কলকাতা, ১৮ সেপ্টেম্বর- শরীরে গত বছর থেকেই বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার। চলছে চিকিৎসা। ভেঙে পড়েননি তিনি। উল্টে করোনায় লকডাউনের আবহে এক, দুই নয়, টানা ১৬৬ দিন একের পর এক গান রেকর্ড করে ইউটিউবে আপলোড করে নতুননজির গড়লেন বাংলা তথা ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত। তিনি মনে করেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বাঁচতে হবে। এ জন্য ইচ্ছেটাই আসল। আর তাই আগামী প্রজন্মের শিল্পীদের, উঠতি প্রতিভাদের উদ্দেশ্যে শরীরে ভয়ংকর রোগের বীজ বহন করেও নিজের গান রেকর্ড করে চলেছেন শিল্পী। দীর্ঘ লকডাউনে প্রায়শই নিজের একাধিক অনুরাগী তথা ছাত্র ছাত্রীর অবসাদের কথা কানে আসে স্বাগতার। তাই তাদের উজ্জীবিত করতে গানকেই অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু অসুস্থতাকে কি এইভাবে অস্বীকার করা যায়? উত্তরে আদর্শবাদী গায়িকার স্পষ্ট বক্তব্য , আমার অন্তত জানা নেই কেউ এইভাবে এতদিন টানা গান রেকর্ড করেছেন বলে। ছাত্রছাত্রীদের ভালো রাখতে উদ্যোগ নিয়েছি , তাহলে অসুখের কথা বলতে যাবো কেন ? তবে গত বছরই ক্যান্সার ধরা পড়ার পরে ঘাবড়ে না গিয়ে তিরুপতিতে গিয়ে চুল দান করে এসেছিলেন। তবে তার পরেও অনুষ্ঠান করতে গিয়ে শুনতে হয়েছে ঠাট্টা, বিদ্রুপ। কিন্তু তার কারোর প্রতি কোনো রাগ নেই। শুধু জানিয়েছেন , আমায় যাঁরা ব্যঙ্গ করেছেন , তাদের কাউকে যেন আমার পরিস্থিতির, যন্ত্রণার মধ্যে পড়তে না হয়। তবে তার মতে, খারাপ লাগার কোনো জায়গাই নেই। কারণ, তার একধিক সহকর্মী, অনুরাগী আছেন, যারা তকে ভালোবাসেন। আপাতত লকডাউনের দরুণ চিকিৎসা বন্ধ। কবে শুরু হবে কিছুই জানেন না। তবে বিশ্রাম না নিয়ে ভালো কাজের মধ্যেই ডুবে থেকে যন্ত্রণাকে ভুলে থাকতে চান শিল্পী। নির্দ্বিধায় জানান, শান্তিনিকেতনের বাড়ি বিক্রি করে দিতে চান। কারণ, সেখানে গিয়ে আর থাকতে পারেন না। এখন কলকাতায় যেখানে গান সেখান, সেখানেই থাকেন। লকডাউনের আগে নিবেদিতা স্কুলের সন্ন্যাসীনিদের অনুরোধে করেছিলেন শেষ অনুষ্ঠান। পূজায় আছে আবারও অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ। আছে মুম্বাইয়ের ভাসিতে রামায়ণ গাওয়ার কথা। কিন্তু শরীরের যা পরিস্থিতি তাতে ইমিউনিটির কথা ভেবেই হয়তো এই আবহে আর যেতে পারবেন না বলেই মনে করছেন স্বাগতা। জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ রবি ঠাকুরের গান দিয়ে একটি নতুন রামায়ণ তৈরি করেছেন তিনি। নাম দিয়েছেন রবি রামায়ণ। আরও পড়ুন-কমনওয়েলথে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন জয়া তিনি জানান, রবি কবির এমন অনেক গান আছে যেগুলো তিনি মনে করেন রামায়ণের সঙ্গে সামঞ্জস্য পূর্ণ। যেমন আমরা বেড়া ভাঙি , আমরা অশোক বনে, এটি নেতাজিকে উদ্দেশ্য করে লেখা হলেও হনুমানজির উল্লেখও আছে বলে জানান তিনি। আবার আমার সোনার হরিণ চাই , একই লাবণ্য পূর্ণ প্রাণে ;..এইভাবে খুঁজে খুঁজে বের করেছেন ৪১টি গান। এ ছাড়া কদিন আগেই নিজের কথায় এবং সুরে একটি গান পোস্ট করেছেন ইউটিউবে। ভবিষ্যতে আরও নিজের গান নিয়ে আসার বাসনার কথাও জানান শিল্পী। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস এমএ/ ১৮ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2ZIMrL9
September 18, 2020 at 07:24AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন