মোঃ আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথের জানাইয়া গ্রামের লিটন মিয়া ও আঙুর মিয়ার পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা-হালমার ঘটনায় শুক্রবার রাতে থানায় উভয় পক্ষ দুটি মামলা দায়ের করেছেন। আঙুর মিয়া বাদি হয়ে প্রতিপক্ষের ৭জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩/৪জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি রেখে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন-জানাইয়া গ্রামের সাজিদ উল্লার ছেলে সিরাজুল ইসলাম, রহিম উল্লার ছেলে আসক আলী, মৃত আবদুল কাদিরের ছেলে বাবুল মিয়া, আবদুল মালিকের ছেলে সুজন মিয়াম রজন মিয়াম রুবেল মিয়া, এলাই মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া। মামলা নং ১১।
মামলার এজাহার বাদি উল্লেখ করেন, আসামি সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। শুক্রবার বিকেলে বিশ্বনাথ নতুনবাজারস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে পিছনে বাদির নির্মাণাধীন কলোনীর শ্রমিক আছাব আলী, ফারুক মিয়াসহ অন্যান্যাদের বাদির ভাই আসক আলী মজুরি দেয়ার সময় আসামি সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে সকল আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের হাতে থাকা,দা, লোহার পাইপ, লাঠি-সোঠা ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র সজ্জিত হয়ে আমাদের কলোনীতে আসক আলীর ওপর হামলা করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। আসামি সুজন বাদির ভাইয়ের পকেট থেকে নগত ১৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এসময় বাদির পক্ষের আত্বচিৎকারে আশাপাশের লোকজন ছুটে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায় বলে এজাহারে উল্লেখ রয়েছে।
অপরদিকে, লিটন মিয়ার পক্ষে জানাইয়া গ্রামের মৃত রহিম উল্লার ছেলে আসক আলী বাদি হয়ে প্রতিপক্ষের ৮জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০/১২জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি রেখে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন-জানাইয়া গ্রামের মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে আলাল আহমদ, সেবুল, নাসির মিয়া, একই গ্রামের মর্তুজ আলীর ছেলে আঙ্গুর আলী, ইমরান,আসক আলী, ইনুছ আলীর ছেলে শিপন, জুনাব আলীর ছেলে আজিজুর রহমান। মামলা নং ১২।
মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, বাদির চাচা সিরাজুল ইসলাম স্বপরিবারের লন্ডনে বসবাস করেন। তাহার অবর্তমানে বাদি প্রবাসীর বাসাসহ যাবতীয় সম্পত্তি দেখাশুনা করে আসছেন। আসামি আলাল রাস্তাঘাটে বাদিকে পেলে জানতে চায় তার চাচা কবে দেশে আসবেন। ঘটনার ২/৩দিন পূর্বে আসামি আলাল বাদিকে বলেন তোমার চাচার সঙ্গে দরকার ছিল। কোন সময় বাসায় পায় যায়না। আসামির কথা সরল বিশ্বাসে বাদি তার চাচা লন্ডন থেকে এসেছেন বলে জানান এবং রাত প্রায় ৯টায় বাসায় তিনি থাকেন বলে আসামি আলালকে বলেন। গত ১৭ জানুয়ারী রাত প্রায় ১০টায় আসামি আলাল এর নেতৃত্বে সকল আসামি দেশীয় রামদা, ডেগার, লোহার পাইপ,লাঠি-সোটা,দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র সজ্জিত হয়ে বাদির চাচা লন্ডন প্রবাসী সিরাজুল ইসলামের বাসায় হামলা করে। এসময বাসায় থাকা টিভিসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এবং ফার্নিচার ভাংচুর করে ৮0 হাজার টাকা ক্ষতি করে এবং আলমীরা ভেঙে ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায় বলে বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও প্রবাসীর বাসায় হামলার ঘটনার জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জানাইয়া গ্রামের আসক আলীর ওপর প্রতিপক্ষ হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হন আসক আলী। আহত অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তার অবস্থায় আশংকাজনক বলে জানাগেছে। আসক আলীর ওপর হামলার ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এতে উপজেলা সদরের নতুনবাজার ব্যবসায়ীরা আতংকিত হয়ে দোকান পাঠ বন্ধ করে দেন। নতুনবাজারে অবস্থিত দুটি স্ট্যান্ডের গাড়িগুলো নিরাপথ স্থান নিয়ে যায় হয়। শনিবার সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিলে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এলাকা থেকে পুলিশ মোতায়েন প্রত্যাহার করা হয়।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ মনিরুল ইসলাম পিপিএম উভয় পক্ষ পাল্টা-পাল্টি মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকা অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পরে পুলিশ মোতায়েন প্রত্যাহার করা হয়। তবে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে তিনি জানান।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2jLIiT3
January 21, 2017 at 08:58PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.