গাজীপুরে সাফারি পার্কে ইজারাদারদের হামলায় ঢাবির ২০ শিক্ষার্থী আহত

hগাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ঢোকার সময় ইজারাদারের লোকদের হামলায় শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে। এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এক নারীসহ ৫ জনকে আটক করেছে। তারা হলেন- আব্দুল লতিফ (৩৫), কবির হোসেন (৩৫), মোস্তফা (৩২), সাইফুল ইসলাম (৩৮) ও হেলেনা (৪৮)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি (হেলথ ইকোনমিক্স) ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদসহ শিক্ষার্থীরা জানান, বন অধিদফতর থেকে বিশেষ ছাড় প্যাকেজ নিয়ে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিভাগের ১৮৫ শিক্ষার্থী চার শিক্ষকের নেতৃত্বে শিক্ষা সফরে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আসেন। তারা পার্কে ঢোকার সময় ইজারাদার ও তার লোকেরা শিক্ষার্থীদের কাছে পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেখতে চায়। প্রথম বর্ষ ছাড়া অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা পরিচয় পত্র দেখালে তাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের এখনও কোনো পরিচয়পত্র ইস্যু না হওয়ায় ভর্তির রশিদ ও লাইব্রেরি কার্ড দেখান তারা। এরপরও তাদের ভেতরে ঢুকতে বাঁধা দেয়া হয়। এ নিয়ে ইজারাদারের লোকজন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে পার্কের গেইটের ইজারাদার ও শ্রীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম সফিক এক ছাত্রীর গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করে। অন্য শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে পার্কের গেইটের ইজারাদার সফিক ও শ্রীপুর উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক কবির হোসেনের নেতৃত্বে তাদের লোকজন লাঠিসোটা ও ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর ও টাকা মোবাইলসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে।
হামলায় হেল্থ ইকোনমিক্স বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্যা, দ্বিতীয় বর্ষের রাহাত, মাস্টার্সের ফাহাদসহ অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হন। হামলাকারীরা এসময় কয়েক শিক্ষার্থীকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে শ্রীপুর মডেল থানা পুলিশ ও সালনা ক্যাম্প থেকে র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে পার্কের ভেতরে নিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখে। এরপর পার্কের চিকিৎসা কেন্দ্রে আহতদের চিকিৎসা দেয়া হয়।

মাস্টার্স ২য় সেমিস্টারের ছাত্র আনিসুর রহমান জানান, বন বিভাগের অনুমতি ও পরিচয়ের বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও সফিক ও কবির তাদের লোকজন নিয়ে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় এবং ইনস্টিটিউটের দুই ছাত্রীসহ ২০জনকে লাঠিপেটা করে। গত বছরও ইজারাদারের লোকজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বৈধ অনুমতি নেয়ার পরও এ ধরনের ঘটনা দু:খজনক। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। স্থিরচিত্র দেখে তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনায় এক নারীসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

গেইটের ইজারাদার সফিকুল ইসলাম জানান, পার্কে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীদের কাছে পরিচয়পত্র চাইলে তারা গেইটের কর্মচারীদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা শুরু করে। তা দেখে আমি এগিয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা পেছন থেকে আমার ওপর হামলা চালায়। এতে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। তবে এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

ট্যুরিস্ট পুলিশ ঢাকা জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর জিয়াউল হক জানান, সপ্তাহে শুধুমাত্র শুক্রবার পার্ক এরিয়াগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল থাকে। ঢাকা থেকে ৫/৬ জনের একটি টিম পাঠানো হয়। ঢাকা জোনে বিভিন্ন পিকনিক এরিয়াতে সাপ্তাহিক সিডিউল ভাগ করে টিমগুলো পাঠানো হয়। শনিবার ও অন্যান্য দিন গাজীপুরের শ্রীপুর থানা পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে।



from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2l4LiKr

February 11, 2017 at 08:33PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top