ঢাকা, ১৯ জুলাই- ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার অনন্ত জলিলের সিনেমায় কাজ করার কথা ছিল আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের। সেই ছবির জন্য হিরো আলমকে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা সাইনিং মানিও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকে সেই সিনেমা থেকে বাদ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অনন্ত। তবে কেন হিরো আলমকে সিনেমা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে এ বিষয়ে কথা বলেছেন অনন্ত জলিল। রোববার (১৯ জুলাই) অনন্তের নিজস্ব ফেসবুক থেকে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন তিনি। সেখানে হিরো আলমের নানা বিষয়ে কথা বলেন এ সুপারস্টার। এছাড়া বিতর্কিত প্রবাসী সেফাতুল্লাহ ওরফে সেফুদাকে নিয়ে কথা বলেছেন অনন্ত জলিল। হিরো আলমকে কেন সিনেমা থেকে বাদ দেয়া হলো- তার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আমি সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখলাম হিরো আলম ও জায়েদ খানের কথোপকথন। জায়েদ বলেছিলেন ওই যে ওই ছেলেটা মিউজিক ভিডিও করে সে আমাদের শিল্পী সমিতির সদস্য না। এর পরিপ্রেক্ষিতে হিরো আলমও প্রতিবাদ জানায়। সোশ্যাল মিডিয়াতে এটা নিয়ে ভালোই প্রোপাগান্ডা ছড়ায়। আমি বিষয়টি দেখে, পরেরদিনই জায়েদ খানকে ফোন করে অনেক রাগারাগি করি। আমি বলি, হিরো আলমকে তুমি এভাবে বলতে পারো না। কারণ হিরো আলম সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক পরিচিত। কয়দিন পর আমার মিডিয়া ম্যানেজার আরাবিকে বলি, হিরো আলমকে ফোন কর আমি ওর সঙ্গে কথা বলব। আরাবি হিরো আলমের সঙ্গে আমার কনফারেন্স করে দেয়। আমি তাকে বলি, তোমাকে নিয়ে বেশ প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে আমি তোমাকে নিয়ে টকশো করব। সেখানে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ থাকবে। কি সারপ্রাইজ ছিল সেটা আপনারা সবাই দেখেছেন। ভিডিও বার্তায় অনন্ত জলিল বলেন, আমি কেন হিরো আলমকে ছবি থেকে বাদ দিলাম। আপনার দেখেছেন, আমি হিরো আলম ও জায়েদ খানের সঙ্গে মিটমাট করে দিই। তাদেরকে আমি সোনারগাঁতে নিয়ে লাঞ্চ করাই। তারা আমাকে কমিটমেন্ট করে, এই বিষয়ে আমরা আর কথা বলব না। যেহেতু আপনি এটা মীমাংসা করে দিচ্ছেন। তবে দুঃখের সঙ্গে অনন্ত জলিল বলেন, আজকে থেকে ২-৩ দিন আগে, আমি সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখি, হিরো আলম সেইম টপিক নিয়ে কথা বলছে। আমি এই বিষয়টি মেনে নিতে পারিনি। হিরো আলমের বোঝা উচিৎ ছিল যে, অনন্ত জলিল কে? অনন্ত জলিলের সমাজে কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমি ব্যক্তি স্বার্থে তাদেরকে মিট করে দেইনি। তারা কেউই আমার আত্মীয় না। সবাই ভালোভাবে, এক সঙ্গে কাজ করবে এটাই কাম্য। মিট করার পরও হিরো আলম এই বিষয়ে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিডিওর ক্যাপশনে সে লিখেছে, অনন্ত জলিল আমাকে ইউজ করেছে। হিরো আলম তুমি কি বুঝো ইউজ কাকে বলে? তোমার পাশে যদি কোনো এডুকেটেড পারসন থাকত তাহলে তোমাকে অক্ষরে অক্ষরে বুঝিয়ে দিতে পারত ইউজ করা কাকে বলে। কেউ যদি দিনের পর দিন ব্যক্তি স্বার্থে কাজে লাগিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয় এটাকে ইউজ করা বলে। যদিও হিরো আলমকে আমার কোনো কাজেই লাগবে না। হিরো আলমের উদ্দেশে এ সুপারস্টার বলেন, তোমাকে আমার অফিসে এনে আমার পাশে বসিয়ে লাঞ্চ করিয়েছি। আমার মেক-আপ আর্টিস্ট মনিরকে দিয়ে তোমার মেক-আপ করিয়েছি। মেক-আপ করার সময় আমি ২-৩ বার মনিরকে বলেছি, ওর মেক-আপ যেন ভালো লাগে, স্ক্রিন যেন ব্রাইট হয়। অনেক ভালো করে মেক-আপ করতে হবে। প্রত্যেকটা ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ডের পণ্য দিয়ে মেক-আপ করেছে। আমার পাশে বসিয়ে টক-শো করেছি। এই টক-শোতে তোমাকে যে সারপ্রাইজ দেয়ার কথা ছিল সেটা দিয়েছি। মুভি সাইন করেছি। সাইনিং মানিও দিয়েছি। এটাকে কি ইউজ করা বলে? তোমাকে সাইন করেছি এবং বাদ দিয়েছি এটাই বড় কথা। তার চেয়েও বড় কথা আমি তোমাকে ছবিতে নেয়ার জন্য চেহারায় গ্ল্যামার আনার জন্য তোমার ফেসে সিজি করেছি। তুমি তোমার আগের লুকের সঙ্গে এই গ্ল্যামার মেলাতে পারবে? তুমিও আমাকে ফোন করে বলেছ, ভাইয়া সবাই আমাকে ফোন করে বলছে আমাকে ভালো লাগছে। অথচ অন্যরা তোমাকে কীভাবে প্রেজেন্ট করেছে সেটা একবার দেখে আসি। তিনি বলেন, একদিন মেশার পরই অনন্ত জলিল তোমার জন্য যা করেছে গত ৫ বছরে টা তোমার জন্য কেউ করেছে কি-না। যখন তোমার একটা নেকড ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে বেরিয়েছি আমি আমার মিডিয়া ম্যানেজারকে বলেছি, ওকে ফোন করে বল এখন সাবধানে চলতে। সে এখন অনন্তের সিনেমায় কাজ করবে। এই দুইদিনের পরিচয়ে আমি তোমাকে সু-বুদ্ধি দিয়েছি কু-বুদ্ধি নয়। ভবিষ্যতে তুমি একটু এডুকেটেড পারসনদের সঙ্গে কথা বলে ভিডিও দিবা। এতে তোমার জন্য অনেক উপকার দেবে। সেফাতুল্লাহ ওরফে সেফুদাকে হিরো আলমের শুভাকাঙ্ক্ষী উল্লেখ করে অনন্ত জলিল বলেন, গতকাল তোমাকে ছবি থেকে বাদ দেয়া নিয়ে সে (সেফুদা) অনেকগুলো আপত্তিকর কথা বলেছে। কিন্তু তোমাকে আমি যখন ছবিতে সাইন করেছি কই তখনতো প্রশংসা করে একটা ভিডিও বার্তা দিল না। যদি সে তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে থাকে তাহলে সে তোমার সুখে হাসবে দুঃখে কাঁদবে। সেফুদা সাহেবতো সবাইকে বলেন অশিক্ষিত, গরিব, ছোটলোক। সেফুদা সাহেবতো অনেক বড়লোক। সেতো অনেক টাকার মালিক সেতো তোমাকে নিয়ে একটা ছবি ইনভেস্ট করল না। উনিতো সবাইকেই গালাগালি করেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীদের বিভিন্ন ভাষায় গালাগালি করেন। আজ সকালে আমার ওয়াইফ আমাকে একটা ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছে। উনি ঠিক একইভাবে আমাকে অশিক্ষিত গরিব ছোট লোক বলেছেন। এবার আমি আমার বিষয়ে সেফুদা সাহেব যা বলেছেন তার কোনোটাই যে সত্য নয়, তার প্রমাণ দিই। তিনি বলেছেন আমি অশিক্ষিত, অথচ ২০০১ সালে আমি ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে আমি বিবিএ কমপ্লিট করি। তিনি বলেছেন, আমি গরিব। এজেআই (অনন্ত জলিল ইন্ডাস্ট্রিজ) গ্রুপ ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমাদেরর ফ্যামিলি বিজনেস। আমার বিজনেসের নাম। আমার ইন্ডাস্ট্রিতে ১১ হাজার লোক কাজ করে। এই কোম্পানি রান করতে প্রতি মাসে ১৭-১৮ কোটি টাকা খরচ হয়। ২০২১ সালে এখানে ১৫ হাজার লোক কাজ করবে। আর তিনি আমাকে বলেন আমি গরিব, ছোটলোক। বাংলাদেশে এই পর্যন্ত ৯ বার আমি সিআইপি হয়েছি। প্রেজেন্ট সিআইপি আমি। সেফুদার উদ্দেশে অনন্ত জলিল বলেন, আপনি আল্লাহর কাছে তওবা করেন। আপনি আল্লাহর কাছে বলেন, হে আল্লাহ আমি মানুষের সম্পর্কে না জেনে যে কটূক্তি করেছি টা থেকে আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনাকে একজন স্যান্ডেল দিয়ে পেটানোর কথাও বলেছেন। সেফুদা সাহেব আমার জানা মতে, আপনাকে দোয়া করার মতো কেউ নেই। আজ আমি আপনার জন্য দোয়া করলাম। আল্লাহ যেন আপনাকে ক্ষমা দেন। সেফুদা সাহেব আমি ক্ষমা করতে শিখেছি। আপনাদের দুজনকেই আমি ক্ষমা করে দিলাম। ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুন। এ সময় তিনি ভিউয়ারদের সেফুদার ভিডিও দেখার থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান। আর/০৮:১৪/১৯ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3hg9gfr
July 19, 2020 at 09:28AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top