অপহরণ নাকি প্রেম ❀ অবশেষে বয়স পরীক্ষায় গেল শিবগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঠাকুরবাড়ির মেয়ে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌর এলাকার ঠাকুরবাড়ির এক হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে বাড়ি থেকে ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ঘটনাকে ঘিরে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৮ বছর বয়সী ওই মেয়েটি ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পর তার বাবা শ্রী মনি প্রামাণিক শিবগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করলেও উদ্ধার হওয়ার পর ওই মেয়ের দাবি ‘সে অপহরণের শিকার নয়। ভালবেসে ঘর ছেড়েছে’। মেয়েটির এমন দাবির প্রেক্ষিতে সৃষ্ট জটিলতায় পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে সেফ হোমে পাঠিয়েছে সেই সঙ্গে তার বয়স পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্র বলছে, বয়স পরীক্ষায় সে পুর্ণাঙ্গ বয়সের হলে তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, শিবগঞ্জ পৌরসভার রতœপাড়া গ্রামের ঠাকুরবাড়ির ওই মেয়েটি গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়। এরপর তার পিতা শিবগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের আটরশিয়া গ্রামের শামসুল হক মেম্বারের ছেলে কাউসার আলী ওই মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে প্রত্যাখাত হয়ে ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি কাউসার তার দলবল নিয়ে মেয়েটিকে বাবুপুর এলাকা থেকে অপহরণ করে।
মেয়েটির পিতার অভিযোগের পর পুলিশ ওই মেয়েকে ১৭ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার করে এবং তার পিতার অভিযোগটি মামলায় রূপান্তর করে। যার নম্বর ৩৭। তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি।
শিবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আব্দুল সালাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ ডটকমকে জানান, মেয়েটিকে উদ্ধারের পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সে জানায়, ‘ ভালবাসার সর্ম্পকের জের ধরে সে কাউসারের সঙ্গে গেছে এবং তাদের বিয়ে হয়েছে’। প্রেক্ষিতে আদালতের মাধ্যমে ১৯ ফেব্রয়ারি মেয়েটিকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন সেফ হোমে পাঠানো হয়েছে।
উদ্ধারের পর মেয়েটিকে বাবা কাছে হস্তান্তর না করে সেফ হোমে কেন এমন প্রশ্নের জবাবের এসআই আব্দুস সালাম বলেন, ‘ মেয়েটি তার বাবার বাড়ি যেতে চায়নি এবং তার পিতাও তাকে ওই সময় নিতে চায়নি’।
এদিকে মেয়ের বাবার অভিযোগ, তার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়ার পর কাউসারের বাবা শামসুল হক মেম্বাকে বিষয়টি জানানো হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। জোরপুর্বক অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শান্তির মোড় এলাকার একটি কাজি অফিসে জোরকরে ‘কবুল’ করিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, থানায় মামলা করার পর কাউসার তার সেলফোন থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বারবার নানান রকম হুমকী প্রদান করছে। এঘটনায় পরিবার নিয়ে আত্মংকের মধ্যে আছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ আমার মেয়ের সঙ্গে ২৬ ফেব্রুয়ারি কথা হয়েছে সে জানিয়েছে সে ধর্মান্তরিত হয়নি। জোর করে তাকে কবুল করানো হয়েছে। হুমকীর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা। আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছে’।
তবে এসআই আব্দুস সালাম বলেন, ‘যেহেতু মেয়ের বাবা তাকে ১৮ বছর বয়সী হিসেবে মামলা দিয়েছে। ১৮ বছর বয়স মনে শিশু সে বিবেচনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা নেয়া হয়েছে। ওই মেয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে ‘আমি এ্যাডাল্ট’। এ নিয়ে কন্ট্রাডিকশন সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতি মেয়ের বয়স জাচাই করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সিভিল সার্জনের কাছে আবেদনও করা হয়েছে। সিভিল সার্জন অফিসের অনুমনি স্বাপেক্ষে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার বয়স পরীক্ষা করা হবে’।
তিনি জানান, বয়স পরীক্ষায় সে পুর্ণাঙ্গ বয়সী হলে তার সিদ্ধান্তেই ব্যবস্থা গ্রহণ হবে। আর পুর্ণাঙ্গ না হলে মামলা অনুযায়ী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ২৭-০২-১৭


from Chapainawabganjnews http://ift.tt/2lrr9LC

February 27, 2017 at 11:05PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top