‘মাজা জুই লা-অৎতে স্কাউটিং’ অর্থাৎ ‘সুন্দর জীবনের জন্য স্কাউটিং’ স্লোগানকে সামনে রেখে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বরেন্দ্রভূমির গহিনে অবস্থিত প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আদিবাসী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুইদিনব্যাপী ‘সুরিম ক্যাম্প’ অর্থাৎ ‘সূচনা ক্যাম্পের’ আয়োজন করা হয়।
শক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে আনন্দদায়ক পরিবেশে হাতে কলমে শিক্ষা প্রদাণের উদ্দেশ্যে এ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। বাবুডাইং আদিবাসী বিদ্যালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেন একদল প্রাক্তন ও বর্তমান রোভার সদস্যরা। এরা সকলেই প্রথম আলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্য। সঙ্গে ছিলেন বন্ধুসভার আরো কয়েকজন। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও ছোট পাহাড় সাদৃশ্য বাবুডাইং’র টিলা এলাকায় এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বরেন্দ্র ভূমির প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক, আতœনির্ভরশীল ও দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে উঠতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এ সূচনা ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের ২৪ জন শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ ক্যাম্পের উদ্বোধন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানাই চন্দ্র দাস, গ্রামের মোড়ল কার্তিক কোল টুডু, মাধব কোল হাঁসদা, দেবেন কোল হাঁসদা, ঘুরে ঘুরে বিদ্যাদানকারী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তরিকুল আলম, শিক্ষক ও সমাজসেবক আমিনুল ইসলাম, বন্ধুসভার জহিরুল ইসলাম মাখন, মতিউর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন দিলু প্রমূখ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহাতাবু জলসা অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতা চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। এতে প্রত্যেক উপদল দুটি করে বিষয় উপস্থাপন করে। আনন্দ উচ্ছাস নিয়ে এ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন বাবুডাইংসহ পাশের দুটি গ্রামের প্রায় সকল নারী-পুরুষ।
দুইদিনে চারটি সেশনে মোট ১২ টি ‘চ্যালেঞ্জ’এ অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা। তাঁদের তিনটি উপদলে ভাগ করে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতিটি দলে একজন শিক্ষক ও একজন রোভার সদস্য নেতৃত্ব প্রদান করেন। প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শিক্ষা প্রদান করা হয়। ‘পাঠশালা’ চ্যালেঞ্জ স্কাউটিং আন্দোলন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা প্রদান করেন স্কাউট লিডার ও বন্ধুসভার প্রশিক্ষণ সম্পাদক সাঈদ মাহমুদ। ‘এসো আবাস গড়ি’ চ্যালেঞ্জে তাবুকলা ও তাবুবাস সম্পর্কে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেন স্কাউট লিডার হাসানুল বান্না। অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে সুপ্রভাত (বিপি পিটি ও এ্যারোবিকস), ওয়াটার এ্যাক্টিভিটিজ (পানিতে হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা), অনুমান ও পর্যবেক্ষণ, রক ক্লাইম্বিং (রশি বেয়ে পাহাড়ে আহরণ), হিল ট্র্যাকিং (পাহাড়ি এলাকা পদযাত্রা), আন্ডার পাস (মাটির নিচে সুড়ঙ্গ পারাপার), খাড়ি বা ছোট নদী পারাপারের জন্য রশি দিয়ে সাঁকো বানানো, অগ্নি নির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান, সমাজ উন্নয়ন, ব্যাক উডস ম্যান কুকিং (হাঁড়ি-পাতিল ও চুলা ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে ভাত-রুটি, মাছ-মাংস, ডিম ও আলু-বেগুন রান্না করা) প্রভৃতি। এসকল প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করেন বন্ধুসভার বন্ধু ও রোভার আবুল কালাম আজাদ, আলী উজ্জামান নূর, সোনিয়া খাতুন, সাবিনা ইয়াসমিন, সারমিন খাতুন, সারমিন সুলতানা, আবু হেনা, নয়ন আহমেদ, আহসান হাবীব, বিকাশ প্রামাণিক, সিয়াম আলী। শিক্ষকদের মধ্যে সহযোগিতা করেন সুদর্শন পাল, বিমল হাঁসদা, লুইশ মুর্মু ও নির্মল সরেন।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও আশেপাশের এলাকায় প্রথমবারের মতো প্রশিক্ষণার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের এসব কসরত দেখতে ভিড় জমায় গ্রামের নারী, পুরুষ ও শিশুরা। আনন্দে মেতে উঠে সকলেই। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে গ্রামের মোড়ল কার্তিক কোল টুডু বলেন, ‘ইসকুলটা ছিল বোলে এগল্যা হামরা জীবনে পোরথম দেখলাম। হামাদের ব্যাটা-বেটিরা কত সুন্দর নাটক করলো। দড়ি দিয়্যা সাঁকো বানাইলো। আরো ম্যালা কিছু শিখলো। দেখ্যা হামাদের মনটা জুড়িয়্যা গেছে। দুদিন ধর্যা খুব আনন্দ হোইলো। এগল্যা জানি আবার হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৭-০১-১৭
শক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে আনন্দদায়ক পরিবেশে হাতে কলমে শিক্ষা প্রদাণের উদ্দেশ্যে এ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। বাবুডাইং আদিবাসী বিদ্যালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেন একদল প্রাক্তন ও বর্তমান রোভার সদস্যরা। এরা সকলেই প্রথম আলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্য। সঙ্গে ছিলেন বন্ধুসভার আরো কয়েকজন। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও ছোট পাহাড় সাদৃশ্য বাবুডাইং’র টিলা এলাকায় এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বরেন্দ্র ভূমির প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক, আতœনির্ভরশীল ও দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে উঠতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এ সূচনা ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের ২৪ জন শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ ক্যাম্পের উদ্বোধন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানাই চন্দ্র দাস, গ্রামের মোড়ল কার্তিক কোল টুডু, মাধব কোল হাঁসদা, দেবেন কোল হাঁসদা, ঘুরে ঘুরে বিদ্যাদানকারী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তরিকুল আলম, শিক্ষক ও সমাজসেবক আমিনুল ইসলাম, বন্ধুসভার জহিরুল ইসলাম মাখন, মতিউর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন দিলু প্রমূখ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহাতাবু জলসা অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতা চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। এতে প্রত্যেক উপদল দুটি করে বিষয় উপস্থাপন করে। আনন্দ উচ্ছাস নিয়ে এ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন বাবুডাইংসহ পাশের দুটি গ্রামের প্রায় সকল নারী-পুরুষ।
দুইদিনে চারটি সেশনে মোট ১২ টি ‘চ্যালেঞ্জ’এ অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা। তাঁদের তিনটি উপদলে ভাগ করে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতিটি দলে একজন শিক্ষক ও একজন রোভার সদস্য নেতৃত্ব প্রদান করেন। প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শিক্ষা প্রদান করা হয়। ‘পাঠশালা’ চ্যালেঞ্জ স্কাউটিং আন্দোলন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা প্রদান করেন স্কাউট লিডার ও বন্ধুসভার প্রশিক্ষণ সম্পাদক সাঈদ মাহমুদ। ‘এসো আবাস গড়ি’ চ্যালেঞ্জে তাবুকলা ও তাবুবাস সম্পর্কে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেন স্কাউট লিডার হাসানুল বান্না। অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে সুপ্রভাত (বিপি পিটি ও এ্যারোবিকস), ওয়াটার এ্যাক্টিভিটিজ (পানিতে হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা), অনুমান ও পর্যবেক্ষণ, রক ক্লাইম্বিং (রশি বেয়ে পাহাড়ে আহরণ), হিল ট্র্যাকিং (পাহাড়ি এলাকা পদযাত্রা), আন্ডার পাস (মাটির নিচে সুড়ঙ্গ পারাপার), খাড়ি বা ছোট নদী পারাপারের জন্য রশি দিয়ে সাঁকো বানানো, অগ্নি নির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান, সমাজ উন্নয়ন, ব্যাক উডস ম্যান কুকিং (হাঁড়ি-পাতিল ও চুলা ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে ভাত-রুটি, মাছ-মাংস, ডিম ও আলু-বেগুন রান্না করা) প্রভৃতি। এসকল প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করেন বন্ধুসভার বন্ধু ও রোভার আবুল কালাম আজাদ, আলী উজ্জামান নূর, সোনিয়া খাতুন, সাবিনা ইয়াসমিন, সারমিন খাতুন, সারমিন সুলতানা, আবু হেনা, নয়ন আহমেদ, আহসান হাবীব, বিকাশ প্রামাণিক, সিয়াম আলী। শিক্ষকদের মধ্যে সহযোগিতা করেন সুদর্শন পাল, বিমল হাঁসদা, লুইশ মুর্মু ও নির্মল সরেন।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও আশেপাশের এলাকায় প্রথমবারের মতো প্রশিক্ষণার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের এসব কসরত দেখতে ভিড় জমায় গ্রামের নারী, পুরুষ ও শিশুরা। আনন্দে মেতে উঠে সকলেই। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে গ্রামের মোড়ল কার্তিক কোল টুডু বলেন, ‘ইসকুলটা ছিল বোলে এগল্যা হামরা জীবনে পোরথম দেখলাম। হামাদের ব্যাটা-বেটিরা কত সুন্দর নাটক করলো। দড়ি দিয়্যা সাঁকো বানাইলো। আরো ম্যালা কিছু শিখলো। দেখ্যা হামাদের মনটা জুড়িয়্যা গেছে। দুদিন ধর্যা খুব আনন্দ হোইলো। এগল্যা জানি আবার হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৭-০১-১৭
from Chapainawabganjnews http://ift.tt/2j2sGXW
January 07, 2017 at 09:41PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.