বিশ্বনাথে মাটি বিক্রির ফলে উর্বরতা হারাচ্ছে কৃষি জমি

Biswanath (Sylhet) Photo=24,01,17

মোঃ আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: প্রতিনিয়তই চলছে সিলেটের বিশ্বনাথে কৃষি জমির মাটি বিক্রি। মাটি বিক্রির ফলে উর্বরতা হারাচ্ছে কৃষি জমির। ফলে যেমন কমছে ফসল উৎপাদন, তেমনি নিচুঁ হচ্ছে কৃষি জমিগুলোও। এর পাশাপাশি কৃষি জমিতে ঘর-বাড়ি নির্মাণের ফলে দিন দিন কমছে জমির পরিমানও। বেশি ভাগ ক্ষেত্রেই উপজেলায় থাকা ইটভাটাগুলোতে ইট নির্মাণের জন্য এসব কৃষি জমির মাটি বিক্রি হয়ে থাকে। তাছাড়া বাসা-বাড়ি নির্মাণের সময় নিচুঁ জমিকে ভরাট করতেও প্রয়োজন হয় বিপুল পরিমাণ মাটির।

উপজেলার বিভিন্ন নদী ও খাল-বিল ভরাটের ফলে জমিতে চাষাবাদের জন্য পানি সেচ ও নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কৃষকদেরকে। অনেকে আবার দীর্ঘদিন জমিতে চাষাবাদ করতে না পেরেও জমির মাটি বিক্রি করে থাকেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার প্রায়ই অঞ্চলেই কৃষি জমির মাটি বিক্রির প্রবনতা রয়েছে। ফলে সময়ের সাথে নিচুঁ হচ্ছে কৃষি জমি আর ভরাটের কারণে উচুঁ হচ্ছে নদী ও খাল-বিলগুলো।

উপজেলা বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, নদী ও খাল-বিল ভরাটের ফলে চাষাবাদের সময়ে জমিতে পানি সেচের পর্যাপ্ত পরিমাণ সুযোগ সুবিধা না থাকার কারণে দিন দিন অনাবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা বাঁধাগ্রস্থ হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।

উপজেলার কারিকোনা গ্রামের কৃষক শহিদ মিয়া বলেন, কৃষি জমির মাটি বিক্রির প্রবনতা কমাতে হলে পানি সেচ ও নিষ্কাশনের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। দিনের পর দিন জমিতে চাষাবাদ করতে না পেরে অনেক কৃষক জমির মাটি বিক্রি করে আর্থিক ক্ষতি পোষানোর চিন্তা করেন। আর জমিতে পানি সেচ ও নিষ্কাশনের সুযোগ সুবিধা থাকলে কৃষকরা সে জমিগুলো কিভাবে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায় সেই চিন্তা করবেন।

আল-ফাল্লাহ বিকস্ ফিল্ডের পরিচালক মনির আহমদ বলেন, নদী বা খাল থেকে মাটি উত্তোলনের অনুমতি বা সুযোগ নেই। ফলে ইট নির্মাণের জন্য আমাদেরকে (ইটভাটা ব্যবসায়ী) বাধ্য হয়েই অধিক মূল্যে মাটি ক্রয় করতে হয়। যদি নদী বা খাল থেকে মাটি উত্তোলনের অনুমতি থাকলে, সরকারকেও নদী বা খাল পুনঃখননের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হত না, আর আমাদেরকেও অধিক মূল্যে মাটি ক্রয় করতে হতনা। এতে সর্বোপরি দেশের ইটভাটা ব্যবসায়ীরা লাভবান হতেন।

উপজেলা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক মধু মিয়া বলেন, নদী-খালগুলো ভরাটের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আমাদের কৃষি। উন্মুক্তভাবে দেশের নদী ও খালগুলো থেকে মাটি উত্তোলনের অনুমতি বা সুযোগ থাকলে যেমন কমত কৃষি জমির মাটি বিক্রির প্রবনতা, তেমনি সরকারকেও এগুলো পুনঃখননের জন্য বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হতনা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলীনূর রহমান বলেন, মাটি বিক্রির ফলে কৃষি জমির উর্বরতা হ্রাস পায়। ফলে কমে যায় ফসল উৎপাদন। জমিতে পানি সেচ ও নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত পরিমাণ সুযোগ সুবিধা না থাকার কারণে এখানে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রির প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।



from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2jmBkTn

January 24, 2017 at 09:06PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top