ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর- কাজী সালাউদ্দিন। নি:সন্দেহে দেশের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নামগুলোর একটি। ফুটবলার হিসেবে যতটাই নাম কুড়িয়েছেন সংগঠক হিসেবে ততটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন। প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়েও চতুর্থবারের মতো বাফুফে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। ২০২২ সালে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখানো সংগঠক কাজী সালাউদ্দিন নিজেকে জনপ্রিয়ই মনে করে। কারণ হিসেবে দেখান এই সমালোচনাকেই। আজ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাফুফে ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় হটাও সালাউদ্দিন ঝড় প্রসঙ্গে তিনি এ দাবি করেন। গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নির্বাচনে দাঁড়ানোর কারণসহ ভবিষ্যতে কী কী করার ইচ্ছা রাখেন তারও ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন টানা তিন মেয়াদে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সর্বোচ্চ আসনে থাকা কাজী সালাউদ্দিন। প্যানেল পরিচয়সহ ফুটবল উন্নয়নে কী কী করবে তারও একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকদের কাছে। প্রশ্ন: করোনার কারণে তো গণসংযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না সেভাবে। কোন বিকল্প পরিকল্পনা করছেন কি না? কাজী সালাউদ্দিন: ফোন করতেছি। ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করছি। তাছাড়াও শারীরিকভাবে অনেকেই বাফুফে ভবনে এসে দেখা করছেন। প্যানেলকে পরিচয় করার জন্য একটা প্রোগ্রাম রাখছি। আমি একলা এসে তো লাভ নাই। যদি আমার পুরো প্যানেল না আসে। প্রশ্ন: প্যানেল পরিচিতি নিয়ে আলাদা কোন পরিকল্পনা আছে কী না যেহেতু মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিনে ছোট করে একটা পরিচিতি করেছেন? সালাউদ্দিন: নির্বাচনটা সিম্পলই করবো। ফুটবলের উন্নয়নে তখন এক্সপেন্সিভ কিছু করার চেষ্টা করবো। নির্বাচনটা খুম এক্সপেন্সিভ করার কোন কারণ নেই। ফেডারেশনে তো করতে পারবো না কারণ এটা আলাদা। কোন প্রাইভেট হোটেলে আলাদা করে একটা প্যানেল পরিচিতি প্রোগ্রামের আয়োজন করবো। প্রশ্ন: এবার যে ইশতেহার আসবে সেখানে নতুন কোন পরিকল্পনার কথা থাকছে? কোন চমক থাকছে কী না? সালাউদ্দিন: ইশতেহার যখন আসবে তখনই দেখাটা বেটার না? আমি যদি এখনই আপনাদের বলি তাহলে ওইদিন তো আমাদের বলার কিছু থাকবে না। আমি ফুটবলে চমক বলে কিছু বিশ্বাস করি না। কাজ করে যেতে হবে। আপনি যদি কাজ করতে থাকেন তাহলে চমক আসবে। লাস্ট ১২ বছরে যে ১১ টা লিগ হয়েছে তার চমক হলো ভারতের মাটিতে ৭০-৮০ হাজার লোকের সামনে লাস্ট মিনিটে ড্র। চমক হলো কাতারের মতো দলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সেকেন্ড রাউন্ডে (এশিয়ান গেমস) যাওয়া। চমকটা প্লেয়াররা দেখাবে। ফেডারেশনের কাজটা হলো সঠিক কোচের সরবরাহ, ভাল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, ফুটবলারদের সুযোগ-সুবিধা দেয়া। এবং লিগ, ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপ ধারাবাহিকভাবে করা। প্রশ্ন: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার বিপক্ষে সমালোচনায় সরব। এ ধরনের বিষয়গুলোকে আপনি কীভাবে নিচ্ছেন? সালাউদ্দিন: আমাকে নিয়ে যখন সমালোচনা হয় তার মানে আমি পপুলার। আসলে আমার নিজের ফেসবুক নেই। সুতরাং আমি এসব জানি না। আমি শুনছি। একটা ইন্টারেস্টিং জিনিস দেখেন