সিডনি, ২৭ ফেব্রুয়ারি- সিডনির বাঙালি কমিউনিটি ইনকের উদ্যোগে বায়ান্নর ভাষাশহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি রোববার সন্ধ্যায় ইঙ্গেলবার্ন কমিউনিটি হলে এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ম্যাককুয়ারি ফিল্ড আসন থেকে নির্বাচিত এমপি অনুলাক চান্টিভং। এম লুৎফর রহমান ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলা শিক্ষার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠান শুরু করেন। অনুলাক চান্টিভং তার বক্তব্যে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান এবং ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের কথা বিনম্রভাবে স্মরণ করেন। তিনি আরও বলেন, তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়েই আজ সারা পৃথিবীতে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ ছাড়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন মাহমুদ হোসেন। সমাপনী বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত হোসেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল লিভারপুল স্যাটারডে কমিউনিটি বাংলা স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা। দলটি আসে বাংলা প্রসার কমিটির তত্ত্বাবধানে ও রুমানা সিদ্দিকীর পরিচালনায়। দেশীয় পোশাকে পুথি পাঠে অংশ নেয় ঐহিক, রঙ্গন, রাইক, রাইম, প্রহর, রায়ান ও ইনান। একক ও যৌথভাবে গান পরিবেশন করে তাসফিয়া, ঈশান, মাহিরা, লিও। নৃত্য পরিবেশন করে নুসাবা। আবৃত্তি করে ঐহিক। খুবই গোছানো এই পর্বটি ছিল সকলের কাছে উপভোগ্য। এরপর রোকসানা বেগমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সিডনির বুকে সবচেয়ে পরিচিত ছোট বন্ধুদের সাংস্কৃতিক দল কিশলয় কচিকাঁচা বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষাভিত্তিক ছড়া, নাচ ও গানের পরিবেশনা ছিল এককথায় অনবদ্য। ইংরেজি ভাষাভাষী সমাজের মধ্যে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশ কমিউনিটির শিশুকিশোরদের মাতৃভাষায় বিশুদ্ধ উচ্চারণে ও সগৌরবে ছড়া, কবিতা আবৃত্তি, যৌথকণ্ঠে দেশের গান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনায় দর্শক খুঁজে পেয়েছেন আবহ বাংলার ঐতিহ্য ও কৃষ্টিকে। এই পর্বের শেষ দিকে বিষয়ভিত্তিক বিবেচনায় পুরস্কার পায় বাংলাদেশ নিয়ে চিত্রাঙ্কনে আদ্রিতা, রানিয়া, সুমেরা, জানান, সাফিনা ও জয়া। বাংলা ভাষা চর্চায় প্রহর ও রঙ্গন, কিবোর্ডে আনন্দ ও একক সংগীতে লিও। এ ছাড়া কবিতায় ঐহিকের প্রশংসা করা হয়। পুরস্কার বিতরণ করেন এম লুৎফর রহমান, অনুলাক চান্টিভং, মাহমুদ হোসেন, আবদুল জলিল ও কামরুল ইসলাম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশ নিয়ে গান পরিবেশন করেন রুনু রফিক, মাছুদ হোসেন মিঠুন, লুৎফা খালেদ, সীমা আহমেদ, শারমিন পাপিয়া, রোকসানা বেগম, আনিসুর রহমান ও সাজ্জাদ আনাম চৌধুরী। এ ছাড়া কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি কবিতাটি আবৃত্তি করেন রুমানা সিদ্দিকী। সবশেষে সমবেত কণ্ঠে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের পর আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি ও ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায় গান পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির পরিসমাপ্তি টানা হয়। অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন নাজমুল খান ও সেলিমা বেগম। তবলায় ছিলেন সাকিনা আক্তার। মন্দিরায় ছিলেন লোকমান হাকিম। সাউন্ড সিস্টেম পরিচালনায় ছিলেন মাছুদ হোসেন মিথুন ও সাজ্জাদ আনাম চৌধুরী। আপ্যায়নে ছিলেন কাজী আশফাক ও ইয়াকুব আলী। খাবার সরবরাহ করে বোম্বে গ্রিল। বাংলাদেশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আর/১০:১৪/২৭ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2m3gHxL
February 28, 2017 at 05:23AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন