নিউইয়র্ক, ২০ জুলাই- বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ (৩৩) হত্যাকান্ডে দোষ স্বীকার করছেন না গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডি হাসপিল। গ্রেপ্তারের পর ৪০ ঘণ্টায়ও তদন্তকারীদের প্রশ্নের মুখে তেমন কিছুই বলছেন না তিনি। এ কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া দীর্ঘ হতে পারে। নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (এনওয়াইপিডি) সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। আদালতের নির্দেশে হাসপিল এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাকে একটি ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। এদিকে শোক আর ভালোবাসায় নিউইয়র্কের লোকজন স্মরণ করছেন মাত্র ৩৩ বছরে সাফল্যে চূড়ায় পৌঁছানো বাংলাদেশি তরুণ ফাহিম সালেহকে। হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল ম্যানহাটানের ইস্ট ২৬৫ হাউস্টন স্ট্রিটের অ্যাপার্টমেন্টের সামনে ফুল আর শোকের বার্তা দিয়ে লোকজন স্মরণ করছেন তাকে। এদিকে ফাহিম সালেহকে হত্যার দুদিন পরই গ্রেপ্তার হাসপিলের পার্টি করার পরিকল্পনা ছিল বলে জানা গেছে। নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। অন্যদিকে হাসপিলের আইনজীবী স্যাম রবার্টস এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা সত্য ঘটনার খুবই প্রারম্ভিক অবস্থায়। এ মামলা দীর্ঘ এবং জটিল হবে। হাসপিলের আইনজীবী জনসাধারণকে এ নিয়ে মন খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এ মামলা একজনের গ্রেপ্তার ও অভিযোগের চেয়ে আরও বিস্তৃত বলে হাসপিলের আইনজীবী অ্যাটর্নি রবার্টস তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেন। ফাহিম সালেহর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ না করার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে গত ১৮ জুলাই একটি বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে। এ বিবৃতিতে পরিবারের পক্ষ থেকে ফাহিম সালেহর প্রতি যে ভালোবাসা এবং এ সময়ে তাদের পাশে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। সবার ভালোবাসা পরিবারের কাছে পৌঁছেছে এবং কঠিন এ সময়ে এমন প্রতিক্রিয়া পরিবারকে সাহস জুগিয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ফাহিম সালেহর পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা জানি সবাই আমাদের পক্ষ থেকে কিছু জানতে চাচ্ছে। পরিবার এ কঠিন সময়ে এবং দুঃখজনক সম্প্রতি ঘটনায় ফাহিম সালেহর পরিবারের সদস্যদের নিজেদের মধ্যে থাকার ইচ্ছাকে সবাই সম্মান দেখাবেন। পরিবারের পক্ষ থেকে এনওয়াইপিডির সদস্যদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। ফাহিম সালেহর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে তার মরদেহ সমাহিত করার ব্যাপারেও বিস্তারিত কোনো কিছু জানানো হয়নি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ সপ্তাহান্তেই সীমিত পারিবারিক আয়োজনে ফাহিম সালেহর মরদেহ সমাহিত করা হবে। জানাজা ও সমাহিত করার সময় আমন্ত্রিত লোকজনই যোগ দিতে পারবেন। সংবাদমাধ্যমসহ সবাইকে পরিবারের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে সম্মান করা এবং শোকের এ সময় কাটিয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ জানানো হয়েছে। এদিকে ফাহিম সালেহর হত্যায় জড়িত ২১ বছরের তরুণ হাসপিল সম্পর্কে নতুন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। ফাহিম সালেহকে হত্যার দুদিন পরই পার্টি করার জন্য বেলুন কিনেছেন হাসপিল। নিউইয়র্ক পুলিশের কাছে আসা ভিডিওচিত্রে দেখা যাচ্ছে, ইস্ট হাউস্টন স্ট্রিটের প্রায় এক মাইলের কম দূরত্বের ক্রসবি স্ট্রিটের একটি অ্যাপার্টমেন্টের সামনে তিনি বেলুন ধরে আছেন। তার সঙ্গে একজন নারীকেও দেখা গেছে। বড় আকারের পার্টি বেলুনটি কিনতে ফাহিম সালেহর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ব্রুকলিনে বসবাস করা হাসপিল এয়ারবিএনবি থেকে ক্রসবি স্ট্রিটের অভিজাত অ্যাপার্টমেন্ট কয়েক দিনের জন্য ভাড়া করেন। হাসপিল যখন পার্টি বেলুন কেনাকাটা করছেন, অদূরেই নিউইয়র্ক পুলিশ ফাহিম সালেহর খুনিকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল। নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তা হাসপিলকে নিউ আমেরিকান সাইকো (মনোবিকারী) হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ফাহিম সালেহকে হত্যার পরও তার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছিলেন হাসপিল। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে উবার পরিবহনের ভাড়া মিটিয়েছেন হোম ডিপোট নামের দোকানে ইলেকট্রিক করাত কেনার জন্য যাওয়া-আসার সময়। ক্রেডিট কার্ডের সূত্র ধরেই পুলিশ তাকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং ১৭ জুলাই সকালে ক্রসবি স্ট্রিটের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এম এন / ২০ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2ZHfxL6
July 20, 2020 at 05:33AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top