরা জানবো কয়দিন বাঁচবো কেউ জানি না! তখন তো আরও ভালোবাসা বাড়া উচিত কমার কোনো সুযোগ নেই। কোন পরিবারের যদি এটা হয় তাহলে সেই সময় যেন তাদের ভালোবাসা আরও বাড়ে। তাপস বলে, পরিপূর্ণ পারিবারিক সমর্থন, সহযোগিতা আর ইতিবাচক পরিবেশই তাদের দ্রুত করোনামুক্ত করতে সাহায্য করে। তিনি বলেন, আমাদের বড় মেয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে সেবা করার চেষ্টা করেছে, একেবারে আমাদের মায়ের মতো। অন্য দুই রাজকন্যা তাদের ভালোবাসা সঞ্চার করে গেছে, যাতে আমরা মানসিকভাবে দৃঢ় থাকতে পারি এবং ইতিবাচক থেকে সফলভাবে এই যাত্রাটি শেষ করতে পারি। বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের এই তারকা-দম্পতি কোভিড-১৯ দুর্যোগেও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন অসীম সাহসিকতায়। মানুষকে উজ্জীবিত করতে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে নিয়েছেন বহুমাত্রিক উদ্যোগ। তাদের আহ্বানে মিউজিক ফর পিস মন্ত্র বুকে জনসচেতনতায় গান-কথায় জেগে উঠেছিলেন দেশি বিদেশি শতাধিক শিল্পী, দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন ৫০ লাখ টাকার অনুদান, উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে হাজারো মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন খাদ্যসহায়তা নিয়ে, সম্মুখসারীর যোদ্ধা বাংলাদেশ পুলিশের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পাশে দাঁড়িয়েছেন সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে। সংগীত শিল্পীদের পাশাপাশি ও সংস্কৃতি অঙ্গনের নানা সেক্টরের মানুষের পাশেও তারা দাঁড়িয়েছেন আপন ভূমিকায়। আর/০৮:১৪/১ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2NK5sq3
July 01, 2020 at 12:13PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন