কলকাতা, ১৮ জানুয়ারি- ভাঙড়ের ঘটনা নিয়ে কোণঠাসা রাজ্যের তৃণমূল সরকার। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কী করবেন মুখ্যমন্ত্রী? ভাঙড়ের ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখতে পাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানেন তাঁরই নেতৃত্ব দেওয়া সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ছায়া দেখা যাচ্ছে ভাঙড়ে। কৃষি জমিই আন্দোলনের মূলে। আর সঙ্গে পুলিশের অত্যাচার ও গুলিতে মৃত্যু। ভাঙড়েও শাসক দলের রাশ আলগা হয়ে গেছে। তার সুযোগেই বহিরাগত-রা প্রবেশ করছে এলাকায়। এই সমস্যার সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা তাঁর পূর্বসূরী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো ভুল করতে চাইছেন না। মমতা নিচ্ছেন ধীরে চলো নীতি। ভাঙড়ের পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার সকালে পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও প্রকাশ্যে ঘটনা নিয়ে কোনও বক্তব্য পেশ করেননি। কী করতে চাইছেন মমতা? সূত্রের খবর, প্রশাসনিক স্তরে তিনি বহিরাগতদের চিহ্নিত করতে বলেছেন। যে সব অতিবাম নেতারা ভাঙড়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশও গেছে নবান্ন থেকে। আর কোনও বহিরাগত যাতে এলাকায় ঘাঁটি গাড়তে না পারে তার ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। এখনই পুলিশকে আর বাড়াবাড়ি না করতে বলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ তাঁর ঘোষিত নীতি গায়ের জোরে কৃষকদের জমি কাড়া হবে না কোথাও। তিনি চান না বাম আমলের কোনও কালো দাগ এই সরকারের গায়ে লাগুক। গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানোর কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার ভাঙড় থেকে পুলিশ প্রত্যাহার করে নিলেও, এলাকা একেবারে পুলিশ বা প্রশাসন-শূন্য না করে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার কথা বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে পুলিশ যাতে গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে কোনও গুলি না চালায়, সেই নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে তিনি দলীয় নেতাদেরও যথেষ্ট তিরস্কার করেছেন। স্থানীয় বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা, প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম ও তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়কেই কাঠগড়ায় তুলছে দলীয় নেতৃত্ব। কিন্তু দলীয় ব্যর্থতার প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদের শুধু বলেন, সবাইকে দলের অনুশাসন মেনে চলতে হবে। সবটাই মুখ্যমন্ত্রী নিজে দেখছেন বলে মন্তব্য এড়াচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। আপাতত এই ক্ষেত্রেও ধীরে চলো নীতি নিচ্ছেন মমতা। কাউকে শাস্তি না দিয়ে দলের সহ-সভাপতি মুকুল রায় ও আরাবুল ইসলামকে ভাঙড়ে যেতে বলেছেন। প্রসঙ্গত মুকুল শিবিরের নেতা হলেন আরাবুলের বিরোধী কাইজার আহমেদ। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই জটিল যে মুকুলকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন আরাবুলের সাহায্য নিয়েই ভাঙড় পুনরুদ্ধার করতে হবে। আর বিধায়ক রেজ্জাককেও এলাকায় থাকতে বলেছেন মমতা। কারণ তিনি জানেন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই ভাঙড়ের এই অবস্থা হয়েছে। আপাতত পরিস্থিতি শান্ত করে ধীরে ধীরে ভাঙড়কে পুনর্দখল করাই তৃণমূলের লক্ষ্য। আর/১০:১৪/১৮ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2k0mIq4
January 19, 2017 at 04:53AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন