প্যানেলভুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অপেক্ষমান শিক্ষকদের মানববন্ধন

1স্টাফ রিপোর্টার :: সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অপেমান নিয়োগ বঞ্চিত প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের এক সাথে দ্রুত নিয়োগ প্রদানের দাবীতে নগরীতে মানববন্ধন কর্মসূচি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সিলেট জেলা প্যানেল শিক্ষকবৃন্দ। নগরীর তালতলাস্থ বিভাগীয় উপপরিচালক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের সামনে রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট জেলা প্যানেল শিক্ষকবৃন্দের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি (প্যানেল) সিলেট জেলা শাখার সভাপতি ইমরান খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমানের পরিচালনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য প্যানেল শিক্ষকদের মধ্যে বিপ্লব নাগ, সেন চৌধুরী, মনজিত সরকার, রাসেল আহম্মদ, মনিকা রাণী বণিক, রজত রায়, সঞ্চিতা দেবনাথ, বিলকিস বেগম, রাতুল তালুকদার, পাপলু পাল, কামরুন নাহার প্রমুখ। এছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত প্রায় দু’শতাধিক প্যানেল শিক্ষকগন উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ ও আইন মন্ত্রনালয়ের মতামতের ভিত্তিতে গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মিটিংয়ে সকল প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্ত্বেও সিলেট বিভাগে প্রায় সহস্্রাধিক ও সিলেট জেলায় প্রায় ২৬১ জন প্যানেল শিক অপেমান রয়েছেন। তাই এই সকল নিয়োগ বঞ্চিত প্যানেল শিক্ষকদের অতি দ্রুত নিয়োগ প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান বক্তারা।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ চার বছর ধরে উচ্চ আদালতে আইনী লড়াইয়ে জয়লাভ করেও সিলেট বিভাগের সহস্রাধিক প্যানেল শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছেনা। কোনো কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদ আছে কিন্তু ঐ উপজেলায় প্যানেল শিক নেই। আবার কোন উপজেলায় পদ নেই কিন্তু প্যানেল শিক্ষক আছেন। নিয়ম অনুযায়ী এক উপজেলার প্যানেল শিক্ষক অন্য উপজেলায় নিয়োগ হয় না। এতে শিার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে সুষ্ঠুভাবে শিালাভ থেকে। তবে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলেছেন, এই সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে উপজেলাগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে। সারা দেশের তুলনায় বর্তমানে সিলেট বিভাগে অপোমাণ প্যানেল শিক্ষকদের সংখ্যা বেশী হলেও বিভাগের একাধিক উপজেলায় ২৫০টিরও বেশী পদ খালি রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট উপজেলায় প্যানেল শিক্ষক না থাকায় শূণ্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। সলেট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, সিলেট জেলায় ২৬১টি জন প্যানেল শিক বাকী আছে। অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী সিলেট জেলায় প্যানেল শিকদের শূণ্য পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে একাধিক উপজেলায় সদ্য জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয় পদ খালি না থাকায় সকল শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। আবার সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার, কোম্পানীগঞ্জ, বিশ্বনাথ উপজেলায় সদ্য জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়ে অর্ধশতাধিক পদ শূণ্য থাকলেও এসব উপজেলায় শিক্ষক না থাকায় এসব শূণ্য পদে নিয়োগ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না।
কর্মকর্তারা মনে করেন, উপজেলা সমন্বয় করা হলে, সিলেটে অপেমাণ প্যানেল শিক্ষকদের ও সংখ্যা কমে যাবে।
সিলেট সদর উপজেলার প্যানেলভুক্ত শিক্ষক রাসেল আহমদ জানান, চাকরী না পাওয়ায় তিনি পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক সমিতি (প্যানেল) সিলেট জেলা সভাপতি মো. ইমরান খান বলেন, দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষ করে রায় আমরা পেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ আমাদের নিয়োগ নিয়ে তালবাহানা করছেন। তিনি বলেন, প্রধামন্ত্রী শেখ হাসনিা ও মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, আইন মন্ত্রণালয়সহ সবাই আমাদের সকলকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য মত দিয়েছেন। এখন অধিদপ্তর গড়িমসি করে নিয়োগ বন্ধ করে রেখেছে।
প্যানেল শিক্ষকদের মামলার আইনজীবী সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, আদালত রায়কারীদের নিয়োগ দানের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় ২৯ এপ্রিল পাঁচ সদস্যের কমিটির বৈঠকে আদালতের আদেশ পাশ কাটিয়ে সকলকে নিয়োগ প্রদানের জন্য সুপারিশ করে। অথচ হাইকোর্ট রায়প্রাপ্ত প্রায় ৫ হাজার শিক এখনো নিয়োগের অপোয় আছেন। আদালতের রায়প্রাপ্তদের নিয়োগ দেওয়া হলে এতদিনে সকল প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগ সম্পন্ন হয়ে যেত।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগের উপ পরিচালক তাহমিনা খাতুন বলেন, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভাগের প্রতিটি জেলায় প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে যে সব উপজেলায় সদ্য জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শূণ্যপদের অপেমাণ প্রার্থীদের সংখ্যা বেশী হওয়ায় সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা অপেমাণ সকল শিকের নিয়োগ একসঙ্গে সম্পন্ন করতে পারছেন না। আবার প্যানেল শিক্ষক না থাকায় একাধিক উপজেলায় সদ্য জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়গুলোতে পদ শূন্য থাকলেও সমন্বয়ের ব্যাপারে অধিদপ্তরের নির্দেশনা না থাকায় শূণ্য পদগুলোতে নিয়োগ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2g808Nb

December 04, 2016 at 10:15PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top