ঢাকা, ০৩ জুলাই- করোনাকালে শুটিং করছি। মনে হচ্ছে সেটে আসা-যাওয়া হচ্ছে। মায়ার জায়গাটা যেন আর আগের মতো নেই। করোনা আমাদের নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখি করেছে। সবার আন্তরিকতা খুব মিস করি। আগে পরিবারের মতো একে অপরের সঙ্গে মিশেছি। এমনকি একটি দৃশ্য করার আগে নির্মাতার সঙ্গে শলাপরামর্শ করেছি। সেটেও হয়েছে গল্পের গাঁথুনি। এসব যেন আজ অতীত। সচেতনতা নিয়েই ব্যস্ত সবাই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনেক সময় ব্যয় হচ্ছে। করোনাকালে দীর্ঘ বিরতির পর শুটিংয়ে ফিরেছেন অভিনেত্রী তারিন জাহান। নিউ নরমাল লাইফ নামের একটি নাটকের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই জানালেন তিনি। ঈদ ধারাবাহিক বনে ভোজন দিয়ে কাজের খাতা খুলেছেন তারিন। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। সাজু খাদেমের গল্পে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন লিটু শাখাওয়াত। পরিচালনা করেছেন গোলাম সোহরাব দোদুল। গাজীপুরের একটি রিসোর্টে এর দৃশ্যধারণ হয়েছে। বাবা ছেলের ব্যতিক্রমী এক গল্প নিয়ে নাটকটি নির্মিত হয়েছে। এতে জয়তুন নামের এক নারী চরিত্রে আমাকে দেখা যাবে। গল্প ও চরিত্র মিলে অসাধারণ একটি নাটক উপহার পাবেন দর্শক। এমনটি আশা করতেই পারি। বলেন তারিন। ভিন্নধর্মী কাজের আকাঙ্ক্ষা সব সময়ই তাড়িয়ে বেড়ায় তারিনকে। তাই অভিনয় দিয়ে যেখানে নিজেকে তুলে ধরা যায়, সেসব কাজেই প্রাধান্য থাকে তার। সেই এতটুকু বয়সে তিনি নতুন কুঁড়ির চ্যাম্পিয়ন হয়ে জানান দিয়েছিলেন নিজের সম্ভাবনা। শৈশব থেকে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে তিন দশকেরও বেশি সময় দাপটের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন তিনি। শ্রম, সাধনা আর নিষ্ঠায় তার ক্যারিয়ারে যোগ হয়েছে অসংখ্য একক নাটক, খণ্ড নাটক, ধারাবাহিক আর টেলিছবি। রঙধনুর সাতরঙে নিজেকে রাঙিয়ে ছুটে চলেছেন আপন গতিতে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এটা আমাদের গল্প নামে কলকাতার একটি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। এটি পরিচালনা করছেন মানসী সিনহা। তারিন বলেন, সিনেমার আমার অংশের শুটিং শেষ। ডাবিং বাকি। লকডাউনের কারণে ডাবিং সম্ভব হয়নি। শুটিং শেষ করে দেশে আসার পর থেকে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। পরিস্থিতির উন্নতি হলেই কাজটি শেষ করব। এই সিনেমায় অনেক প্রিয় অভিনেতার সঙ্গে কাজের সুযোগ হয়েছে। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় তাদের মধ্যে একজন। তিনি মজার মানুষ। অনেক আড্ডা দিয়েছি। কণিকা ব্যানার্জি, সঞ্জীব শর্মা, খরাজ মুখার্জির সঙ্গেও ভালো সময় কেটেছে। সিনেমার গল্প নিয়ে তারিন বলেন, এর কাহিনি গড়ে উঠেছে ঢাকা ও কলকাতার দুই পরিবার নিয়ে। গল্পটি কলকাতার হলেও আমার চরিত্রটি বাংলাদেশি মেয়ের। নাম সুদেষ্ণা। একজন বিবাহিত নারী। তার সঙ্গে শাশুড়ির দ্বন্দ্ব। এরপর মেয়েটি যেন একা হয়ে ওঠে। অভিনেত্রী তারিন একসময় নাটকের শুটিংয়ে মাসের বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতেন। এখন অভিনয় কমিয়ে দিয়েছেন। বিশেষ আয়োজনে তিনি হাজির হন সমুজ্জ্বল হয়ে। কেন? তারিন বলেন, আমি বরাবরই ভালো গল্প খুঁজি। বর্তমানে যে ধরনের গল্প নিয়ে নাটক নির্মিত হয় তা আমাকে টানে না। করোনাকালে শুটিং ছাড়া পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটে তারিনের। রান্নাবান্না, বইপড়া, টিভি দেখেই অবসর পার করছেন তিনি। তারিন বলেন, অনেকে মনে করেন, ঘরে থাকা বন্দি জীবনের মতো। আমি মানতে নারাজ। ঘরে আমার ভালোভাবেই সময় কেটে যাচ্ছে। বাবা মায়ের বয়স হয়েছে। তাদের ঘিরেই আমার সব। সময়ের অভাবে আগে রান্না করিনি। এখন রান্না করছি। রান্নার প্রতি যখন মা বাবার আগ্রহ দেখি তখন ভালোই লাগে। মনে প্রশান্তি পাই। বিনোদন অঙ্গনে তারিনের পথচলা তিন বছর বয়স থেকেই। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তার সুপ্ত প্রতিভা মেলে ধরেন তিনি। এই দীর্ঘ সময় ধরে অভিনয় করে চলেছেন- ক্লান্তি তাকে ছুঁতে পারেনি। দীর্ঘ সময় জনপ্রিয়তা ধরে রাখার পেছনে কী রহস্য লুকিয়ে আছে? এবার তারিনের মুখে হাসি, রহস্য! ও রকম কিছু না। আমার নিজের কোনো ক্ষমতা নেই। যা আছে, পুরোটাই অলমাইটি দিয়েছেন। অভিনয় আমার কাছে এবাদতের মতো। আজকের এই অবস্থানে আসার পেছনে আমার দর্শকও সমান কৃতিত্ব রাখেন। তাদের সমর্থন না পেলে এতটা পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব হতো না। এম এন / ০৩ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3irWdsN
July 03, 2020 at 03:50PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন