মুম্বাই, ২৮ সেপ্টেম্বর- ১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পৃথিবীতে এসেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। তারপর ৭০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গান ও সুরের ইন্দ্রজালে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন তিনি। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) তার বয়স ৯১ বছর পূর্ণ হলো। ভারতের নাইটিঙ্গেলখ্যাত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের বিভিন্ন ভাষায় গাওয়া জনপ্রিয় গানের তালিকা করে শেষ করা যাবে না। সাত দশক ধরে অন্তত ২৫ হাজার গান গেয়েছেন তিনি। ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে এই কিংবদন্তি গায়িকার ব্যক্তিগত ও পেশাদারি জীবন সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক। * ১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের ইন্দোরে মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। তার বাবা পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন শাস্ত্রীয়সংগীত শিল্পী ও মঞ্চ অভিনেতা। মা শেবন্তী ছিলেন গৃহিণী। লতার তিন ছোট বোন আশা ভোঁসলে, ঊষা মঙ্গেশকর ও মীনা মঙ্গেশকর এবং ছোট ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর। * ১৯৪২ সালে বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে ১৩ বছর বয়সী লতাকে পরিবারের আয়ের জন্য হাল ধরতে হয়। এজন্য গান গাওয়া ও অভিনয়ের পথে পা বাড়ান তিনি। * লতা মঙ্গেশকর প্রথম গান গেয়েছিলেন মারাঠি ছবি কিতি হাসাল-এর (১৯৪২) জন্য। দুঃখজনক ঘটনা হলো, চূড়ান্ত সম্পাদনায় বাদ দেওয়া হয় নাচু ইয়া গাদে, খেলু সারি মানি হাউস ভারি কথার গানটি। * মজবুর (১৯৪৮) ছবিতে প্রথম বড় সুযোগ পান লতা মঙ্গেশকর। এ ছবিতে দিল মেরা তোড়া শিরোনামের একটি গান গেয়েছিলেন তিনি। তবে তার প্রথম তুমুল জনপ্রিয় গান হলো মহল (১৯৪৯) ছবির আয়েগা আনেওয়ালা। এতে অভিনয় করেন প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেত্রী মধুবালা। আরও পড়ুন: তৌসিফের নতুন গানচিত্র * পঞ্চাশের দশকে হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পে অপরিহার্য হয়ে ওঠেন লতা মঙ্গেশকর। তখন থেকেই তার ক্যারিয়ার ক্রমে উঁচুতে উঠেছে। তবে পঞ্চাশের দশকে শচীন দেব বর্মণের সঙ্গে দ্বৈরথের কারণে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত তারা একসঙ্গে কাজ করেননি। * শচীন দেব বর্মণের পুত্র রাহুল দেব বর্মণের সুরে অনেক গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিচয় (১৯৭২) ছবির বীতি না বিতাই। এর জন্য ১৯৭৩ সালে সেরা গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। * ১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গানের শিল্পী হিসেবে গিনেস বুকে স্থান পান লতা মঙ্গেশকর। * নব্বই দশকে এ আর রাহমান ও প্রয়াত গজল সম্রাট জগজিৎ সিংয়ের সঙ্গে কাজ করেছেন লতা মঙ্গেশকর। প্রয়াত যশ চোপড়ার প্রায় সব ছবির গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। * গান গেয়ে সর্বোচ্চ খ্যাতি ও সম্মান অর্জন করেছেন লতা মঙ্গেশকর। এর মধ্যে রয়েছে পদ্মভূষণ (১৯৬৯), দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৯), ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার (১৯৯৩), পদ্মবিভূষণ (১৯৯৯), এনটিআর জাতীয় পুরস্কার (১৯৯৯), ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ভারতরত্ন (২০০১)। সবশেষ ২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি ডটার অব দ্য ন্যাশন উপাধি লাভ করেন। * ১৯৯০ সালে নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়েন লতা মঙ্গেশকর। তার প্রযোজনায় গুলজার পরিচালনা করেন লেকিন (১৯৯০) ছবিটি। এতে ইয়ারা সিলি সিলি গানের জন্য তৃতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান লতা। এটি সুর করেন তার ছোট ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর। ৯১ বছর বয়সেও তার জাদুকরী গায়কি নিয়ে সঙ্গীতজগতের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়েই ভাস্বর লতা মঙ্গেশকর। তিনি আরও অনেকদিন বেঁচে থেকে তার ভক্তদের সুরের মুর্ছনায় ধন্য করবেন এটাই সবার কামনা। এন এইচ, ২৮ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/36cEcLl
September 28, 2020 at 08:30AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন