নয়াদিল্লি, ১৬ আগস্ট - ২০০৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে শুরু, ২০১৯ সালের ৯ জুলাই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে শেষ। মাঝের ১৫ বছর ধোনি খেলেছেন ৫৩৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ, করেছেন ১৭ হাজারের বেশি রান। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে নিয়েছেন ৮৬৩টি ডিসমিসাল। তবে একটি বিন্দুতে মিলে গেছে ভারতের ইতিহাসের সফলতম অধিনায়কের শুরু ও শেষটা। নিজের প্রথম ও শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে রানআউট হয়েছেন ধোনি। অর্থাৎ রানআউটে শুরু আর রানআউটেই শেষ হয়েছে ধোনির বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট অবসরের সিদ্ধান্ত জানালেও, ধোনির ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে ২০১৯ সালের ৯ জুলাই। সেই ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। নিউজিল্যান্ডের ২৩৯ রানের জবাবে ধুঁকছিল ভারত, আশার আলো দেখিয়ে লড়ছিলেন ধোনি। একপ্রান্ত আগলে রেখে ৭২ বলে পূরণ করেন নিজের ফিফটি। কিন্তু যে বলে ৫০ পূরণ করেন ধোনি, সে বলেই হন রানআউট। দুই রান নিতে গিয়ে মার্টিন গাপটিলের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে যান তিনি। ফলে শেষ ম্যাচে রানআউটই হয়ে থাকে ধোনির সঙ্গী। ঠিক যেমনটা ছিল ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেও। সেদিন ৪২তম ওভারে পঞ্চম উইকেটের পতনের পর উইকেটে এসেছিলেন অভিষিক্ত ধোনি। কিন্তু খেলতে পেরেছিলেন মাত্র ১টি বল। সেই বলেই রানআউট হন তাপস বৈশ্য এবং খালেদ মাসুদ পাইলটের যৌথ প্রচেষ্টায়। রানের খাতাও খুলতে পারেননি ধোনি, ফেরেন শূন্য রানেই। রানআউট দিয়ে শুরু আর রানআউট দিয়েই শেষ করা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সবমিলিয়ে ২৬ বার রানআউট হয়েছেন ধোনি। এর মধ্যে সবচেয়ে ১৬ বার তিনি রানআউট হয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেটেই। বাকি দশ রানআউটের মধ্যে টেস্টে চার ও টি-টোয়েন্টিতে দুর্ভাগ্যজনক এ আউট হয়েছেন ছয়বার। শুরু ও শেষের দুই রানআউটের মাঝের দেড় দশকে ইতিহাসের একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে তিনটি আইসিসি ট্রফি জেতার অনন্য কীর্তি গড়েছেন ধোনি। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে শুরু, তারপর ২০১১ সালে সবচেয়ে আরাধ্য ওয়ানডে বিশ্বকাপ। দুই বছর পর (২০১৩) ভারত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিও জেতে ধোনির অধীনে। শোকেসে আছে দুটি এশিয়া কাপও (২০১০ আর ২০১৬)। আরও পড়ুন: এক নজরে জেনে নেই ধোনির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ধোনির অধীনে ভারতের এত এত সাফল্য এসেছে, সেগুলো বিস্তারিত লিখতে গেলেও মহাকাব্য হয়ে যাবে। শুধু ভারতেরই নয়, তিন তিনবার (২০০৯, ২০১০ এবং ২০১৩) আইসিসির বিশ্ব টেস্ট একাদশেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন এমএস। আইসিসির বিশ্ব ওয়ানডে একাদশে রেকর্ড ৮ বার সুযোগ পাওয়া খেলোয়াড় ধোনি, এর মধ্যে আবার পাঁচবার ছিলেন অধিনায়ক। ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন ফরম্যাটের মধ্যে ধোনি সবচেয়ে সফল ছিলেন ওয়ানডেতে। পঞ্চাশের ওপর গড়, ১০ হাজারের ওপর রান (১০৭৭৭)। ৩৫০ ওয়ানডেতে ১০টি সেঞ্চুরির সঙ্গে ৭৩টি হাফসেঞ্চুরির মালিক তিনি। ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ফিনিশার হিসেবে পরিচিতিটা হয়ে গেছে তাতেই। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে অন্যতম সফলদের একজন। দেশের হয়ে ১০০ টেস্ট খেলা হয়নি ধোনির। তবে ৯০ টেস্টে পরিসংখ্যান মন্দ ছিল না, ৬ সেঞ্চুরি ও ৩৩ হাফসেঞ্চুরিতে ৩৮.০৯ গড়ে ৪৮৭৬ রান ধোনির, সর্বোচ্চ ২২৪। সেঞ্চুরি ছোঁয়ার সুযোগ ছিল টি-টোয়েন্টিতেও। তবে ৯৮ ম্যাচেই থামল ক্যারিয়ার। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটেও ওয়ানডের মতো ঈর্ষণীয় সাফল্য। ৩৭.৬০ গড়ে ১৬১৭ রান সদ্য সাবেক উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যানের। টেস্টে ভারতকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে (৬০) নেতৃত্ব দেয়া অধিনায়ক ধোনি। তার অধীনে ভারত জিতেছে ২৭টি টেস্ট, হেরেছে ১৮টি, ড্র ১৫। বিরাট কোহলি নেতৃত্বে আসার আগে ভারতকে সবচেয়ে বেশি টেস্ট জয় এনে দেয়া অধিনায়ক ছিলেন ধোনিই। ৩৩ জয় নিয়ে এখন কোহলি ওপরে উঠে গেছেন। তবে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে সবচেয়ে বেশি জয় এনে দেয়ার রেকর্ডে ধোনির ধারেকাছে নেই ভারতের কোনো অধিনায়ক। ২০০ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে ভারতকে ১১০টিতেই জিতিয়েছেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে ৭২ ম্যাচে জয় ৪১টি। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৬ আগস্ট



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3kQF4Ko
August 16, 2020 at 06:38AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top