ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা। বর্তমান সভানেত্রী মিনারা আলমের চাহিদা মতে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘এক তরফা’ এ সম্মেলনের তারিখ জানেন না খোদ সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত।
সম্মেলনের আর মাত্র দুইদিন বাকি থাকলেও এখনো পর্যন্ত নিশাতের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি কেন্দ্র থেকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সভানেত্রী মিনারা আলমের একক ইচ্ছাতে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাতকে এখনো পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে কোনো চিঠি পর্যন্ত দেয়া হয়নি। পাশাপাশি নিশাতের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের যোগাযোগও করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এর ফলে প্রায় ১৯ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ সম্মেলনটিকে উদ্দেশ্যেমূলক হিসেবে চিহ্নিত করে বিভক্ত হয়ে পড়েছে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ। সম্মেলকে ঘিরে মুখোমুখি হয়ে পড়েছে দুই গ্রুপ। তবে জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ জেলা আওয়ামী লীগ সমর্থক নারী সমাজের নেতৃত্বদানকারী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাতের নাম ব্যবহার করে সম্মেলন জমিয়ে তুলতে ইতোমধ্যেই পোস্টার-নিমন্ত্রণপত্র বানানো হয়েছে। এক পক্ষের এ প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে আরও বেশি উত্তাপ ছড়িয়েছে।
সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগেরও মত নেই। তবে সভানেত্রীর এক আত্মীয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের আরেক নেতা এই সম্মেলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অুনষ্ঠিত হয়। সে সময় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৪৫ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। এরেদ মধ্যে সভানেত্রীর পরিবারেরও কয়েকজন সদস্য রয়েছেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ওই কমিটি বিশিষ্ট হলেও বাকি শূন্য পদগুলো পূরণ হয়নি দেড়যুগেও।
ইতোমধ্যে ৪৫ সদস্যের ওই কিমিটির কয়েকজন মারা গেছেন। পাশাপাশি শারীরিক অসুস্থতাসহ নানা কারণে নিস্ক্রিয় আরও কয়েকজন সদস্য। এ অবস্থায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সম্মেলন করার তাগিদ দেন। অবশ্য জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীরা জানিয়েছেন, তারা আরও আগেই বেশ কয়েকবার কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সম্মেলনের তারিখ চেয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্র থেকে বিষয়টি নিয়ে কোনো সাড়া মিলেনি। এখন হুট করেই সভানেত্রী মিনারা আলমের কাছে একটি তারিখ দিয়ে দেয়া হয়েছে। আর এ তারিখে সম্মেলন করতে এখন তিনি একাই তৎপর হয়ে ওঠেছেন। অভিযোগ উঠেছে পরিবারের সদস্য আর নিজের অনুগত নিস্ক্রিয়দের নিয়ে সভানেত্রী পকেট কমিটি করার জন্যই তাড়াহুড়ো করে এ সম্মেলন করছেন।
তবে হুট করে সম্মেলন না করার জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাতের নেতৃত্বে জেলা, উপজেলা ও শহর মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্মেলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারা কেউ সম্মেলনে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন। সম্মেলনে পেছানোর দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন তারা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত বলেন, সম্মেলনের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।
আমার নাম ব্যবহার করে সম্মেলন নিয়ে তৎপর হওয়া পক্ষটি পোস্টার-নিমন্ত্রণপত্রসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্র থেকে সম্মেলন নিয়ে আমাকে কোনো চিঠি দেয়া হয়নি। সম্মেলন নিয়ে দলীয় কোনো সভাও করা হয়নি। তাই প্রস্তুতি নিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ সম্মেলন করার জন্য সম্মেলনের তারিখ পেছাতে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছি। তবে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মিনারা আলম সাংবাদিকদের জানান, কেন্দ্র থেকে সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত তারিখেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
from Comillar Khabor – Comilla News http://ift.tt/2lPayol
February 25, 2017 at 10:12AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন