হত্যার পর বস্তাবন্দি ছিল নিষ্পাপ মেঘলা আর মালিহা @ অবশেষে লাশ উদ্ধার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নামোশংকরবাটি এলাকার ফতেপুর গ্রামে নিখোঁজের দু’দিন পর স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও মেহজাবিন আক্তার মালিহার বস্তাবন্দি লাশ অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয় যুবকদের উদ্যোগে বাড়ি বাড়ি তল্লাশির আয়োজনেই বেরিয়ে আসে বস্তাবন্দি লাশ। হত্যার পর বস্তাবন্দি অবস্থায় তাদের রাখা হয়েছিল ফতেপুরের ভ্যান চালক ইয়াসিন আলীব বাড়ির খাটের নিচে। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, রোববার দুপুরে ফতেপুর গ্রামের প্রবাসী মিলন রানার মেয়ে সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও আব্দুল মালেকের মেয়ে মেহজাবিন আক্তার মালিহা স্থানীয় কিন্ডার গার্টেন স্কুল ‘ছোটমনি বিদ্যানিকেতন’ থেকে ফিরে বাড়ির বাইরে খেলতে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিল। অনেক খোঁজাখুজির পর তাদের পাওয়া না গেলে ওই দিন বিকালে পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ওই রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে ফতেপুর সংলগ্ন তেলিপাড়া ঘোষপাড়া গ্রামের বাবু শম্ভু’র মেয়ে গীতা রানী (১৮) নামে একজনকে আটক করে। আটক গীতা রানী পুলিশের কাছে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে। গীতার দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ কয়েক স্থানে অভিযানও চালায়। তবে, তার দেয়া তথ্যে সন্ধান পাওয়া যায়নি মেঘলা আর মালিহার।
ক্লাশ ওয়ানের শিক্ষার্থী মেঘলা ও নার্সারি শ্রেণীর শিক্ষার্থী মালিহার হটাৎকরে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। গীতার দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশের অভিযান ব্যর্থ হওয়ার মুখে স্থানীয় যুবকদের উদ্যোগে চিত্র যায় পাল্টে।
মঙ্গলবার শিশু দু’টির সন্ধানে স্থানীয় যুবকরা ফতেপুরের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এমন উদ্যোগের মাঝে ফতেপুরের ভ্যান চালক ইয়াসিন আলী (৭০) বাড়ি থেকে বস্তাবন্দি দু’ শিশুর লাশ পাওয়া যায়। স্থানীয় যুবকরা জানায়, তারা যখন বস্তা খুলতে বলে তখন তাদের জানানো হয়েছিল, ‘বস্তার মধ্যে কুমড়া আছে’। এ কথায় যুবকদের সন্দেহ হলে তারা জোরকরে বস্তুা খুলে। বস্তা খুলতেই বেরিয়ে আসে শিশুদের মাথা।
বস্তাবন্দি দু’ শিশুর লাশ পাওয়া যাবার খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার নারী পুরুষের ঢল নামে পুরো ফতেপুর এলাকাজুড়ে। স্বজন ও স্থানীয়দের কান্না আর আহজারিতে আকাশ ভারি হয়ে উঠে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যায় স্থানীয় বিডিআর সদস্য তাজেমুল হকের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ফতেপুরের ইয়াসিন আলী (৭০), তার স্ত্রী তানজিলা খাতুন (৫০), পুত্রবধু লাকি বেগম (৩২) কে আটক করা হয়।
এদিকে, দু’ শিশুর লাশের সন্ধান পাওয়ার পর স্থানীয় জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। লাশ উদ্ধার হওয়া বাড়ির মালিকসহ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসির দাবি পথরোধ করে রাখে। তারা আসামী নিয়ে যাওয়ার পথরোধ করে এখনই শাস্তি দাবি করেন। এ সময় পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলামসহ নেতৃত্বাস্থানীয় কয়েকজন জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করে। এ পর্যায়ে র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে আসামীদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পুলিশ সুপার জানিয়েছে, কি কারণে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে প্রাথমিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনার কারণ দ্রুত বের করে আসামীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।
তিনি জানান, বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য সিআইডিকেও অবহিত করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয়রা বলছে, নিহত দু’ শিশুর দেহে স্বর্ণালংকার ছিল। এই স্বর্ণালংকারের কারণেই হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে।



চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৪-০২-১৭


from Chapainawabganjnews http://ift.tt/2lMksUh

February 14, 2017 at 10:43PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top