দিনে পুলিশ, রাতে মডেল

modelযুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ফ্রিপোর্টে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন সামান্থা জিপুলভিদা। বয়স ৩২ বছর। দেখতে বেশ সুন্দরী। অন্তত, অপরাধীরা তেমনটাই তাঁকে বলে থাকেন। তাঁরা না জেনে বললেও খুব একটা ভুল বলেন না। কারণ, দিনে পুলিশ হলেও রাতে তিনি অন্তর্বাস ও স্নান পোশাকের মডেল।

নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামান্থার আবেদনময়ী বিভিন্ন পোজের ছবি দেখার জন্য তাঁর ইনস্টাগ্রামে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বহু মানুষ। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা এক লাখ ১০ হাজারেরও বেশি। মডেলিং করে তিনি গত বছর আয় করেছেন দেড় লাখ ডলারের মতো।

৫ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার সামান্থা ২০১০ সালে পুলিশে যোগ দেন। তিন বছর পর অন্তর্বাস ও স্নান পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠানে কাজ করা এক বন্ধু তাঁকে মডেল হওয়ার আমন্ত্রণ জানান। বন্ধুর অনুরোধে তিনি রানওয়েতে হাঁটেন। এভাবেই মডেল হিসেবে তাঁর যাত্রা শুরু। শুধু সৌন্দর্যে নয়, শারীরিক কসরতেও কম যান না তিনি। আর এভাবেই মডেল ও পুলিশ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

সামান্থা জানালেন, তিনি যে মডেল হিসেবে কাজ করেন, বিড়ম্বনা এড়াতে সেটা পুলিশ বিভাগকে তিনি প্রথমে জানাননি। তবে নিউইয়র্কের সরকারি একটি ওয়েবসাইটে তাঁর পরিচয় প্রকাশ করে বলা হয়, তিনি নিউইয়র্কের ফ্রিপোর্টে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন।

সুন্দরী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কীভাবে অপরাধীদের সামাল দেন?—জানতে চাইলে সামান্থা বলেন, অপরাধীদের সঙ্গে নারী পুলিশের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ কম। তবে অপরাধীরা মনে করেন, নারীরা কমজোর। নারীদের প্রতি তাই আগ্রাসী মনোভাব দেখান তাঁরা।

পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় কোনো ধরনের মেকআপ নেন না বলে জানালেন সামান্থা। এ ছাড়া চেষ্টা করেন মডেল হিসেবে তাঁর যে দৈহিক সৌন্দর্য, তা যেন প্রকাশ না পায়। তাঁর ভাষায়, ‘পুলিশ হিসেবে পুরুষালি বৈশিষ্ট্য যাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সেটা দেখানোর জন্য আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।’ তবে শেষ রক্ষা হয় না। অপরাধীরা প্রায়ই তাঁকে বলেন, ‘তুমি আমাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করতে পারো।’

আসামি ধরতে গিয়ে মজার ঘটনা সম্পর্কে সামান্থা বলেন, একবার ম্যানহাটন থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে একটি গ্রামে তিনি ও তাঁর এক সহকর্মী টহল দিচ্ছিলেন। এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে মারধর করে পালাচ্ছিলেন। তাঁরা দুজন তখন ওই ব্যক্তিকে ধাওয়া করেন। কিন্তু ব্যক্তিটি ধরা দিচ্ছিলেন না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সামান্থা। তখন তাঁকে আরও খেপিয়ে তুলতে দৌড়াতে দৌড়াতে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘এই জীবনে যত পুলিশ দেখেছি, আপনি সবচেয়ে সুন্দরী।’

সামান্থার জন্ম ডোমেনিকা রিপাবলিকে। তাঁর বয়স যখন ৫ বছর, তখন তাঁর পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে যান। তাঁর একটি বোন আছে। তিনি ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটসের একটি বৃত্তি পেয়ে পড়াশোনা করেন। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি হফস্ট্রা ইউনিভার্সিটি থেকে ফাইনান্সে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

সামান্থা ইংল্যান্ড, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া ও নিকারাগুয়ায় মডেলিং করেছেন। তরুণীদের উৎসাহিত করার একটি কাজে তিনি নিজেকে জড়িয়েছেন। এ ছাড়া থাইল্যান্ডে টেকসই জ্বালানি প্ল্যান্ট নির্মাণের একটি প্রকল্পে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

মডেলিং করতে গিয়ে খোলামেলা পোশাক পরার বিষয়ে সামান্থার স্পষ্ট জবাব, ‘আমি মনে করি, এটি আপত্তিকর কিছু না। বরং এটা নারী দেহের সৌন্দর্যকে উদ্‌যাপন। কারও কাছে যদি আপত্তিকর মনে হয়, নিজের চোখটা বন্ধ রাখুন।’



from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2kdw6tK

January 28, 2017 at 08:00PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top