তিন মোড়লের যুগ শুরু হয়েছে তিন বছর হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বসময় ক্ষমতা ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার সে নীতিতে দুটি বিশ্বকাপও (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) হয়ে গেছে। মোড়লগিরি শেষ করার প্রস্তাবও চলে আসছে এবার। দুবাইয়ে আইসিসির মিটিংয়েই শেষের সুর বাজতে পারে বিগ-থ্রি নীতির। তবে তার আগে এ নীতিতে আইসিসির আয়ের প্রস্তাবিত ভাগ বণ্টনের চিত্র দেখে প্রশ্ন উঠতেই পারে, কীসের তিন মোড়ল, মোড়ল শুধু ভারত! ২০১৪ সালে পাস হওয়া বিগ-থ্রি নীতিতে ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আইসিসির সম্ভাব্য আয়ের ভাগ বণ্টনের একটা বর্ণনা দেওয়া হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, আগামী ৮ বছরে আইসিসির আয়ের ২৭.৪ শতাংশই যাবে বিসিসিআই, ইসিবি ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কাছে। যেখানে ক্রিকেটে মূল সদস্য আছে ১০টি, সঙ্গে সহযোগী দলগুলোর সংখ্যা ৬ থেকে ১২-র মধ্যে সব সময় ঘোরাফেরা করে, তখন মাত্র তিনটি দেশের এমন বিপুল অর্থ নিয়ে যাওয়াটা বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে সবার। এ তিনের মধ্যকার ভাগ বাঁটোয়ারাটাও ছিল অদ্ভুত। অস্ট্রেলিয়া পাবে ২.৭ ভাগ অর্থ, যুক্তরাজ্যের ভাগে ৪.৪ ভাগ। আর ভারত একাই নিয়ে নেওয়ার কথা ২০.৩ ভাগ! অর্থাৎ প্রস্তাবিত নীতিতে ৮ বছরে আইসিসি থেকে ভারত নিয়ে নিত ৫৭১.৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার (বাংলাদেশি মূল্যমানে সেটা চার হাজার ৫৪৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা)! আর তার সঙ্গী দুই মোড়ল (যদিও টাকার অঙ্ক দেখে ভারতের সঙ্গে একই ব্র্যাকেটে আর মোড়ল বলা যাচ্ছে না) ইসিবি ও সিএ পাবে যথাক্রমে এক হাজার ৩৮১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ও এক হাজার ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সে তুলনায় বাংলাদেশ কত পেতে পারত এ নীতিতে? মাত্র ৫৪৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশের তুলনায় আইসিসি থেকে ভারত বেশি পেত প্রায় সাড়ে আট গুণ! জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট পেত আরও কম, ৫২৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। প্রথম থেকেই তিন মোড়লের বিরোধিতা করা পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৭৪৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আর নতজানু ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কান বোর্ড করেছিল ৬৪৬ কোটি লাখ টাকা পাওয়ার আশা। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটও বঞ্চিত হতো, পেত ৬০৬ কোটি টাকার একটু বেশি। আর ক্রিকেট সম্প্রসারণ ও সহযোগী দেশগুলোর জন্য রাখা হয়েছি ১ হাজার ৬৭০ কোটি টাকার বাজেট। তবে এই হিসাবের বাইরেও আরেকটি তহবিল ছিল, টেস্ট ক্রিকেট ফান্ড। তিন মোড়ল ছাড়া বাকি সাতটি দেশ পেত এ ফান্ডের সুবিধা। মজার ব্যাপার, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একজন ভারতীয়ই তিন মোড়লকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আইসিসির চেয়ারম্যানের পদে বসেই শশাঙ্ক মনোহর নির্দেশ দেন তিন মোড়ল নীতি পরীক্ষা করে দেখার জন্য। এমনকি ভারতের আয়ের অংশটুকু কমিয়ে দেওয়ার পরামর্শও নাকি দিয়েছিলেন মনোহর। তবে অঙ্কটা কি শতকরা ৬ ভাগ (বর্তমানে ২০.৩ ভাগ) নাকি আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক (২৭০ মিলিয়ন ইউএস ডলার) সেটা নিয়ে দুরকম তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। তবে মনোহরের প্রস্তাবিত সে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন পরীক্ষা করে দেখা হবে এবারের আইসিসি মিটিংয়েই। মজার ব্যাপার, এ প্রতিবেদনের পাঁচজনের দলে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বোর্ড প্রধানও আছেন। এখনো পর্যন্ত যে ইঙ্গিত তাতেই, দুই মোড়ল মিলে তিন মোড়ল বাতিলের প্রস্তাবই দিচ্ছেন! সূত্র: ক্রিকইনফো। এফ/১৭:০৫/০৩ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2k2JwGa
February 03, 2017 at 11:03PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top