ডেস্ক রিপোর্ট :: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ‘বিয়েপাগল’ আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে এবার মামলা করলেন প্রথম স্ত্রী সোনারা বেগম। করলেন যৌতুক দাবির নালিশও। পাশাপাশি তাকে মারধরেরও অভিযোগ তুলেছেন সোনারা। বলেছেন, বিদেশ থেকে এসে একের পর এক বিয়ে করে বেড়ায় তার স্বামী। আর এসব বউদের নিয়ে সংসার চালাতে তাকে যৌতুকের জন্য মারধর করে। এতে করে তার জীবন বিষিয়ে উঠেছে বলে দাবি করেন সোনারা। এদিকে, সিলেটের আদালত সোনারার আবেদনটি আমলে নিয়ে মামলা গ্রহণের পর ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশকে। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের বটেরতল গ্রামের আব্দুল মান্নান। তিনি সৌদি আরব প্রবাসী। দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে বসবাস করছেন সৌদি আরবে। প্রায় এক যুগ আগে একই এলাকার সোনারা বেগমকে বিয়ে করেন আব্দুল মান্নান। তাদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের নেশা কাটে না মান্নানের। তিনি প্রতি দেড় থেকে দুই বছরের মাথায় ছুটি কাটাতে আসেন দেশে। এসেই প্রথম স্ত্রী সোনারা বেগমকে না জানিয়ে করেন একাধিক বিয়ে। বিয়ে করে ওই বউদের অজ্ঞাত স্থানে রেখে চলে যান। এসব বিষয় নিয়ে পারিবারিক বিরোধ ছিলই। মামলার এজাহারে সোনারা বেগম জানান, বিয়ের সময় আমার পরিবার থেকে প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার মালামাল প্রদান করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আব্দুল মান্নান প্রায় সময় যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। বলে, আরো তিন লাখ টাকা এনে দিতে। এর মধ্যে গোপনে আলমারি থেকে ৮ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে বিক্রি করে দেয়। গত ৩০শে নভেম্বর তিনি স্বামী আব্দুল মান্নানকে স্বর্ণ কোথায় জিজ্ঞেস করলে সে কাঠের রোল দিয়ে নির্মমভাবে প্রহার করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন বলে জানান সোনারা। এ ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন তাকে কোম্পানীগঞ্জ থানা সদরে ভর্তি করেন। এদিকে, ঘটনার পর বিষয়টিকে সামাজিকভাবে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু আব্দুল মান্নান সামাজিক বিচারকে অগ্রাহ্য করে। বৃহস্পতিবার সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিমান চন্দ্র শিকদারের আদালতে সোনারা বেগম মামলা করেন। মামলা আদালত আমলে নিয়ে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশকে এজাহারপূর্ব তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে, সোনারা বর্তমানে দুটি কন্যা সন্তান নিয়ে তার পিত্রালয়ে অবস্থান করছে। সোনারা বেগম জানিয়েছেন, আব্দুল মান্নান ইতিমধ্যে আরো দুটি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন ছাতক উপজেলার নোয়ারাই গ্রামে। ওই গ্রামের তাজির আলীর মেয়ে ফাতেমা বেগমকে। ওই বিয়ের কথা তিনি জানতেন না। তবে, প্রবাস থেকে ফিরে কয়েক দিন বাড়িতে থাকার পর ফাতেমার সঙ্গে বেশি সময় অতিবাহিত করেছেন। এ নিয়ে সোনারার সঙ্গে আব্দুল মান্নানের বিরোধ ছিল। ২০১৪ সালের ২১শে মে বিয়ে করার পর পরবর্তীতে ফাতেমাকে ডিভোর্স দেয়া হয়। এদিকে, ফাতেমাকে বিদায় করার পর এবার দেশে আসেন আব্দুল মান্নান। এসেই তিনি আরো একটি বিয়ে করেছেন। গত ২৪শে নভেম্বর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাটিবহর কোনাপাড়া গ্রামের মৃত জাহিদ খাঁর মেয়ে হাফসা বেগমকে বিয়ে করেন। নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিটের পর হাফছা বেগমকে বিয়ে করেন আব্দুল মান্নান। এবার বিয়ের পর হাফসা বেগমকে আব্দুল মান্নান তার নিজের বাড়িতে নিয়ে উঠেন। গত ১লা ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সিলেটের বিভাগীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্বামীসহ ৩ জনকে আসামি করে ওই মামলা (নং-৬৯৭/২০১৬) করেন। মামলার অপর আসামিরা হচ্ছে, সোনারা বেগমের শাশুড়ি মালেখা বেগম ও মালেখার জামাতা উপজেলার চাটিবহরের হামিদ খাঁ। সোনারা বেগম মানবজমিনকে জানিয়েছেন, আব্দুল মান্নান বহুগামী। সে একের পর এক বিয়ে করে যাচ্ছে। অথচ বিয়ের পর আব্দুল মান্নান তার পিতা নুরুল ইসলামের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিল। এখনো সে টাকার প্রয়োজন হলে তাকে নির্যাতন করে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2gVls9S
December 04, 2016 at 10:29PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.