ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি- স্বপ্ন তার অভিনেত্রী হওয়ার। আর সে পথেই হাঁটছেন। যদিও জানেন,পথটা বন্ধুর। তবে ছায়া হয়ে পাশে আছে আত্মবিশ্বাস, যা তাকে তাড়িয়ে বেড়ায় ভালো কাজগুলো করার। কে তিনি? তার নাম সামিয়া অথই। বর্তমানে পড়াশোনা করছেন রাজধানীর আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ [এআইইউবি] বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইংরেজি বিষয় নিয়ে অনার্সে পড়ছেন। ছোটবেলা থেকেই মগ্ন ছিলেন নাচে। তখন থেকেই এক ধরনের স্বপ্নের আঁকিবুকিতে পথ চলা শুরু। আর মেয়ের আগ্রহও বাবা-মাকে অনেক বাড়তি সাহস যোগাতে শুরু করে একসময়। এরপর তাকে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হলো ভারতেশ্বরী হোমসে। সেখানেই নাচের হাতেখড়ি। এরপর নাচ তো জীবনের অংশ হয়ে যাওয়া। কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে পা রাখলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুরুর দিনগুলোতে নিজের দেখা স্বপ্নগুলো আরও বেশি জীবন্ত হয়ে উঠে। কি করবেন, এই প্রশ্ন তাকে আরও বেশি ভাবিয়ে তোলে। নিজের প্রশ্নবানে নিজেই জর্জরিত হতে থাকেন। এরইমধ্যে একদিন জানতে পারলেন একটি নাচের রিয়েলিটি শোয়ের খবর। সেটি হলো-ম্যাঙ্গোলী চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে সিজন থ্রি ২০১৬। সামিয়ার জীবনে নতুন আরেকটি পালক যোগ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু না। সেরা দশ থেকেই তাকে বিদায় নিতে হলো। কিন্তু এখানেই দমে যান নি। সামিয়ার অভিনয়ে নেই কোন পুথিগত বিদ্যা। তাতে কি! রয়েছে নিজের প্রতি দৃঢ় আস্থা। যা শোবিজে চলার পথে পাথেয় হয়ে থেকেছে। একটি রিয়েলিটি শোয়ের সেরা দশ থেকে বাদ পড়া। বড় এক ধরনের ধাক্কাই বটে। কিন্তু তারপরও নিজেকে কিভাবে সামলে নিয়ে পথ চলছেন সামিয়া অথৈ? তিনি বলেন,আমি যখন সেরা দশ থেকে বাদ পড়লাম, তার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমার প্রধান কাজের জায়গা তো অভিনয়। সেখানে নাচ একটি অনুসঙ্গ মাত্র। যা আমাকে সহযোগিতা করবে। তাই এ নিয়ে অতটা মন খারাপ হওয়ার মতো কিছু নেই। যদিও আমি লোকনৃত্য, কথক শিখেছি। শোবিজে আসার মূল কারণটা হচ্ছে, নাচ তো করবোই। এর পাশাপাশি অভিনয়ও করব। এরপর ২০১৬ সালেই গ্রামীণ ফোনের পরপর তিনটি বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করি। যা আমার আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেয়। বিজ্ঞাপনে কাজের সূত্র ধরেই অভিনয়ের প্রস্তাব আসে সামিয়ার কাছে। তারপর থেকেই শোবিজের যাত্রাটা আরও সুখকর হয়ে উঠে তার। এরপর ছোট পর্দায় অভিষেক। তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটক মায়া বর্তমানে এনটিভিতে প্রচার হচ্ছে। পরিচালনা করেছেন ফেরদৌস হাসান রানা। এছাড়া রোকেয়া প্রাচীর পরিচালনায় একটি টেলিফিল্মেও অভিনয় করেছেন। সেটি খুব শিগগিরই চ্যানেল আইতে প্রচার হবে। আর প্রাণের একটি বিজ্ঞাপনেও মডেল হয়েছেন। সেখানে তার সহ-শিল্পী চিত্রনায়ক রিয়াজ। তবে সম্প্রতি আদনান আল রাজিবের পরিচালনায় ভাটিকার একটি বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন। যা কিছুদিনের মধ্যেই টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচার শুরু হবে। আদনান আল রাজিবের পরিচালনায় নতুন বিজ্ঞাপনটি করতে গিয়ে বেশ কিছু দারুণ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানান সামিয়া। তার কাজের অভিজ্ঞতার জায়গা সম্পর্কে তার ভাষায়, সমৃদ্ধ করেছে। সামিয়ার সবচেয়ে কাছের বন্ধু তার বাবা-মা। কাজের ক্ষেত্রে যারা প্রতিনিয়তই সাহস জুগিয়ে চলেন। ভাল কাজ করতে আত্মপ্রত্যয়ী করে তোলেন। সামিয়া বলেন, আমার বাবা-মা সব সময় চাইত আমি কিছু একটা করব। আমার আত্মবিশ্বাসটা তারা সব সময় দেখত। নাচ তো করাই হয়, কিন্তু অভিনয়ই হচ্ছে আমার মূল লক্ষ্য। এখন তো অনেক নতুন মুখ শোবিজে কাজ করছেন। তার থেকে নিজেকে কিভাবে আলাদাভাবে উপস্থাপন করবেন? সামিয়া বলেন, তবে অন্য সবার থেকে আমাকে যদি আলাদা হতে হয়- আমি বলব আমি আসলে অনেকের চাইতে অভিনয় কিংবা এক্সপ্রেশন এর বিষয়টা ভালো জানি। কারণ এ সময়ের যারা অভিনয় করছেন তাদের সবার কাজই কমবেশি দেখা হয়। আর নাচটা হচ্ছে আমার অভিন্ন একটা গুণ। যেটা আমার অভিনয়ে অনেকটাই সহযোগিতা করে। আমি চাই সবাই আমাকে অভিনেত্রী হিসেবেই চিনবে। এতো গেলো ছোট পর্দার খবর। যদি কখনও সুযোগ আসে বড়পর্দায় অথই-এর দেখা মেলার সম্ভাবনা আছে কী? প্রশ্নটা শুনে খানিটা নড়েচড়ে বসলেন সামিয়া। খানিকটা সময় চুপ। বিরতি ভেঙে বললেন,আমার ইচ্ছে তো আছেই বড় পর্দায় অভিনয় করার। সে লক্ষ্যেই তো পথ চলছি। আমার আত্মবিশ্বাস আছে। আর এজন্য নাচ, বিজ্ঞাপন, নাটক করে নিজেকে দেখে নিতে চাই, কতটা সামনে এগুতে পারি। মানে ঝালিয়ে নিচ্ছি। কারণ প্রস্তুতিরও বিষয় আছে। সামিয়াকে একজন নতুন অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে নানান বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। একটা সময় যা শুনে এসেছেন শোবিজ সম্পর্কে অনেকটা সময় গিয়ে তাকেও হার মানায়। তবে সামিয়াও দমে যাওয়ার মানুষ নন। কিন্তু যখন শুনেন, ও তো নতুন একটা মেয়ে, পারবে কি? পারবে না। তখন খারাপ লাগে সামিয়ার। তবে তিনি মনে করেন, আগে তো অভিনয়ের প্লাটফর্মটা দিতে হবে। তারপর না হয় সমালোচনা! আর/১০:১৪/২৪ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2jatVDj
January 25, 2017 at 05:12AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top