যদি এক হাজার ডিসলাইক আসলো সঙ্গে আমার নাম লেখা হচ্ছে কাজী সালাউদ্দিন আহমেদ। ১ হাজার জনতো ভুল করতে পারে না। আপনারা জানেন আমার নাম কাজী সালাউদ্দিন। ফেসবুকে একটা প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রশ্ন: এই প্রচারণা বা অপপ্রচারণার বিরুদ্ধে কোন প্রদক্ষেপ নিবেন? সালাউদ্দিন: আমি এতো বছর প্রদক্ষেপ নেইনি। আমি এখানে এসেছি ফুটবলের উন্নয়ন করতে। তারা বলছে আমাকে রিজাইন করতে। রিজাইন করার তো কোন স্কোপ নাই। নির্বাচন আমার ১৫ দিন পরে। আপনি ইলেকশনে জিতে আসেন। আপনি আজকে দেশের প্রেসিডেন্টকে যদি রিজাইন করতে বলেন, ইজ দ্যাট অ্যানি লজিক? আপনি কখন আমাকে রিজাইন করতে বলবেন যখন আমি ইলেকশনটা দিচ্ছি না। আমি নির্বাচন না দিয়ে বসে রয়েছি এখানে। নির্বাচনের সময় পার হয়ে গেছে। আমি নির্বাচন দেয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছি। আমার অপনেন্ট বলে নির্বাচন পেছাও। ৎ প্রশ্ন: বিষয়টা রিজাইন নিয়ে না বিষয়টা হলো আপনি চতুর্থবারের মতো নির্বাচন করছেন সেজন্য... সালাউদ্দিন: কারা করে। আমি টিভি নিউজে দেখেছি। কারা করছে? যারা ফুটবল খেলাই দেখেনি ১০ বছর। রাস্তার থেকে চার পাশটা ছেলে এসে বলছে। আপনি আমাকে ওই পারসোনালিটি দেখান যারা নিয়মিত ফুটবলে দেখছেন। ৫-৬ জন ফুটবলার যারা ঘুরে ঘুরে টিভিতে বক্তব্য দিচ্ছে, দেখবেন একই বক্তব্য দিচ্ছে। আপনি কিন্তু বর্তমান ফুটবলারদের কাছ থেকে কিছু শুনছেন না। যারা এতো কথা বলছে তাদের যদি যোগ্যতা থাকতো তাহলে ইলেকশন করেই আসতো। ১০-২০ ভোট পাইতো না। নির্বাচিত হয়েই আসতো। প্রশ্ন: দুর্নীতির বিষয়ে তারা সোচ্চার হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর রাজপথে নেমেছে ফুটবল ভক্তরা... সালাউদ্দিন: একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার বলি। বাদল রায় আর মহি দুর্নীতির বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়েছে। দুজনের রিপোর্টই প্রথম থেকে শেষ লাইন পর্যন্ত ফুল কপি। তার মানে এটা একটা অফিসেই হচ্ছে। স্বতন্ত্রভাবে আপনি যে চিঠিটা লিখবেন সেটা কি এক হবে? একটা গ্রুপ আমার বিপক্ষে অপপ্রচারণা করছে। আরও পড়ুন- যে কারণে বাফুফে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বাদল রায় প্রশ্ন: বাদল রায় নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন তা গ্রহণ করেনি। ভোটে এটার কোন ইমপ্যাক্ট পড়বে কী না? সালাউদ্দিন: আমি তা জানি না। নির্বাচন কমিশন যদি বিধিমালা অনুযায়ী বাদল রায়ের প্রত্যাহারপত্র গ্রহণ না করে তাহলে বৈধ। নির্বাচন কমিশন একটা স্বতন্ত্র জায়গা। আমরা তাদের উপরে কোন হস্তক্ষেপ করি না। প্রশ্ন: তাহলে বাদল রায় ও শফিকুল ইসলাম মানিক কি আপনার জন্য কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন? সালাউদ্দিন: প্রত্যেক নির্বাচন কঠিন। আমিতো তিনটা ইলেকশন করেই আসছি। আমি কোন নির্বাচনই ইজিতে নেই না। কারণ আমি তো ফুটবলার ছিলাম। ছোট দল বড় দল কোন বাদ বিচার করতাম না। প্রত্যেক ম্যাচই তোমাকে জিততে হবে। প্রশ্ন: আপনার বিরোধী একটা প্যানেল গঠন হয়েছে। সেখানে সভাপতি পদে কেউ নাই। ওই প্যানেল কী আপনার জন্য কঠিন প্রতিপক্ষের পরিবেশ তৈরি করতে পারবে বলে মনে হয়? সালাউদ্দিন: আমিতো সব ভোটারের মন বলতে পারবো না। আমি ওই প্যানেলের সবাইকে জানি। কিন্তু তাদের বিপক্ষে আমার বক্তব্য দেয়া উচিত হবে না। সূত্র: সারাবাংলা এমএ/ ১৬ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/32FZiQh
September 16, 2020 at 05:54PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন