বিশ্বনাথে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সংবাদ সম্মেলন

pic1

বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ‘উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কমান্ডর আবদুল ওয়াহিদ। জনৈক মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান লোকজন কর্তৃক সম্পূন মিথ্যা, বানোয়াট ও প্রতিহিংসামূলকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে স্মারকলিপি দাখিলের প্রতিবাদে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন নেতৃবৃন্দ।

লিখিত বক্তব্য বলা হয়, ১৯৯৪ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের এক সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সংসদের কার্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হয়। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর আড়াই শতক ভূমি বরাদ্ধ করা হয়। লীজকৃত ভূমি সমজিয়া পাওয়ার পর বানিজ্যিক ব্যবস্থা’সহ উপজেলা কমান্ডের কার্যালয় ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আলোকে কাজ শুরু করা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা আর্থিকভাবে সঞ্চল না থাকায় কার্যালয় নির্মাণের অর্থ যোগানোর জন্য সেস্থানে দোকান কোঠা নির্মাণ করে এবং সেই দোকান কোঠাগুলো লীজ প্রদান করে অর্থ সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

কার্যালয় ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর পর তৎকালীন উপজেলা কমান্ডার তৈয়ব আলীর সাথে দেখা করে সিলেট শহরে বসবাসকারী বিশিস্ট মুক্তিযোদ্ধা দাবিদার ‘আবদুল মালিক, মনির উদ্দিন চৌধুরী, খলিলুর রহমান, আজাদ খান, মৃত হামিদ খান’ ভবন নির্মাণ নিয়ে আলোচনা করেন ও কিছু প্রস্তাব রাখেন। তাদের সেই প্রস্তাব সংগঠনের স্বার্থের অনকূলে না হওয়ায় কমান্ডের পরবর্তি সভায় তা সর্বসম্মতিক্রমে নাকোচ করা হয়। মালিক গংদের প্রস্তাব নাকোচ হওয়ার কারণে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বিবেদ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে ‘কমান্ডার তৈয়ব আলী ও কমিটির সদস্যদের’ বিরুদ্ধে জায়গা বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অপপ্রচার শুরু করেন। এসব অপপ্রচারের সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই মুক্তিযোদ্ধারা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। জেলা কমান্ডের অবস্থান এব্যাপারে নিরপেক্ষ না থাকায় কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল পর্যন্ত বিষয়টি গড়ায়।

পরবর্তিতে কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের নির্দেশে জেলা কমান্ড ‘আনোয়ার হোসেন’কে কমান্ডার করে বিশ্বনাথ উপজেলা কমান্ড পূনঃগঠন করে। পুনৎগঠিত কমিটি নিজেদের মনোপ্লুত না হওয়ায় এরপর আবদুল মালিক গংরা আনোয়ার হোসেন’র নেতৃত্বাধীন কমিটির উপরও নানান মিথ্যা অভিযোগ এনে আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করেন। কোন মামলাই তারা নিজেদের করা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। এরপর ‘জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, জরুরী সরকারের সেনা ক্যাম্পে’ মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে মালিক গংরা। কোথাও তাদের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

অতপর আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে কার্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর প্রাক্কালে ‘মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়’ নির্মাণ কাজে স্থগিতাদেশ জারি করে। সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আনোয়ার হোসেন মন্ত্রণালয় বরাবর ১৮/০৭/২০০২ইং তারিখে আবেদন করেন। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৮/১২/২০০২ইং তারিখে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় নির্মাণ কাজের স্থগিতাদেশ প্রতাহার করে ‘মুবিম (মুক্তি) ১/২০০১-৫৬০’ স্মারকে তৎকালীন এমপি ইলিয়াস আলীকে উপদেষ্ঠা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা কমান্ডার আনোয়ার হোসেনকে সদস্য করে ‘নির্মাণ তত্ত্বাবধান কমিটি’ গঠন করার আদেশ প্রদান করা হয়।

‘নির্মাণ তত্ত্বাবধান কমিটি’র সিদ্ধান্তেই নির্মাণ ব্যয় নির্বাহে দোকান কোঠা লিজ প্রদানের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয় এবং বিশ্বনাথ উপজেলা কমান্ডকে দোকান কোঠা লিজ প্রদানের অনুমতি দেওয়া হয়। ১৭/০৯/২০০৯ইং তারিখে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সকল পর্যায়ের কমান্ড ভেঙ্গে দিলে বিদায়ী কমান্ডার আনোয়ার হোসেন’র কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। পরবর্তি কমান্ড দায়িত্ব গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত সাংগঠনিক দায়িত্ব’সহ ভবনের দোকান কোঠার মাসিক ভাড়াও আদায় করেন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। বর্তমান কমান্ড দায়িত্ব গ্রহণের পর কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যালয় ভবণের ২য় তলার কাজ প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে এবং ৩য় তলায় কমান্ডের কার্যালয় ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

আজ যারা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মায়াকান্না করছেন তারা কোন দিনও মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণের জন্য কখনও কিছু করেননি,  নিজ প্রয়োজন ব্যতিত পারত পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাথে সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী ছিলেন না, এমনকি মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করতেও ছাড়তেন না। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমান্ডের নেতৃবৃন্দ সকল মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ‘আবদুল মালিক গংসহ তাহাদের ক্রিড়ানক ভারাাটিয়া আজিজুর রহমান’র মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডে সাবেক কমান্ডার আনোয়ার হোসেন, বর্তমান ডেপুটি কমান্ডার রনজিত চন্দ্র ধর, সহকারী কমান্ডার (সাংগঠনিক) নজরুল ইসলাম, মোকাদ্দেছ আলী, নীরেশ বৈদ্য, খাজাঞ্চী ইউনিয়ন আহবায়ক ছৈইফ উল্ল্যা, লামাকাজী ইউনিয়ন আহবায়ক মতি লাল দে, বিশ্বনাথ-দেওকলস-দশঘর ইউনিয়ন আহবায়ক মোহাম্মদ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আলকাছ আলী, কাজল দাস, কিরনচন্দ্র মালাকার।



from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2kZI4VK

February 20, 2017 at 09:21PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top