কুমিল্লার বার্তা ডেস্ক ● কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খালিদ সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে মাত্র তিন আসামি কারাগারে আছেন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দুই মাস আগে জমা দেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু আজও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, গত ৫ ডিসেম্বর কুমিল্লার আদালতে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন মার্কেটিং চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য বিপ্লব চন্দ্র দাস, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রূপম চন্দ্র দেবনাথ, নৃবিজ্ঞান সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সজন বরণ বিশ্বাস, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গণিত ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী রেজাউল ইসলাম, ইংরেজি তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য জাহিদুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী ও আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, হিসাববিজ্ঞান ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায় অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত নাথ, বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন সালমানপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মাছুম, অর্থনীতি অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও নজরুল হলের ছাত্রলীগের সদস্য মাসুদ আলম ও লোকপ্রশাসন চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্য আতিকুর রহমান।
গত ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ নভেম্বর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে সিন্ডিকেটের এক সভা হয়। সিন্ডিকেটের সভায় সাইফুল্লাহ হত্যার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনার বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত করা হয়। সভায় স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার পর বিশেষ সিন্ডিকেট সভা ডেকে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনার পক্ষে মত দেন বেশির ভাগ সদস্য। এরপর আর সিন্ডিকেটের সভা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আলী আশরাফ বলেন, আগামী সিন্ডিকেটের সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে এজেন্ডা থাকবে। এ ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ জুলাই রাতে শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে মোমবাতি প্রজ্বালন শেষে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। এতে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহর মাথায় গুলি লাগে। ১ আগস্ট ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
১ আগস্ট সকাল সাড়ে আটটায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকে। ওই সভায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২৬ অক্টোবর বিকেলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে দলীয় অন্তঃকোন্দল ও দরপত্র নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া গত ১৯ অক্টোবর কুমিল্লার ৯ নম্বর আমলি আদালতে হত্যা মামলা করেছেন নিহত ছাত্রনেতার মা। এ মামলায় বিপ্লব চন্দ্র দাসকে প্রধান আসামি করা হয়। বর্তমানে বিপ্লব চন্দ্র দাস, মাছুম ও মাসুদ আলম কারাগারে আছেন। অন্যরা জামিনে রয়েছেন।
The post খালিদ হত্যা; চার্জশিটে থাকা ১০ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি কুবি appeared first on Comillar Barta™.
from Comillar Barta™ http://ift.tt/2iNIH3E
January 04, 2017 at 10:01AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন