মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় জমজমাট হয়ে উঠছে কোচিং বাণিজ্য। ফলে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীরাই কোচিং এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোচিং বাণিজ্যের সংঙ্গে সংঙ্গে প্রাইভেট পড়ুয়া শিক্ষাথীদের মধ্যে চলছে নম্বর পাওয়ার প্রতিযোগিতাও। এতে করে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের প্রকৃত শিক্ষা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি শিক্ষকদের প্রাইভেট ও নম্বর বাণিজ্যের কারনে প্রকৃত মেধাবীরা মেধার মূল্যায়ন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বলে উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিন পরিদর্শন কালে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের কোচিং বাণিজ্য সেন্টারে সয়লাব রয়েছে। উপজেলা সদরের পুরান বাজার ও নতুন বাজার এলাকায় প্রায় ২০টি কোচিং সেন্টার রয়েছে। ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে কোচিং সেন্টার। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কোচিং সেন্টার হলো- পাইওনিয়ার কোচিং সেন্টার, ভিশন কোচিং সেন্টার, ইউনাইডেট কোচিং সেন্টার, এডুকেয়ার কোচিং সেন্টার, প্রত্যাশা কোচিং সেন্টার, জিনিয়াস কোচিং সেন্টার, লার্নিং পয়েন্ট, ইউকে বাংলা।
এসব কোচিং সেন্টারে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী রয়েছেন। একেকটি কোচিং সেন্টারে ব্যাচে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এতে করে কোচিং এ এসেও ক্লাশের মতো পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। তাই অনেক স্বচ্ছল পরিবারের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের জন্য উপজেলার বেশ ক’টি শিক্ষা প্রতিষ্টানের ভালো শিক্ষকদের অধিক বেতন দিয়ে বাসা-বাড়িতে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন বলেও জানা যায়। এ ছাড়া তারা উপজেলার বিভিন্ন কোচিং সেন্টারেও নিয়মিত ক্লাশ নিয়ে থাকেন।
অনেক শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে মানসস্মত শিক্ষা দান না করায় ছাত্র-ছাত্রীরা কোচিং এর ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য হচ্ছে। কোচিং নির্ভরশীল হওয়ায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে দূরত্ব দিনদিন বেড়ে চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন অভিভাবক জানান, কিছু সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষা প্রতিষ্টানকে ব্যবসা প্রতিষ্টান হিসেবে গড়ে তুলেছেন। ফলে তারা বিদ্যালয়ের ক্লাশ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ক্লাশে সময়ের অপব্যবহার করছে এবং শিক্ষার্থীদের বাধ্য করছে তাদের কাছে কোচিং পড়তে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিক্ষকদের ক্লাশ নিতে প্রচন্ড অনীহা রয়েছে। তবে অধিকাংশ অভিভাবকরাই অভিযোগ করেছেন কোচিং বানিজ্যের কারণেই শিক্ষকদের এই মনোভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে দরিদ্র মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীরা সঠিক পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে মাধ্যমিক পর্যায়টি শিক্ষার্থীরা অভাব অনটনের মধ্যে পার করলেও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এসে প্রাইভেট পড়তে না পাড়ায় থমকে দাড়াচ্ছে তাদের শিক্ষা জীবন। কিছু আর্থিক স্বচ্ছল পরিবারের ছেলে মেয়েরা কোচিং পড়তে সক্ষম হলেও অসহায় দরিদ্র মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীরা আর্থিক সংকটের কারণে কোচিং সেন্টারে পড়তে সুযোগ পাচ্ছেনা । তবে সচেতন মহলের দাবী প্রাইভেট ও কোচিং বানিজ্য বন্ধ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঠিক ভাবে পাঠদান করলে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ার উপর নির্ভশীলতা কমে যাবে। উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুকৌশলে এভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বানিজ্য আর কত দিন চলবে, কর্তৃপক্ষের কাছে এমন প্রশ্ন আজ উপজেলার সকল দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের।
পাইওনিয়ার কোচিং সেন্টারের পরিচালক মো.নাসির উদ্দিন বলেন, সারা দেশে কোচিং সেন্টার রয়েছে। সরকার যদি সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেয়, তাহলে আমাদের কোচিং সেন্টারটিও বন্ধ করে দেব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, কোচিং সেন্টারগুলোর তালিকা সংগ্রহ করে শিঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2kdbJL1
January 24, 2017 at 06:32PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন